এসেছিলাম ঢাকা শহরে
আধেক ভাঙ্গা শরীরে,
এসেই দেখি স্বাস্থ্য আমার
বাড়ছে ধীরে ধীরে।
চামশুটকি ছিলাম আমি
প্রথম যখন ঢাকাতে,
হেলে দুলে চলতাম আমি
পড়তাম ঢুলে টোকাতে।
প্রথম প্রথম ছিলাম আমি
গাঁয়ের মানুষ গেয়ো ভুত,
দিন কতক যেতেই চিনলাম
কোনটা মানুষ, হালারপুত।
দিন যত যায় আমার
ততই হই স্বাস্থ্যবান,
শীর্ণদেহ ফিরে পেল
দারুণ এক নতুন প্রাণ।
এরই সাথে দেখলাম আমি
চালচলনে পরিবর্তন,
ছলচাতুরি মিশল গায়ে
দেমাগ দেখাই অকারণ।
গ্রাম প্রায় গেছি ভুলে
থাকি বিরাট শহরে,
কতক জায়গা চিনি কেবল
দাপট ভীষণ আহারে।
রাস্তা-ঘাটে নবাবজাদা
চলি ভীষণ বাহারে,
লাগলে আমার গায়ে টোকা
শাসন করি তখন তারে।
ঢাকায় যখন এলাম প্রথম
তখন আমি মুর্খের বাপ,
এখন আমার ব্রেনটাতে
বাড়ছে দারুণ জ্ঞানের চাপ।
প্রতিদিনই সংঘাত হয়
নতুন নতুন অভিজ্ঞতায়,
পাকা পক্ত হচ্ছি আমি
এটাও কিন্তু মন্দ নয়।
মেয়ে হলে বুঝবে তুমি
দুধে তোমার আলতো চাপ,
প্রথম প্রথম কাপবে তুমি
দেবে মৃদু অভিশাপ।
ছেলের বেলায় বলব কি আর
নতুন তো নয় কোন পাত,
দিবানিশি আপনজন ও
হচ্ছে দারুন কুপোকাত।
এসব ব্যপার গাঁয়ে হলে
হত বড় অপমান,
এটা হল ঢাকা শহর
যায় না তো আর কারো মান।
এটা হল ঢাকার হাওয়া
লাগলে তোমার দেহ মনে,
সহজে আর যায়না ছাড়া
এ কথাটা সবাই জানে।
ঢাকা শহর ধুলোর শহর
ঢাকা থাকে ধুলোতে,
এই শহরে ব্যস্ত সবাই
ছাইপাশ দেখার সময় নেই হাতে।
নাম পরিচয় গোপন করে
চলছি আমি ঢাকাতে,
আমার কাজ করছি আমি
কি আসে যায় তোমার তাতে।
এই শহরে এসেই আমি
চিনলাম প্রথম হরতাল,
না বুঝিতেই জড়িয়ে পড়ি
হয়ে পড়ি বে-তাল।
চিনতাম না তো প্রধান মন্ত্রী,
কে বা আবার ঢাকার মেয়র,
এখন চিনি সংসদ, কার্যালয়
বাড়ছে কিন্তু আমার পাওয়ার।
পান্থ পথের মোড়ে সেদিন
ছুড়েছিলাম ককটেল,
সেই সুবাদে হয়েছিল
তিন, চারজনার জরিমানা, জেল।
রাস্তাঘাটে জটলা পাকায়
নানান রঙের জনস্রোতে,
মোবাইল ফোন আর মানিব্যাগ
যাচ্ছে ছুটে বে-হাতে।
গাড়ীর চাপে বাড়ীর কথা
ভুলতে হয়রে নিরবে,
এমন ভিড়ের মাঝে কেবা
উঁচু মাথায় দাঁড়াবে?
লোকে লোকে লোকারণ্য
এইতো বড় ঢাকা শহর
এই খানেতে যায়না বোঝা
কখন রাত কখন প্রহর।