বাবা আমাকে বলেছিলেন তুমি হলে ভূমিপুত্র
অনেকখানি লেখাপড়া শিখেছো তাতে কি?
চাকুরী ছেঁড়ে জমি কর্ষণ করো
সোনার ফসল ফলাও
বুক ভরে নিঃশ্বাস নাও, উদর ভরে খাও,
দেশকে খাদ্যে স্বয়ম্ভর করে তোলো--


বাবার কথা একসময় মনে ধরেনি,
মনকে বোঝাতেও পারিনি
শহর বাড়িতে চাকুরীর ঠাটে চললাম বহুদিন--
তারপর সম্বিত ফিরলে দেখতে পাই,
বাবার কর্ষণ করা ভূমি আমাকে ডাকছে, মেঠো পথ,
খাল-নালা-নদী, খোলা আকাশ আমাকে ডাকছে
প্রান্তিক বিকেলের শিশির আমাকে ছুঁয়ে যাচ্ছে
গাঁয়ের হাট, ঝুপড়ি ঘরে চা পানের আড্ডা কিংবা পাড়ার মসজিদে গয়েজউদ্দিনের আযানও আমাকে আকর্ষণ করে ফিরছে।


ফিরলাম গাঁয়ে!
তরতাজা শাকপাতা, সোনালী ধান, গম, পাট, শর্ষের ক্ষেত, মধুমতি নদী, পাখিদের গান, সরল জীবন বাঁচবার বাড়িয়েছিল আশা
অথচ আমার দ্রব্যের কোন মূল্য নেই, আমার শ্রমেরও


এখন আমি আর ধান গম ভুট্টার করবো না চাষ
ডাল, শর্ষে কিংবা শাকসবজিও না
দুধ, মাছ, মাংস কোনটাই
আমার আর চাষা হয়ে থাকতে ইচ্ছে নেই
এখন আমি রাজনীতিবিদ হবো, ব্যবসায়ী, ফড়ে, ফটকে, মেম্বর, চেয়ারম্যান অথবা সুদে কারবারি


বিদেশ হতে খাবার আমদানি হবে পেঁয়াজ, আলু, কচু কাঁচামরিচ, শাকপাতা, মোষের মাংস, বিকেলের রোদ,
চাঁদ-সূর্যের হামাগুড়ি
যদি পারি প্রেম, তাও আনবো হাওয়া হতে ধরে
সুখ আনবো কাড়ি কাড়ি, মুঠো মুঠো ভরে
আমি আর এখন চাষা নই অন্যকিছু, অন্যকিছু --