শুধাতে আমাতে তুমি-
যবে থেমে যাবে মানুষের সমস্ত কোলাহল,
প্রকৃতি সাঁজিয়া উঠিবে তার আপন রঙ্গের আল্পনায়।
দক্ষিণা এলোবাতাস বহিবে, নিয়ে
ফাগুণের মাধবী লতার মিষ্টি ঘ্রাণ।
চারদিক মুখরিত হবে পাখপাখালির হৃদয়কাড়া,
কলতানের অবারিত সুরের মূর্ছনায়।
কিংবা আপনা হৃদয় উদ্বেলিত হবে;
পাতাঘন কোন নিবিড় গাছের ভিতর থেকে,
কোকিলের মায়াবী সুরলহরীতে।
অথবা কোন এক নিবিড় জলা পুকুরের
উঁচো উঁচো ঘাসের ভিতর থেকে,
বহিয়া আনিবে বাতাস ডাহুকীর প্রীতির আহ্বান।
তব তুমি- আপনা হাত রেখে মোর হাতে
বসন্তের কোন এক প্রভাতে;
বাসন্তি ফুলের সৌরভ মাখা ঝিরিঝিরি বাতাসের প্রীতির অবগাহনে,
চলিবে পথ আমার সাথে।
লাভিতে নরম শিশিরের মায়াবী পরশ;
মেহেদী রাঙা নিটল পায়ে,
দলিবে সে প্রভাতী হাওয়ার চঞ্চল দূর্বার বন।
কখনো বা তুলিয়া বনফুল;
চঞ্চল হাতে গুঁজিয়া দেবো তা,
তোমার রেশমি চুলের গোছায়।
হঠাৎ কখনো বা- নিয়ে মনে আবেগি প্রেমের অভিলাষ;
তোমার ঐ আবেশিত তনু-মোর বাহুতে,
খেলিবে তোমার নিটল দুতি হাত নিয়ে মোর আওলা কেশ।
হয়তোবা- তনুমন মোর ভরিয়া উঠিবে,
তোমার ঐ নিঃস্বার্থ প্রীতির চুম্বনে।
কিন্তু হায়! বাওলা মন মোর;
উদাসী হিয়ায়,
অমিল সময়ের সমীকরণে
হইয়াছে সবই আজ বিদায়।
মনুষ্যদোষে জরাগ্রস্থ পৃথিবী আজ- আপনা প্রকৃতিকে করিতে সজীব;
ছড়িয়েছে মহামারী আপানা মহিমায়,
নিজ নাম করোনায় হইয়া উঠিয়াছে মানুষের কাছে এক আতঙ্কের নাম!
তাই হয়ে পড়েছে সব স্থবির।
মানুষের কৃত্রিমতার অনেক কিছুই আজ থেমে গেছে,
ঘরবন্দী হয়েছে সবাই।
এরই মাঝে জাগিয়া উঠেছে পৃথিবী;
আপানা আদিরূপে সজীব হইয়া,
নির্মল হয়েছে প্রকৃতি।
চারদিকের দিগন্ত আজ মানব কোলাহল শূন্য;
দিকেদিকে শুধুই প্রকৃতির বৈচিত্র্য রাশিরাশি,
মন শুধুই আজ তাই বারে বারে
তোমা স্মরণে ব্যাকুল চিত্তে
বেদনায় বিধুর সারাদিন,
তোমার স্মৃতির স্মরণে, জলে
ছলছলিয়ে উঠে মোর আকুল দুটি আঁখি।