আহ কি অঝোর ধারা
ঝরে গেলো দুদিন বা তার কিছুটা সময় বেশি ধরে।
কাইত্যানের অবিশ্রান্ত বরিষণ
শহরের মাঠ ঘাট রাস্তা অলি গলি ডুবিয়ে একাকার।
ভেস্তে দিয়েছে আজ সারাদিন বেড়ানোর সব সাধ
সুস্বাদু ডাল পুকুরের মাছ গাছের ফল
কারও বাড়ির টেবিলে পড়ে আছে অধরা।
আমার শহরে কার্তিকের এমন বরষা আসেনি বহুদিন -
যেন সুরভিত মদিরার পাত্র উপুড় করে
আকাশ ঢেলে দিচ্ছে শেষ বিন্দু পর্যন্ত।
গাছগুলোর গাঢ় সবুজ রঙ মনে জ্বালিয়ে দেয় অনুরাগ
ছেলেবেলার এলেবেলে স্মৃতি আর বন্ধুরা
ভিড় করে মনের গহীনে।
কাদামাঠে গড়াগড়ি, ঘাসের মাটিতে আছড়ে পড়া
হাঁটু পানি ঠেলে ঠেলে পৌঁছে যাওয়া স্কুলের বারান্দায় -
ছায়াবাজির মতো ভেসে ওঠে মগজের পর্দায়।
মৃত স্মৃতিরা উঠে আসে
সারি সারি মিছিলের ছন্দে
ক্রমশ জীবিত হয়।
অকুল পাথারে দিকভুল করা নাবিকেরা
হঠাৎ খুঁজে পায় সবুজ দিগন্ত যেন।
অলস সকাল দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামে
ঘড়ির কাটা জানান দিয়ে যায় -
বাইরে সারাদিন সবই একই রঙ।
শাকশ মাছের লেজের অদৃশ্য চাবুকের তীক্ষ্ণ আঘাত
ছিঁড়ে দেয় স্বপ্নিল অলসতা।
দুদিনের বরষা কেড়ে নিয়েছে
অনেক মানুষের অন্ন সংস্থান,
রাতের ঘুমানোর জায়গা, মাথার আচ্ছাদন।
যদিও শিশুদের আনন্দ আজ
রাস্তা হয়ে গেছে গলা পানির নদী
দাপাদাপি চলেছে সারাদিন।
এই অনাবিল উল্লাস আর ভয়হীনতা দেখে
আবার কিছুটা আনন্দ ফিরে ফিরে আসে।
স্মৃতির মিছিল সারিবদ্ধ হয়।
বরষা ছড়িয়ে দেয় হিম হিম পবন দোল।
আজ শহর ডুবে থাকুক
আমার চাই কার্তিকের শ্রাবণ দিন।


২১.১০.২০১৭