চঞ্চল হাওয়ায় রৌদ্র উড়ার ক্ষনে; চৈত্রের ক্লান্ত দুপুরে,
দক্ষিনা বাতায়নে-শাল তমাল আর মন মাতোয়ারা মহুয়ার মাতাল গন্ধে,
আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
দক্ষিনা পবন বইতেছিল নিয়ে-বৈঁচি আর নাম নাজানা, যত
মিষ্টি ফুলের সুবাসে।
বাতায়ন কাছে বেতবন থেকে;
ঝিঁঝিঁপোকার অবিরত তপ্ত আওয়াজে,
চকিত হৃদয়ে হঠাৎ জেগেউঠলাম।
আজ প্রকৃতির এই নানান রঙ্গে অলঙ্কারের মহাসমারোহে;
প্রকৃতি পুজারি মোর বাওলা মন,
কেমনে থাকে ডুবে ঘুমে?
চৈত্রের এই ভরদুপুরে হিজলবনে-ঘুঘুদের বুনো রবে,
আজ হেঁয়ালি পবনের আওরা রোদে,
ঘরে থাকা বড় দায়।
দূর থেকে পাতা-ঘন কোন তরুর ঘোমটা হতে;
পিউ-পাপিয়ার পিয়া পিয়া সুরে,
মন উচাটন মোর বাওলা হিয়া কাহার কথা ভাবে?
দুষ্ট কোকিলা-মন উতলা কুহু কুহু সুরে,
বুঝি আমারেই ডাকে বারেবারে।
তালিবনের শনশন বায়ের তালে-ভেসে আসে; বুদ্ধ
বাবুইয়ের আওলা কিচিরমিচির ধ্বনি,
মেঘের তালে ভেসে চলা-শঙ্খচিলের,
বিরহ কাতর মাঝে শুনি।
বেতঝার থেকে ভেসে আসে কখনো; ডাহুকীর
প্রিয়ার পরশের প্রীতির আওয়াজ,
বুলবুলিগুলি ঝাউয়ের শাখে বসি
করিতেছে বুঝি প্রীতির নিতি রেওয়াজ।
সজনের ডালে এসে পড়েছে; অপূর্ব বসন্ত বাউরির এক দল,
শালিকের ঝাঁক হিজলের ছায়ায়,
মেতেছে বুঝি আড়ংয়ের কোলাহলে।
এমনও ক্ষনে মনে নাহি ধরে-গৃহে থাকিবার আশ,
হেরিতে বাংলার এই চিরচেনা রূপ-পাখপাখালির সুর সুমধুর,
হইলাম ঘরের বাইর।