বহুকাল এই বিশ্বাস নিয়ে তোমাদের ধরেছিলাম ঝাকে ঝাকে, আসলে দারকিনা মাছের আদি নিবাস হলো বুরকিনা ফাসো, সে আমার ঐ বেলার বিরাট জ্ঞ্যানের বিরাট বড়াই। আমার উন্দালে তোমাদের ধারণ করার স্থানের সংকুলান করা ছিলো বিরাট কঠিন।এতই সস্তা আর এতই সহজ তোমাদের ধরা, কারেন্টজাল কেন ছেড়া গামছার এক পাড়ই যথেস্ট, বা তলা ফুটো হুবার তলায় তোমাদের চিরসখা ঢোড়াবাবার সাথেও নিশ্চিন্তে আটকে যেতে তোমরা। আসলে সেসবের দরকারও হয়না, গরুর খুড়ে জমে থাকা কৈবর্ত জলে ব্রেস্টস্ট্রোক সাতার কাটতে কাটতে ফটাস করেই ধরা পরতে মাদল বাজা কাজল গায়ের দামাল ছেলের অনভিজ্ঞ তিন আঙ্গুলের কেড়ামতিতেই। তোমাদেরকে বড়শিতে গেঁথে কত রুই কাতলাই না হয়েছে কতল। বাজারে বিকোতে তোমরা সবচে সস্তা দরে, মাছুয়ার পাতে পরে থাকতে নিতান্তই গোবেচারা হয়ে। আর সেই সুন্দরী মাছরাঙাদের দল? তাদের সোনাবাধাই ঠোটের ক্রিশ্চিয়ান ডায়র লিপস্টিক ছিলে তোমরাই। আসলে দারকিনা মাছেদের পার্সোনালিটি থাকতে নেই!  


তবে হ্যা, পদাবলীর দিনে, “শাঙন্ গগ্নে ঘোর ঘনঘটা” ক্ষণে দু’ফোটা বৃষ্টির আসরে পুকুরে ডোবায় ভোজপুরী, কোলাপুরী, ওড়িশি আর সালসা ট্যাঙ্গোতে মাততে, তখন বুঝি আমার মতই তোমাদের কাছেও সেই অন্ধ বধির বিটোভ্যান হয়ে যেত কয়্যার দলের অবাক কন্ডাক্টর! আমার কাছে, তোমাদের কাছে সিম্ফনী নাম্বার নাইন, রিক্যুইম ইন্ট্রয়েট তখন হয়ে যায় কান্তো হেনেরালের সুর!


ওদিকে, এখন, চরাচরের বহুকালের বহুবেদনাভাড়ে কিনা, নাকি ক্লাইমেট চেইঞ্জের বেতালপঞ্চবিংশতিতে, নাকি হিমবাহের সমুদ্রযাত্রার তড়াসে, নাকি সূর্যদেবতার স্খলিত কিরণ বিকিরনে, কি অ্যমাজনের ব্যথিত হৃদয়ের উত্তাপে আমাদের পুকুর ডোবাগুলো হয়ে গেলো অভিমানী। গরুর খুড়ের গর্তগুলো দেখা গেলো চন্দ্রদেবের পিঠে আর ঘাড়ে। দারকিনা মাছ, তোমারাও তাই এখন পারফর্ম করো কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তায় সজ্জিত সোস্যাল সাইটগুলোর চিপায় চিপায়। ব্যাকস্ট্রোক কি ফ্রিস্টাইল সাতার কাটো স্মার্ট ডিভাইসের সুইমিংপুলে।


বদলে গেছে দারকিনা মাছের পার্সোনালিটি। তোমাদের এখন আমি ধরতে পারিনা অন্তরদেহজালে।