আজ আমি কবিতা শোনাতে আসিনি
এসেছি দুর্ভাগ্যের নামাবলী গায়ে দিয়ে আমার কষ্ট কথা শোনাতে
আমার পিতা পিতামহ কিংবা তারও পূর্বপুরুষ
এই জনপদে হয়তো আপনারই মজুর ছিল
আপনার অধীনস্ত দাসানুদাস, আপনার আজ্ঞাবহ। সেজন্যে বিনয় আমাকে ছেড়ে যায়নি,
দুঃখ আর দরিদ্রতা ছেড়ে যায়নি,
মনুষ্যত্ব আমার ভেতরে দূর্বল নয়,
বিবেক আমাকে তাড়া করে, মানুষের কষ্ট কান্না আমাকে আকৃষ্ট করে।

দুঃখী নদীর কাছে গিয়ে হয়তো আপনি ভরা জোয়ারের গল্প শুনতে পাবেন,
বৈশাখের রূদ্র মেঘের কাছে আপনি তার গর্জন শুনতে পাবেন
অঘ্রাণের ধানী জমির কাছে ধানের হিসেব
আমার কাছে দুঃখের কোন হিসেব নেই, দরিদ্রতার কোন সংজ্ঞা নেই শাপলা ফোটা বিকেলও নেই।


আমি মজদুর, শ্রমে আর মেধায় আমি জীবনের নোনাজলে ডুবতে ডুবতে বেঁচে উঠি,
লোভের হাত আমাকে ছুঁয়ে যেতে পারেনা, পড়ন্ত বিকেলের পরকীয়া আমাকে ছুঁয়ে যেতে পারেনা
মেঘলা আকাশ আমার স্বপ্নকে ভুলুণ্ঠিত করতে পারেনা, সেখানে রোপন করে যাই আমি সমস্ত আগামী।
আজন্ম পালিত অভাব আমাকে ছুঁয়ে যায় যাক
নির্ভেজাল রোদ্দুর আমাকে ছুঁয়ে যায় যাক
মধুমতী আর এই নদীঘেরা কাশবন আমাকে ছুঁয়ে যায় যাক
আপনাকে এবার ভাবতেই হবে
আর কতকাল আমি আপনার দাসানুদাস হবো, কতকাল আপনার আজ্ঞাবহ হবো,
আপনারও ভাবতে হবে নামবার সিঁড়ি কেবল
নেমেই যায় ভেতরের বুদবুদ ফেনা ঠেলে।
_________________________________________