তারিখ  ঃ  -  ০৮/১০/২০২২  ইং  ।


স্মৃতিতে ঃ  কৃষক  পিতা – ০৩  ।।


আমার বাবারা ফাস্টফুড দেখেনি
বার্গার , পিৎজা , স্যন্ডউইচ , স্যুপ আরো কত কী , পায়নি
খেয়েছে পান্তা , ডিম , গাভীর দুধ , ক্ষেতের ফসল , গাছের ফল
পেয়েছে প্রকৃতির নিখুঁত দানে  কাজের বল
তখন সৃষ্টি হয়নি এত রকম হাইব্রিডের জ্বালা
গ্রাম ই যোগান দিত খাঁটি খাবার – মেলা
এমনি করে গেল জীবনের কৃত্রিমতা বর্জিত দিন
চাকচিক্য ছিল না বাহার  ;  এখন আমরা বলি সেকালের দিন  ।।  


তাঁরা আধুনিক প্রযুক্তি দেখেনি
প্রসাধনী , সুগন্ধি গায়ে মাখে নি
হালের ছিল যা – রেল , মোটর গাড়ি , রেডিও , কলের গান , হলের সিনেমা
বিমান দেখেছে মাটি থেকে গগনে পাখির মতো  দেখতে
জীবন কেটেছে খাল-বিল-ঝোপঝাড়ের গাঁয়ে
কৃষি কাজের বিনি কিনিতে মাটির স্বপ্নে স্বল্প আয়ে  ।


আহারে বিহারে পোশাকে ছিল না বাহুল্যতা
কাজ-কর্মে , চলাফেরায় , মন মগজে আছিল সততা
অল্পতে ই ফুরিয়ে যেত মনের কথা  , জীবনের চাহিদা
সুকুমার বৃত্তি , বহু প্রত্যাশার জীবন – সে তো দূরের কথা
প্রভু ই কেবল বুঝতো ঐ চাষাদের মনের ব্যথা
নিসর্গের সাথে ছিল যত- মেলামেশা সখ্যতা
বিধাতা ও তাঁদের নিয়ে মাঝে মধ্যে খেলতো
খরা-বৃষ্টি-ঝড়-বন্যা দিয়ে সব আশা ভাসিয়ে নিতো  ।।  


এলাকার  দু’পাশে আছে চির বহমান দু’টি খাল
একটির নাম মন্দাকিনী আর একটি শোভনছড়ি
নামে যেমন কাজে ও তেমন স্বর্গীয় সুশোভনের প্রতীক
তারাই কৃষি কাজের মিঠা স্বচ্ছ শীতল সলিলের উৎস
এ খাল দু’টির বর্ষায় আনা মাখনের ন্যায় উর্বর পলিতে
দু’পাড়ে ভরে যেত চোখ জুড়ানো সবুজ-শ্যামল শস্য ক্ষেতে  
যমজ ঝর্ণা ধারা দু’টি উপরের সীতাকুন্ড ভূধর থেকে জন্ম নিয়ে
আমাদের গ্রামের মাঝখান দিয়ে বয়ে হালদা নদীতে মিলেছে  ।
( চলবে )


শরীফ  নবাব  হোসেন  ।