তোমার আমার প্রেম হঠাৎ কেমন যেন
ক্যজুয়াল প্রেমে পরিণত হল,
ঠিক যেন পেশাদার চাকুরিজীবিদের মত।


ভোর বেলা চোখ খুললেই ঘুমভাঙ্গে,
তারপর শুভ সকাল,
এক কাপ গরম চা,
একটি খবরের কাগজ অথবা
হালকা নাস্তার পর অফিসে বের হওয়া।


সুন্দরী স্ত্রী হলে একটি চুমো,
মধ্য সুন্দরী হলে অফিসের ব্যাগটা এগিয়ে দেয়া,
ব্যাস এতো নিত্য দিনের।


হঠাৎ করে আমাদের প্রেমটা কেন যেন
কেজুয়াল প্রেমে পরিনত হল।
আগে নিয়মিত ফোন দেয়ায় বা শুভ সকাল বলায়
এক ধরনের জীবিত প্রেমের গন্ধ ছিল।


এখন কেমন যেন শুকনো মরা ফুলে
বৃষ্টির পানি ছিটানোর মত,
ফোন দেওয়ার তাই দেই,
কথা বলার তাই বলি,
এখানে কোন প্রেম নেই, ভালবাসা নেই,
প্রেম ভালবাসার সেই সরসতা নেই,
হঠাৎ করে আমাদের প্রেমটা কেন যেন
কেজুয়াল প্রেমে পরিণত হল।
কেমন যেন আটপৌরে শাড়ীটাকে
কুচি দিয়ে পরার মত।


আগে ভালবাসায় একটা উদ্যম ছিল
এখন সেটা আর নেই।
কেমন যেন গ্রীষ্মের রোদে
ক্লান্ত পথিকের মত,
গাছের ছায়ায় অলস বসে থাকা।


না, প্রেমিকার দোষ দেই না কখনো
ভাল প্রেমিক তো নই আমি,
প্রেমিকাও আমার দোষ দেয় না কখনো,
কারণ সে প্রেম বুঝে
প্রেম হয়ত মাঝে মাঝে এরকমই হয়,
কেজুয়াল টাইপের।


কেন যানি হঠাৎ করে
আমার কান্নাটাও কেজুয়াল হয়ে গেল,
গত রাতে শত চেষ্টা করেও
দুফোটার বেশি জল গড়িয়ে পড়েনি
কষ্টগুলো ভেতরে ভেতরে গুমরে বেড়ায়।


আগে কান্না এলে বৃষ্টির মত জল ঝরত
সে জলে ভালবাসা মিশ্রিত ছিল
কি সহজে বুক ভিজিয়ে ফেলতাম!


প্রেমগুলো কেমন যেন হয়ে গেল,
তোমার আর আমার প্রেম,
কেমন যেন পুরোনো স্বামীর বা
স্ত্রীর মত নিয়মিত হয়ে গেল।
বেঁচে থাকার সেই স্বপ্নগুলো নেই
নতুন করে স্বপ্ন দেখার রুচিটাও
কেমন যেন মিয়ে গেল।


আগে ভালবাসার কথায় ছন্দ ছিল
এখন কেমন যেন হয়ে গেছে।
ছন্দটি আর নেই
আধা আধা কথা,
শেষ না করেই শেষ করা,
প্রথম বিরতি, মধ্য বিরতি, শেষ বিরতি
ফোন করে ধরে থাকা,
তারপর আপনা আপনি কেটে যাওয়া।
কখনো নেটওয়ার্ক প্রব্লেম, কখনো ব্যালেন্স জিরো,
কখনো বা ইচ্ছা করে।


কেমন যেন থেমে থেমে চলা,
সেলুলয়েডের ড্যাম মারা ফিতে ওয়ালা
ক্যাসেটের মত ধীরগতি বা আজে বাজে শব্দের মত।
আগে তোমাকে ভিষন দেখতে ইচ্ছে করত,
সারা জীবন কাছে থাকতে ইচ্ছে করত,
এখন তেমনটি হয় না
কেমন যেন কেজুয়াল হয়েগেল।


ছোট ছোট উপহার
নিতান্তই সস্তা
তবু যেন স্বর্নের চেয়েও দামী ছিল,
কারন সেখানে অমূল্য ভালবাসাছিল
এখন সে সব মনে পড়ে না।
উপহার! সেত কবে হারিয়ে গেছে,
সত্যি আমাদের প্রেমটা কেজুয়াল হয়েগেছে।


আগে কথা দিলে কথা রাখার শক্তি  পেতাম,
কারণ সেখানে ভালবাসার শক্তি ছিল
তোমার আর আমার,
তাই মৃত্যুকেও ভয় পায়নি।


কিন্তু এখন-


পাশকাটিয়ে যাই,
আমরা দুজন দুজন কে বলি ভালবাসি,
কেজুয়াল টাইপে।


বল এরকম ভালবাসতে কে চায়?
না তুমি না আমি,
সুখের জন্যই তো ভালবাসা,
আর “ভালবেসে যদি সুখ নাহি
তবে কেন ভালবাসা”


বরং এসো আমরা
অন্য পথের রচনা করি,
এরকম জোর করে ভালবাসা
না বাসারই নামান্তর,
জোর করে ভালবেসে
অন্তর আত্মার অতৃপ্তি, মিথ্যা চর্চা,
তার চেয়ে বড় নিজেরা নিজেদের কষ্ট দিয়ে
তিলে তিলে ভালবাসা পূর্ণ দুটি হৃদয়কে
বিষাক্ত করে তোলা,
এখান থেকে মুক্তি পাই।


তোমার যোগ্যতা আছে জীবন সাজাবার
তোমার মত করে সাজিয়ে নাও
যদি পারি আমিও সাজাব,
অন্তত কেজুয়াল টাইপের ভালবাসা থেকে তো
মুক্তি পাব।