টেনিসির স্মোকি মাউন্টেন আর আমার  এডিশন রোডের বাসার বাতাসেরা এক নয়।
এই দুইটাতে  বিস্তর ফারাক আছে, টেনিসির ময়দানে
অনেক পাহাড় পর্বত টিলা ফিলা, অনেক জংগল, অনেক কুয়াশা,
মেঘ ফেগ লইয়া, অনেক উপত্যকা লাফ দিয়া
ঐ বাতাসেরা অ্যাপালেশিয়ান দরিদ্র অঞ্চলের ফাঁক ফোঁকর দিয়া আইসা
চক্ষে লাগে সুতীব্র বর্শার ফালি হইয়া, অই বাতাসের শেষ নাই,
‘রোলিং হিলস্’ পাহাড়ের ঢেউ খুব উত্তাল, তাতে বড় বেশী তিক্ত বেদনা, রক্তক্ষয়!


পরে বলতে হয় আমার বাসার এডিশন রোড, আর তার বাতাসের কথা?
সেইটা আমার বন্ধু মাহবুব ভালো বলতে পারে। সে রোজ রোজ
আমাকে না বইলা বাজারের ব্যাগ ভইরা এতগুলা দুঃখ ভরা
বাতাস কিন্যা আনে, কয়, "হারামি, তুই শালা এইগুলা রান্না কর আজ,
সারাদিন তো বসে বসে বুট ভাজা আর ভেরেন্ডা ভাঁজা খাস।
এবার একটা সর্বজনীন কবিতা লেখতো দেখি?"


সর্বজনীন? সর্বজনীন কাহারে কয় বন্ধু আমার?
সেইটা কি "আমাজন" প্রাইমে পাওয়া যায়?
ওর বাজারের ব্যাগ খুলতেই দেখি হু হু হু হু করে দল দল
শতদল আর জলঙ্গির চক্ষের জল ভেজা ডজন ডজন বাতাস
তাতে বিজল ঘাটের হিজল মালা, সুন্দরী, কেওড়া গাছ আর
হোগলা পাতা গোল পাতার গন্ধ, ক্যামনে জানিনা কলিকাতার
একটা বাড়ির বেগুনী বোগেনভিলার রেণুর কাজল মাখা এই বাতাস।


এই বাতাস, রন্ধিত হইবার আগেই, আমাদের দুইজনকেই গিল্লা ফালায়, লবণ
টবণের দরকার নাই, এমনিতেই বঙ্গোপসাগর ভারত মহাসাগর
জাহাজ ছাড়া পাড় হইছে ঐ বাতাসগুলা, তারপর সেই বাতাস
আরো কয়টা শান্ত প্রশান্ত অতলান্তিক উন্মাদ সমুদ্র শেষে
নিউ ইয়র্ক বন্দরে পাইকারি দরে খালাস ---!
এই হইলো গিয়া আমার আর মাহবুবের বাতাসের গল্প!


মাহবুবকে এখন ঐ বাতাসের সাথে আসা সুন্দরবনের একটা অজগর মোড়াইতে
মোড়াইতে "আহিস্তে আহিস্তে" গিলতাছে কিচেনের সিরামিক টাইলের ফ্লোরে
আর আমি সেই সিন দেখতে দেখতে এই কবিতাখান লিখতাছি!
ভয় নাই, মাহবুবরে উনি আবার কাল সকালে বমি কইরা উগরে দেবেন!
মাহবুব মরবো না, এইটা ওর জীবনের বিচক্ষণ রাহু কেতুর খেলা আর কি!
(এইবার আপনারাই বলুন দেখি, মাহবুব বস্তুতঃ কেডা?)