সারি গুলি বাড়ছে। কয়দিন আগেও কত্ত জায়গা খালি ছিল, মানুষ মরছে আর কবরস্থানের খালি জায়গা ভরাট হচ্ছে, চেনাই দায় কে আছে কোথায় শুয়ে।


পাশের একটা বড় জায়গা জলের নীচে
আহা! মানুষগুলো জলের নীচে ? তিন মিনিটও কেউ থাকতে পারে?
আমাদের মামাতো ভাইকে বাক্স ভরে ওখানে পুতে দেয়া হয়েছিল চোখের জলে।
সে জল বাড়তে বাড়তে বাঁশের বেড়াও এখন ডুবো ডুবো। তারপর এই পুরো বর্ষাকালটা ওরা জলের নীচে কেমনে থাকবে? পরাণের মধ্যে খচ খচ করে ওঠে!


কোনো কোনোদিন বৈকালিক ভ্রমনের আলোয় চেয়ে দেখি সূর্যও কাঁদতে কাঁদতে কবরস্থানে মিশতে চায় !!


মানুষ মরে যায়, সে মানুষটি ফেরে না আর
তার নামটিই কেবল থেকে যায়। যার যায় সেই কেবল সাঁতরায় কষ্ট জীবনের নৌকায়।


সকালে গেলে নতুন কবর দেখি, বিকেলেও
রোদের আলোয় ঘাসেরা ম্লান হয়ে পড়ে, সামান্য  জলের ছোঁয়ায় সতেজ, মৃতদের কি হয়?


ও'পাশটায় পুরোনো কবর। এখনো কবরের ওপরে কবর ওঠেনি। জংলায় ভরে গেছে, কোনোটা ভেঙ্গে গেছে কোনোটা যায়নি, কোনো কবরের ওপর জন্মেছে বাঁশের ঝাড়।
একপাশে শুয়ে আছে সৌরভ। সাত বছরের ছেলেটি!
মা তার কবরের ছোট্ট দেয়ালে লিখে দিয়েছিল, "যে ফুল দিয়ে গাঁথবো মালা ভেবেছিলাম মনে, অকালে তা ঝরে গেলো বনে। " বহুদিন হয়, শ্যাওলারা কবরের গায় নিয়েছে আশ্রয়।


কতদিন অখিলকে খুঁজি, ওর কবর। শুনেছি ওকে ওরা পুড়িয়েছিল আমকাঠ দিয়ে, কবর আসবে কোত্থেকে! ওরাই ভালো করেছে, নাহলে এই নীরব শুনশান কবরস্থানে আসতেই হতো না।
রাত্রির নির্জনতা নিয়ে আমাদের আত্মীয় পুর্বপুরুষ
এখানটায় অবলীলায় ঝগড়াবিহীন কাটাচ্ছে সময়।


আর আমরা যারা প্রত্যহ জীবনকে টানি
নানান যুদ্ধে ঝগড়া বিবাদে আকড়ে ধরি আষ্ঠেপৃষ্ঠে
সময়ে আহবানে মন নদী পার হতেই হয়,
ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায়।