দেখো মা, তোমার ছোট্ট মেয়ে কয়েকদিনে
কত বড় হয়ে গেলো …!
একবার শেষ ইচ্ছেটা শোন, একটুও কেঁদোনা
সময় এখন শোকের নয়
ফাঁসির পর আমার হৃৎপিণ্ড, কলিজা, চোখ, কিডনি, হাড়
দিয়ে দিও - কারো যদি জীবন বাঁচে
নাম বলবে না আমার, কবরে ফুল দিয়ে যাক চাই না
তুমিও দিও না, কবরের পাশে কালো পোশাকে
ডুকরে কেঁদে ওঠো তুমি, চাই না আমি
কষ্টের দিনগুলি উড়ে যাক বাতাসে
ভেসে যাক মহাসমুদ্রের লোকালয়হীন নির্জনে
পৃথিবী আমাদের একটুও ভালোবাসেনি, সুখী হই চায়নি
আমার পৃথিবীর আয়ুষ্কাল একুশ বছর মাত্র
এখন শেষ অক্ষরের ছোঁয়া পেতে মুহূর্তের অপেক্ষা
আগামী প্রভাত হবে সোনালী সূর্যের স্নিগ্ধ আলোতে
দূর্বা ঘাসে শিশিরের ফোঁটা মাড়াবো না আর
বিধির খেলাতে চলে যাবো দূরে, বহুদূরে
খোদার কসম, একটুও অনুতাপ নেই মনে


মৃত্যুই শেষ না, নিশ্চিত বিশ্বাস খোদার সুবিচার পাবই
ওদের দিকে প্রক্ষেপণ করবে আমার শাহাদাত আঙ্গুল সেদিন
সত্যকে অজ্ঞানতার কুয়াশায় ঢেকে
মিথ্যার কারসাজি, বুটের নিচে পিষে দিয়েছে অধিকার
একবারও বুঝলো না, চোখের সম্মুখের সবকিছু সত্য নয়
প্রিয় মা, আমার নরম মনের মা
সেদিন তুমি আর আমি হবো বাদী, ওরা হবে বিবাদী
দেখোইনা খোদার ইচ্ছেটা কী …!
মৃত্যুযাত্রার এ কালে অরেকটি ইচ্ছে শোন মা
মাগো, শুধু জড়িয়ে ধরে থাকতে চাই
খুব খু-উ-ব ভালোবাসি-যে তোমারে মাগো!


                                                   (সমাপ্ত)


ফিরোজ, দিলকুশা, ০১/১০/২০১০