আমার কথা গুলো
কখনোই হৃৎপিণ্ডের চার প্রকোষ্ঠ ভেদ করে
বেড়িয়ে আসে না।
বেড়িয়ে আসতে পারে না।
বুকের ব্যথাটা দিন দিন ডেড়েই চলেছে।
হৃৎপিন্ড শব্দ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।
কেউ যদি একটু কান পেতে শুনত!
ওগুলো কোনো স্বাভাবিক শব্দ না!
কিছু অব্যক্ত কথা বের হতে না পেরে
সজোরে আঘাত করে যাচ্ছে
সেই চার প্রকোষ্ঠে।
সেই আঘাতে বেড়ে যাচ্ছে
হৃৎপিণ্ড থেকে প্রবাহমান রক্তের বেগ।
কখনো যদি প্রকাশ পায়
উচ্চ রক্তচাপ এর কারণে
আমার রক্ত নালী ছিড়ে গেছে!
কিংবা মাথায় রক্ত ক্ষরণ হয়ে
আমি আর নাই এ ধরায়।
তখন বুঝে নিতে হবে,
চার প্রকোষ্ঠে আবধ্য কথা গুলো
মুক্ত হয়েছে, চলে গেছে স্রষ্টার কাছে।
যদিও স্রষ্টা এখনো জানে সব
তখন আমাকে সশরীরে সাথে নিয়ে উপস্থিত হবে।
তখন বুকে কান পেতে হাজারো চেষ্টা করলেও
কেউ আর কোন শব্দ শুনতে পাবে না।


আমি প্রচন্ড শব্দ কে ভয় পাই!
মনে হয় এই বুঝি বিকট শব্দে
হৃৎপিণ্ডের চার প্রকোষ্ঠে
আবধ্য থাকা কথা গুলো বেড়িয়ে গেলো।
আর আমি হয়ে গেলাম নিস্তব্ধ!


আচ্ছা নিস্তব্ধতার ও কি কোনো শব্দ আছে?
আমার এক খালুর কথা মনে পরে গেল!
খালুরকে যখন এম্বুল্যান্স থেকে নামাচ্ছিল
মামা আমার হাতে ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছিল।
আমি পরে দেখলাম স্পষ্ট লেখা
উচ্চ রক্তচাপ এর কারণে,
হার্ট ফেইল এবং মস্তিষ্কের রক্ত ক্ষরণ
জনিত কারণে মারা গেছেন!
আচ্ছা উনারও কি হৃৎপিণ্ডের ভিতরে
কিছু অব্যক্ত কথা ছিল?
যা অনবরত হৃৎপিণ্ডের চার প্রকোষ্ঠে আঘাত করত।
হয়তো করত!
আচ্ছা খালুকে যখন এম্বুল্যান্স থেকে নামানো হচ্ছিলো
সবাই অনেক কান্নাকাটি করছিল অনেক শব্দ হচ্ছিলো।
খালুতো নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল,
উনি কি শুনতে পেয়েছিল সেই সব কিছু?
নিস্তব্ধতার ও কিছু শব্দ থাকে যা শুনা যায় না।
অনুভব করতে হয়!


হৃৎপিণ্ড অনবরত শব্দ করে যাচ্ছে
এটাকে শুধুমাত্র পালস হিসেবে দেখিও না
একটু অনুভব করার চেষ্টা করো
হয়তো যেনে যাবা অসীম ভালোবাসার গল্প
যা কখনোই প্রকাশ পাবে না
মুখে উচ্চারিত শব্দে।
মুখে উচ্চারিত শব্দ মিথ্যা বানোয়াট হতে পারে।
কিন্তু ধমনীর প্রবাহে যা অনুভব করবা
যা কখনোই মিথ্যা বানোয়াট হতে পারে না।
লোকটা নিশ্চুপ ভেবে রাগ করে এরিয়ে যেও না
ধমনীর প্রবাহ অনুভব করে দেখ
হয়তো প্রবাহটা এতোটাই দ্রুত যে চাইলেও
মুখে কোনো শব্দ উচ্চারিত করতে পারছে না।
একটু হৃৎপিণ্ডের শব্দ অনুভব করো।
একটু জড়িয়ে নাও, একটু স্পর্শ করো
দেখবে ধমনীর প্রবাহ ধীরে ধীরে শীতল হচ্ছে।
তুমি যদি রাগ করে এড়িয়ে যাও
হয়তো মানুষটা এতোটাই নিস্তব্ধ হবে যে
তখন তার দেহটাই থাকবে
অনুভব করার মত হৃদ স্পন্দ থাকবে না।
আর যদি রাগ করো সাথে বুকে জড়িয়ে নাও
একটু স্পর্শ দাও
পরবর্তীতে আবারও রাগ করার জন্যও
মানুষটার হৃদ স্পন্দ থাকবে।