কেহ নাই! তবু আমি যাই একাকী একাকী হেঁটে ফার্নের বনে
মশারি জালের মতো চিত্রময় চিরল পাতায় আমি বেদনা ধোয়া
ক্ষয়া ক্ষয়া সূর্যের ছাপ দেখি, যা কিনা হয়তো একদিন কোনোদিন
কিছু আলোর বেসাতি করে
চলে গেছে ধীরে ধীরে মুসাফির হয়ে, মৃত্তিকার নিচু বন্য পণ্যে
চন্দ্র সূর্যের আর নাই কোনো সাধ, যতো স্বাদ সব উচ্চতর বৃক্ষ শাখার
অরণ্য শীর্ষে যেখানে আলোর পরাগ জমে আছে চাদর বিছিয়ে বনে
তাই, যতো ঘন রোদের আলোর ক্ষীরজ আশনাই শুধু মাত্র তাহাদের সনে।


ওই নির্জন ফার্ন তবু অনির্বাণ শ্যামলে শ্যামল ঘন আধা আঁধারে;
অনেক মানুষ আর মানুষীর ব্যথিত মন যেন ওরা লিখে রেখেছে
ওদের পাতার মহলে! থরে থরে ভুলে যাওয়া স্বচ্ছ বিন্দু গেঁথেছে
ওরা ওদের বুকের শ্যাওলাময় তাজের মহলে!
আমার নীরব  ধীরজ হাতের স্পর্শে ওরা কিছুই বলেনা ! করতল স্তদ্ধ
বদ্ধ আর্তি সব যাত্রী হয়েছে নিরাকার আঁধার আড়ালে ।


আমি কান পেতে শুনি ওদের পাতার ইতিহাস বয়ে যায়
আমার নাড়ীতে, ওরা টান দেয়, সবাই বিমুঢ় যেন কারো শব
নিয়ে বসে আছে পাতায় পাতায়, অনেক অনেক দিন এতোটকুন
রোদের আশায় ওরা আলো চায়, ওদের পাতার মানচিত্রে
আমি আমার এবং হয়তোবা আরো অনেকের
জীবনের ছত্র দেখি। চেনা অচেনায়,
দুঃখ নেই, তৃষ্ণা নেই, প্রত্যাশা নেই, খিদে নেই, মুক্তি নেই,
সেই ফার্ন বনে,
সজ্ঞানে অজ্ঞানে আমার প্রাণের ভেতরে এক মলিন পাখী
সারাদিন সারা রাত কথা কয়ে যায় সবুজ ঘন শ্যামলী
ফার্ন বনে পয়ার হারিয়ে, আমি যে একটা অজানা সেতু খুঁজে ফিরি
বাকীটা জীবনে, ওইসব অন্ধকার ফার্নদের বনে, ওদের চিরল
পাতায়, ওদের গায়ের বনজ ঘ্রাণে আর শিশির কণায় …