জন্ম থেকে অদ্যাবধি, অপেক্ষায় রইলাম।
কাক ডাকা ভোর থেকে বিনিদ্র রজনী,
অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত;


ছেলে বেলায় ভাঙা চোরা কাঁচ,লোহা জমিয়ে রাখতাম
সুমধুর সেই ডাকের অপেক্ষায়,
হাওয়াই মিঠাই নেবে খুকি, মিঠাই
কখনো বা দেলবাহার।
এখন কত ভাঙা চোরা জিনিস,ফেলনা জিনিস,
জমিয়ে রেখেছি, তোমার ডাকের অপেক্ষায়।
তুমি কি আর আসবে না??
ফেরিওয়ালা ভাই, কখনো না?


কৈশোরে একটি ছেলে চিঠি লিখেছিল,
এগারো লাইনের চিঠিতে ষোলটি বানান ভুল।
খুব সুন্দর ভালোবাসার কথা,
আর কখনো ফিরে আসেনি।
আমি অপেক্ষায় আছি সেই ভুল বানানের চিঠির।


বয়সটা যখন আঠারো কিংবা উনিশ,
তখন মেমসাহেব,বিলাসি  ,রক্ত করবির গল্পে বিভোর।
অপুর উদাসীনতায় কি কাতর আমি।
বারবার অপেক্ষায় রইলাম,
হৈমন্তী কিংবা কুঁড়ানির জিতে যাওয়ার জন্য।


এরপর মরা নদীতে বান এলো!
সত্যি চমৎকার সব বন্ধুরা
কখনো খোলা আকাশের নিচে গান,
কখনো বা দলবেঁধে সিনেমা দেখা।
ভীষণ কম দামি রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়া,
সব হারিয়ে গেল।
শুধু কাজ আর ব্যস্ততার ভিড়ে,
শুধু স্বপ্নটাই রয়েছে বাকি।
অপেক্ষায় আছি সেই আমি।


ওই যে সেই দিনের কথা,
বলেছিলে ভরা পূর্ণিমায় সাগর দেখাবে,
খুব বরষায়  ভিজে ভিজে কদম ফুল এনে দিবে।
বেলাভূমিতে সূর্যোদয় দেখাবে।
কত বরষাএলো ,কত পূর্ণিমা গেল
আমি অপেক্ষায় রইলাম,
কেউই রাখেনি কথা,
রাজ্যের কাজ পড়ে আছে বাকি
তাই তো নেই সময়।
শুধু আমি অপেক্ষায় রইলাম।


অপেক্ষায় থাকতে থাকতে ক্লান্ত আমি,
এখন  অপেক্ষাকে দিয়েছি ছুটি,
সবগুলো জানালা খুলে, দরজা খুলে
বসে আছি, বসে  থাকবো অনন্তকাল।
অপেক্ষা নয়, প্রতিক্ষা প্রিয়।
শুধু প্রতিক্ষা শব্দটি তোমার জন্য।
আসবে তো! ভানুসিংহ!
শত রক্তকরবী তোমার জন্য,
জমিয়ে রেখেছি।
তুমি আসবে তো???