আমার জীবনের রক্তাক্ত সময়গুলিকে বড়ই নিগূঢ় মনে হয়,
চলার পথ থেকে যেন ছিটকে পড়েছি আমি
আকাশ ছোঁয়া যেন কখনও হবে না আমার!
বেকারত্বের বিষাক্ত কাঁটাতারে বন্দী আমার জীবন
ক্ষুধার্ত স্বপ্নের অক্লিষ্ট চিৎকারে প্রকম্পিত হয় হৃদয়
তারপর নবজাতকের আবিষ্কারের স্পৃহায়
খুঁজে পাই স্বপ্ন রঙিন জীবনের সঙ্গীত;
হঠাৎ খবরের কাগজের শেষ পৃষ্ঠায় দেখি-
"এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের ঝরে পড়া বিদারক লাশ!"
কখন যে চোখ থেকে দু'ফোঁটা জল এসে পড়ে
খবরের কাগজে বুঝতেই পারি না--
তৃষ্ণার্ত পথিক দিগন্তে তাকিয়ে বুঝে নেয় পথের দূরত্ব
লালায়িত জিহবা ঝুলছে কুকুরের এক টুকরো শুষ্ক হাড়ের কল্পনায়;
অলস সময়গুলোকে কৃত্রিম মনে হয়ঃ ঘড়িটা যেন চলছেই না!
ব্যস্ততম সময়গুলোকে দ্রুততম মনে হয়
ইচ্ছে করে ঘড়িটাকে একেবারে চূর্ণ করে ডাষ্টবিনে ফেলে দিই।
বেকার জীবনটাকে সিগারেটের দহিত ধোয়ায় নিঃস্ব মনে হয়,
তারপরেও এঁকে যাই স্বপ্নের নিছক আল্পনা
আর বাস্তবতা আঁকে দুর্নীতির নিটোল তসবির,
বিশ্ব রণাঙ্গনে টাকার কাছে মাথা নত করে ফিরে যায় যোগ্যতা।
পিশাচের ছায়ায় ঘুচে যায় জোছনা
ঘুটঘুটে আঁধারের হিন্দোলেও অব্যাহত রাখতে হয় যাত্রা;
কীট-পতঙ্গের লোলুপ কামড়ে ঘটে স্বপ্নের যবনিকাপাত
ধূসর বাস্তবতার কাছে রঙিন অভিপ্রায়গুলো
নিরুদ্দেশ রৌদ্র বর্ষণের মত মনে হয়!
জাগ্রত রক্তপিণ্ড থেকে সঞ্চালিত রক্তগুলোকে প্রতিবাদী ভাবি
তখন রক্তের তেজকে মহাপ্রলয় মনে হয়,
তারপর বাঁশের বাঁশিতে রচনা করি প্রতিবাদের প্রজ্বলিত সঙ্গীত
বুকের পশম ছিড়ে বানাই সভ্যতার ভাস্কর্য
পর্বতের বুক চিড়ে ফুসফুসের রক্তে বানাই রক্তপ্রপাত
তবুও নিপাত যাক বেকারতন্ত্র, আমার রক্তে রুদ্ধ হোক ব্যর্থতার দ্বার
মুক্তি পাক নবজাতকের স্বপ্ন এ চরম বাস্তবতার নখর থেকে,
আঁধারের মেঘাচ্ছন্ন আকাশে উদিত হোক মহাজীবনের রক্তমাখা সূর্য।


(কবিতাখানা ২৩/০৩/২০০৬ সালে লেখা হয়েছিল।)