কনকনে শীতরাত্রি পেরিয়ে করুণ কান্নার মতো  
ওই দূর বাঁশবাগানটার পাশ ঘেঁষে
খুঁজে ফিরে চলে ইন্দির ঠাকুরুণ, কোন অজানা কিছু
ওই দূর "মাঠের পারের দূরের দেশটার" সীমানার কাছে
যেখানে আসমান মিশে গেছে গাঁয়ের মাটিতে।


ওই দূর রেলের রাস্তা!
কী সে মেঠো পথ, বনকুন্তল মোহময় আকর্ষণ!
গাইয়ের বাছুর খুঁজতে হোগলার বনে
বেতের কাঁটার খোঁচা
ঝড়ের কবলে পড়া একটি নারকেল
আমের বনে কুড়িয়ে নেয়া অপুষ্ট আমের জারা মাখানোর স্বাদ
অভাগা দুর্গার জীবনদায়ী দুর্গতি ;
আহ্!  ঘুরেফেরা সেই ছেলেবেলা!


রানুদি, তোমাদের দরজাখান এখনো অবারিত জানি
অনুভূতির দেয়ালে কত রক্তক্ষরণ, কত অজানাকে
ছোঁয়ার সংগ্রামে কালজয়ী "পথের পাঁচালী"
এখনো মনের পর্দায় ঘোরে অবিরাম
নিঃসঙ্গ নিশ্চিন্দিপুরে এখনো মাটির ভেঙ্গে পড়া দেয়ালের কোলে চুলার ওপরে রান্নার কড়া
এখনো অপেক্ষারত রানুদি'র অপত্য স্নেহ
অনন্ত রোদন উৎলে আসা
সত্যজিৎ এখনো স্ক্রিপ্ট লিখে চলে অবিরাম
মনের সেলুলয়েডে জমা করা আহ্ কী সে কাব্যময় ছবি!


কবির কবিতা এখনো কবিতায় খোঁজে
পৃথিবীর কোন এক প্রান্ত ঘেঁষে অপুর দি' হারাণোর যন্ত্রণা
শেষ বেলায় কান্নায় নত স্বগতোক্তিঃ


যেতে মনে চায়
ওই দূর রেলের রাস্তায়
ওখানে মিশে গেছে গ্রামের আকাশ
থেমে গেছে যন্ত্রের চাকা।


ওখানে পাখিদের গানে গানে
খালনালা মেঠোপথে
গৃহস্থালীর ছবি গুলি আঁকা।


ওখানে নীলাকাশ জোছনা পরা।


ওখানে নতুন কিশলয়ে জাগে
বারোমাসী সাড়া।


ওখানে নববধু লালশাড়ী পরে
দেবতার অর্ঘ্য সাজায় বারবার


কুয়াশায় ভেজা হাতে
মনের অভ্রফুল
লুকায় আঁচলে তার।


ওখানে ভালোবাসার প্রিয়ারূপে
বসবাস তার


ওই দূর রেলের রাস্তা ধরে
ফিরে যেতে মন চায়
প্রিয়রূপে তার কাছে আবার।
________________________
★এ কবিতাটি বহুদিন আগে লেখা ও প্রকাশিত। ★