মাদক গলি
এই পথে আমিও চলি
আসা যাওয়ার পথে
ঘটে যাওয়া কিছু কথা বলি।
নামটি আমার দেয়া মাদক গলি।


প্রশ্ন, কেন আমি চলি?
আগে সেই কথাটি বলি।
মাদক গলির শেষ মাথায়
ডানদিকে মোড় নিলেই আমার অফিস দেখা যায়।
রুটি-রুজি, রোজগার যা এখান থেকে হয়।


এবার ফিরি আসল কথায়
আসুন যাই মাদক গলির মাথায়।
বিভৎষ গা ঘিণঘিণে এক জায়গা
মানুষের মলমূত্র, বাসাবাড়ির এমন কি
নর্দমার ময়লা ফেলার জায়গা।
সরুগলির ডানদিকে বিরাট স্কুল
এখানে ফোটানোহয় শিক্ষার ফুল।
বাদিকে কাটা, ছেড়া কাগজের দোকান
এই ঢাকা শহরের কোন কিছুর কম নয় মান।
সরু এ গলিতে দাড়িয়ে
একে অন্যের কাছে দেয় হাত বাড়িয়ে।
মুঠি ভরা তাদের মাদকের বিষাক্ত বিষ
এ যেন ওদের দেবতার আশীষ।
কি দূর্গন্ধ আর ভয়ঙ্কর বিভৎষ দৃশ্য
দোকানদারদের এসব সয়ে গেছে অবশ্য।
আমার শরীরে কাটা দেয়
যখন ওরা রক্ত মাংশের শরীরে বিষ ঢুকায়।
শুনেছি সিরিঞ্জ আর সুচ নাকি সরকারি
ওগুলো দেওয়া ওদের দরকারি।
মাঝে মাঝে দেখি কিছু স্বাস্থ্য কর্মী
এরাই নাকি ওদের মুক্তি কামী।
একদিন দেখলাম এক দৃশ্য
এছিল আমার ভাবনার বাইরে অস্পস্ট।
এক পুরুষ প্যান্টের জিপার খুলে
পুরুষাঙ্গে ইনজেকশান দিল ফুড়ে।
তাদের নেই কোন কাতরতা
নেই অনুভূতি বা কোন ব্যথা।
আমিই চোখ ডলছি বৃথা।
একজন রমনী
দেখে তো কামনা জাগিনি,
চেহারায় নেই সেই জৌলুস নেই কোন প্রসাধনী।
মাথা ভর্তি ময়লা ভরা চুল
উসকো খুসকো মাথাটা শুধু খিচতেই ব্যকুল।
তার হাতে আছে গাজার মোড়া
ঠোঁট দুটো একেবারে সিগারেটের আগুনে পোড়া।
একটা আছে পথের পাশে সুয়ে
কি জানি মরে গেছে নাকি গাজার ভারে পড়েছে নুয়ে।
একটা দেখি ঝিমোয়
বসে বসেই ঘুমোয়।
মাঝে মাঝে ভাবি এদের নিয়ে কিবা আছে লেখার
না আছে কোন জ্ঞান, গুণ না আছে কিছু শেখার।
মাঝে মাঝে দয়া জাগে আমার মনে
কি ভাবে এল ওরা এখানে।
আজ দুদিন একটা নতুন মেয়ে এসেছে
সেও নস্যি, গাজা চুসেছে।
দেখে বুঝাযায় বেশ পরিপাটি
মনে হয় পরিবারটা ও খাটি।
কি বলব ওদের আচারণ
মুখের ভাষায় নেই কোন বাঁধন।
যখন ক্ষুধা পায়
তখন হাত পেতে চায়
ভয় দেখায়, হাত চেপে ধরে, জামা টেনে ধরে
পকেট টানাটানি করে।
কেউ ওদের বলেনা কিছু
আমি সরি লোকের পিছু পিছু।
কিছু লোক চড় কসায়
সে নারী কিংবা পুরুষ যেই হয়।
এ হল মাদক গলি
নারী পুরুষ এক সাথে ঘুমায় গলাগলি
ওদের অশ্লীলতা দেখিনি কখনো
ওরা ঠোঁটে ঠোঁট রাখেনি তখনো।
দেখেছি গাজায় কম পড়ে যখন
লিকলিকে, ঠ্যাঙা, রোগা, পাতলা শরীরে
কাপতে কাপতে অসুরিক শক্তি পরীক্ষা করে তখন।
দেখেছি শুধু কারো চৈতন্যের অভাবে
নারীর গোপানাঙ্গ, পুরুষের যৌনাঙ্গ নয় সভাবে
সূচ ফোটানো দাগ, ব্লেডে কাটা হাত বেরিয়ে আছে।
এরই পাশে এক হাসপাতাল
দেখে মনে হয় চিকিৎসার নেই কোন তাল
নইলে রোগী থাকে বাইরে
ডাক্তার  কি করে ঘরে।
কেউ যদি দেখতে চাও মাদক গলি
সরাসরি চলে এস নয়াবাজার আমি বলি;
গুলিস্তান থেকে বাস ভাড়া দশ টাকা
পাঁচ থেকে সাত মিনিট লাগবে যদি রাস্তা থাকে ফাকা।
এখানে মাঝে মাঝে বসে হিরোইনসিদের আড্ডা
কত ভদ্রলোক, পুলিশ, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার সবাই                                    দেখে দেখে ঠান্ডা।
এসময় এলে পাবে দেখতে
কে কি ভাবে পারে মাদক নিতে।
শেষ করি মাদক গলির কথা
এত লেখালিখি হয়ত সবই আমার বৃথা।


                                   তারিখ : ১০/০৮/২০১৪
                                           নয়াবাজার, ঢাকা।