সেদিন সর্বনাশের হাতে যাত্রাপালার অচল টিকেট গুঁজে দিয়ে
হাততালিটাও বুঝে নিয়েছি; অবশেষে সর্বনাশের ত্রাস হয়ে
বোনাস হিসেবে ধরিয়ে দিয়েছি সুদূর বাড়ির মানবিক টিকেট ।
সেদিন দ্বিধার সাথে রাস্তায় দেখা হতে বললাম-
‘দ্বিধা, তোমার সাথে বৃথা সময় নষ্ট করার চেয়ে বরং খিদা মেটাই’
সে মধ্যবিত্ত পথচারীর মাথায় লুকিয়ে
কোনমতে প্রাণে বেঁচেছিল ভুল পথে পালিয়ে ।
সেদিন নির্জন ঘাটে ভয়কে ভূতের তেনা দেখানো বন্ধ করতে বলে  
উনাদেরকেও খুনের বার্তা পৌঁছে দিয়েছি,
তারা সদলবলে মসজিদে-মন্দিরে চলে গিয়েছিল ভয়ে ।
সেদিন দুঃখের সূক্ষ্ম কারচুপি ধরতে পেরে মহৎ একনায়কের মত
বিনা বিচারে দু’বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছি,
ইতিহাসের পাঠোদ্ধার করার পুনর্বাসনে পাঠিয়ে দিয়ে দেখি-
সুখের সাথে সখ্য গড়ে উঠেছে সুশিক্ষিত দুঃখের ।
সেদিন মৃত্যু জমিদারি ভাবগাম্ভীর্যের সাথে শাঁসালো-
‘হে ভৃত্য, নিত্য তুমি যাচ্ছ কোথায়, বেশি বাড় বেড় না ক্ষুদ্র পাখায়’
আমি তাকে পথ থেকে ভবিষ্যতের ছায়াপথে সসম্মানে নিয়ে গিয়ে শুধাই-
‘ঐযে দেখছ কৃষ্ণগহ্বর সেখানে তোমার বাড়ি,আর যদি
খবরদারি করতে আসো তো ফাঁসির দড়িতে আমৃত্যু ঝুলিয়ে দিব’
মৃত্যু সেদিন আপন বাসস্থানে ঢোকে দরজায় খিল দিয়েছিল ।
অথচ আজ আমি হাড্ডিসার কুকুরের মত
হাড়ের অবশিষ্টাংশ সুখের খুঁজে পথে পথে ঘুরি
স্বার্থের মাত্রা পরখ করে লেজটাকে নাড়ি  
আর দাঁড়িপাল্লায় মেপে জিভ থেকে তেল ছাড়ি ।
তবু চাস্টলের মিলন যেভাবে বিনাউস্কানিতে  কুকুরের গায়ে
পলাশীর মাঘের শীতে পানি ছুঁড়ে- আজকাল তা হরহামেশাই খাই
আর লেজ গুটিয়ে অন্য পথে পা বাড়াই বিষাদের সাথে
স্বার্থের বাড়ি খেয়ে কখনো সমস্বরে ‘দেখে নিব’ বলে
মাজার ব্যথা দেখি আর বিড়বিড় করতে করতে কেটে পড়ি ।
তবে আজ আমার পা চাটার পারদর্শিতা চেখে
মাঝে মাঝে পথের কুকুরেরা লজ্জায় মানুষ হবার চেষ্টা চালায়
‘শালায় আমার শৈশবে যেতে চায়’- ভেবে  আপ্লুত ঢেঁকুর তুলি।
আমি আজ স্বার্থে সাক্ষাৎ আজরাইল
আমি আজ সর্বনাশের বাধ্য গুপ্তচর
আমি ভয়ের সদস্য বলে যত্রতত্র বোম ফাটাই
আমি আজ দুঃখের সাথে-
                       তবু তিনবেলা পেটপুরে খাই ।


মাহবুব শাকী
জন্মদিন,১৫ইং