বাঙালীর বাঙালিয়ানা শুনে হাসো মন কানা!
শুধু পহেলা বৈশাখে এসো হে বৈশাখ এসো এসো!


পহেলা দোসরা তেসরা চৌঠা খেয়েছে বিদায়ের ঝা্টা, বলে না আজ আর কোন ব্যাটা, বুর্জোয়াদের গান গায়, বদলে ভাষা বদলের কথা বলে, বদলে যাও বদলে দাও, পুরাতন ছাড়ো নতুন নাও, ভিন-ভাষে গাও ১ বৈশাখ, মিছে কেন এসো হে বৈশাখ এসো এসো!


বৈশাখে হালখাতা এসব ছাতার মাথা, রস গোল্লা, টক দই, কটা ক্ষির এসবে নাই ভীড়, কেএফসি-স্টার কাবাব-সিপি মুখে করে বিড়বিড়, গরম ভাত ইলিশ ভাজা এসবে কত মজা, গরীব দুঃখে পড়ে তাই পান্তার জলে ইলিশ পড়ে, গরীব নিয়ে তামশা করে পান্তা-ইলিশ খেয়ে বলে এসো হে বৈশাখ এসো এসো!


তরমুজ-বাঙ্গি ছিটে-ফুটা সঙ্গী, ডাব-বেল শরবত অব্যশই মানা করি আলবত, স্বাগতম জানাই হেসে কোকা কোলা- সেভেন-আপ-ফান্টা পানে ভরে মনটা, খামোখাই কেন গায় এসো হে বৈশাখ এসো এসো!


ফতুয়া-পাঞ্জাবি-গামছা-লুঙ্গি ছিল অতীতে সঙ্গী, এসব এখন আর কেউ পড়ে না চলে না, বনানী-বারিধারা বানিয়েছে আইনের ধারা ওখানেতে এসব বাজে পোশাক পড়া নাকি মানা, তবুও গায় এসো হে বৈশাখ এসো এসো!


শাড়ী-ছায়া-ব্লাউজ পড়ে নারে, জিন্স প্যান্ট-টি-শার্ট-স্কাট মিশেছে বাঙালী নারীর হাড়ে হাড়ে, কেউ পড়ে ধর্মের জোড়ে বোরকা-নেকাব উপরে উপরে নিতম্ব ঠিকই দেখায় জোরে-সোরে হায় হায় তাও গায় এসো হে বৈশাখ এসো এসো!


আজকের দিন ভরে অবশ্যই গাওয়া হবে পল্লী-ভাটিয়ালী-ভাওয়াইয়া-জারী-সারি-বাউল কেউ কেউ লালন-হাছন-করিমের উঠবে ঢেউ, কালকেই রীতি মত চলবে হিন্দি-ইংরেজি গানের সোনালি ঢেউ, সোনার বাংলা কাঁদবে ভেউ ভেউ, তথাপি কেউ কেউ এসো হে বৈশাখ এসো এসো!


অনেক ব্যথা অনেক কথা বলা যায় না যথাতথা বাড়াইলে বাড়ে বিবেকের লতা, বিশ্বায়নে মিশে যাই সব হারিয়ে করে ভোতা, আপন ভাষা-আপন আচার যে না ছাড়ে সে বুঝে হাড়ে হাড়ে স্বদেশই সংস্কৃতির চেয়ে অমৃত নাই কিছুরে তাই সে গায় এসো হে বৈশাখ এসো এসো।


(কবিতাটি "বাদানুবাদহীনবাদ" কাব্য গ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে)