সোনা ঝরা রোদ যখন আবেশের আড়মোড়া ভেংগে
ক্রমশ এগিতে যাচ্ছে মধ্য গগনের তীব্রতায়
চারদিক উষ্ণ থেকে আরও উষ্ণতর হয়ে উঠছে।
আরামের রোদ পোহানো কুকুর এখন ছায়া খুঁজছে
আরেকটু আরামের ঘুম দেবে বলে।
ভারী পোষাকের মানুষগুলো ভারমুক্ত হবার জন্য
খুঁজে ফিরছে সরাইখানার দরজা আর
শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বাণিজ্যিক ভবন।
পথের পাশে বসে থাকা কুঁচকানো চামড়ার বুড়ি
রোদ থেকে সরতে না পেরে
কোন মতে মুখ মাথা ঢেকে
অভিসম্পাত দিচ্ছে বারংবার।
অথচ এই বুড়িই
সোনা রোদের একটু ছোঁয়া পাবার জন্য
ভোর থেকে জেগে ছিলো তৃষ্ণার্ত চাতকের মতো।
শুধু রাতজাগা ভবঘুরে মানুষটা
প্রায় উলংগ চার পাঁচটি ছোট শিশু
গোটা তিনেক বুড়োবুড়ি
আঁটসাঁট হয়ে গ্যাঁট হয়ে
বসে রইলো গনগনে রোদের মধ্যে।
ওরা জানে
আর কিছুক্ষন পরেই
রবি হেলে যাবে পশ্চিমের পথে।
রোদ হারাবে তার গনগনে অনলতা।
আবারও কোমল হয়ে আসবে সোনা রোদের মতো
তারপর হারিয়ে যাবে তাপহীন ঘন কুয়াশায়।
তখন দাপুটে ঠান্ডা
হুল ফোটাবে শরীরের প্রতিটি লোমকূপে।
গায়ে গায়ে জড়িয়ে থেকেও
উষ্ণতা পাবে না পাবে না শরীর।
আরেকটি সোনা রোদের জন্য
উন্মুখ অপেক্ষাই হবে বেঁচে থাকার বড় প্রেরণা।
কুঁচকানো চামড়ার বুড়ি
ওই ঠান্ডা ঠেলে
আরেকটি দিন দেখবে কিনা কে জানে।
গরম কাপড়ে ভারাক্রান্ত মানুষের কাছে
এগুলো তামাশা মাত্র।
শীততাপনিয়ন্ত্রক কক্ষে বসে
উষ্ণ চায়ে বা কফিতে চুমুক দিতে দিতে
নিশ্চিন্তে ভুলে যাবে এই শিশু ভবঘুরেদের কথা।
শুধু ভুলবে না পৌষের হিম শীতল বাতাস আর
সোনা রোদের দিন।


০৩.০১.২০১৮