তাজুল সাহেব - যৌথ কবিতার বইয়ে
    দু-চারটি কবিতা ছাপানো হয়েছে তার,
     মাঝে মাঝে ফেসবুকে-ওয়েবপোর্টালে
       কিছু কবিতাও প্রকাশিত হয়,
      একজন অখ্যাত সৌখিন কবি সে।


  সম্প্রতি পিছু নিয়েছে তার ভারী অস্থির সময়,
     ভয়াবহ আগুন লেগেছে, অগ্নিশিখা-
পথে-ঘাটে-মাঠে, রাজপথে-নদীতে, বাণিজ্যপোতে-বন্দরে,
বাতাস ও অন্তরীক্ষে, বসত ভিটায়, বাজারে-বাণিজ্য কেন্দ্রে,
      দিগন্ত হতে দিগন্তে, বিস্তৃত সর্বত্র,
       এমনকি সিংহাসন-তখতেও …!


      প্রচণ্ড ঝড়ের আগে স্থবির বাতাস,
পানির স্রোতধারা আপন ধর্ম ভুলে বেসামাল ঊর্ধ্বমুখী,
বইয়ের পাতা হতে, দপ্তরের আঙ্গিনা হতে নিয়মের লিপি
   ডানা মেলে উড়ে গেছে আকাশের সীমানায়,
আদালতে, বিশেষ বিশেষ দাপুটে পোশাকধারীর ঘরে,
      সরকারী দপ্তরে, প্রতি খাঁজে খাঁজে,
       হরেক কিসিমের নোক্তা বসানো,
     জুলমাত, অসীম বিভীষিকার হয়রানি …!


       স্থবিরতা, এ-কি স্থবিরতা …!
অস্থির সময়ে থেমে গেছি, থেমে গেছে আমাদের গতিপথ …
     তবে কারো কারো মুখে লেগে আছে-
       উন্মাদ-দাম্ভিক দাতালের হাসি!
উত্তুঙ্গ শব্দ ওঠে হাসির, বাতাস ফেটে গিয়ে চৌচির
       থরে থরে কম্পিত জমিন …!!


          কিইবা করতে পারে-
     একজন অতিশয় তুচ্ছ খণ্ডকালীন কবি,
    ঘুরে ঘুরে বেড়ায় সে প্রশান্ত আত্মার খোঁজে
বট-অশ্বথের ছায়ায় ছায়ায়, তাল ও তমালের আরণ্যে
হিজলের তলে, ফুলের বাগানে, পাখিদের সুমিষ্ট কূজনে;
    শিরীষ পাতার ঝিরিঝিরি শব্দ গেঁথে গেঁথে
     লিখে ফেলে দু-চারটি প্রতিবাদী কবিতা,
রাত্রি এলে দেবদারু গাছের মস্তকের শীর্ষ পাতা হতে
       নির্বিকার তাকিয়ে থাকে আকাশে,
   এক, দুই, তিন … লক্ষ-কোটি তারা গোনে;
  ঘরের পরে উঠোন, উঠোনের পরে ধুলোমাখা পথ,
       পথের ওপারে দিগন্তজোড়া মাঠ,
    ঝাঁকড়া চুল দোলানো উন্মাদ হাওয়া এসে-
       সেই মাঠে ঢেউ তোলে সবুজের,
    বিষ্ময়ে অপলক তাকিয়ে থাকে সেই ঢেউয়ে
      একজন খ্যাতিহীন সৌখিন কবি …!


    তাজুল সাহেব - এক অখ্যাত সৌখিন কবি
          যৌথ কবিতার বইয়ে-
      দু-চারটি কবিতা ছাপানো হয়েছে তার,
       মাঝে মাঝে সে শান্তির দেখা পায়-
         পদ্ম পুকুরে অঝর বৃষ্টিপাতে,
     ক্যাকটাস টবের উপর প্রশান্ত দৃষ্টিপাতে …!!!


ফিরোজ, মগবাজার, ১৫/০৯/২০২৩