ভেবো না তুমি, শহরে এসেছি বলে....
পরেছি জুতো, মোজা, আর ইস্ত্রি করা জামাটি
আজো আমি দুই ফিতে ওয়ালা চটি পরে হাঁটি
ভেবো না আমি বাবু বনে গিয়েছি.....
চায়ের কাপে ফুসফুসের বাতাসে ধোয়া সরাচ্ছি
অথবা আমি গ্যাসের আগুনে ঝলসানো মুরগী খাচ্ছি
এখনো আমার দু-দশ কিলো প্রতিনিয়ত ছুটাছুটি
সকালে ভাজি আর শুকনো রুটি
দুপুরে ছাত্রীর বাসায় কাচের গ্লাসে শীতল দুধ
বিকেলে টিনাদের বাসায় কিমা পুরি অথবা পেয়াজু
রাতে ফিরে দু’ গ্লাস জল গিলে শুদরাই ঘুমের সুদ।
সকাল হলেই আবার শুরু হয় আমার হাঁটাহাঁটি,
পায়ে সেই ফিতে ওয়ালা চটি।
ভাবছ অনেক টাকা কামাই বসে বসে এই শহরে,
আছি রাজপুত্র বেশে আদরে-সমাদরে,
কিন্তু কেউই জানেনা আমার খবর, পথচলি কি প্রকারে।
হয়ত আমি ও তেমনই বলি......
এই শহরে বেশ আছি, ভালভাবেই চলি।
ভাবছ কিনে নিলেই তো হয়
সবমিলিয়ে পাঁচ হাজার টাকা, তাতে কি পোষায় ?
তাই তো ছাড়তে পারিনি এখনো সেই চটি
পরে থাকি পেছনে কোচকানো পুরোনো জামাটি
থাকা আর খাওয়ামিলে পাঁচ হাজার টাকাই উধাও
সারামাস অতি কষ্টে, ধার চাইলেও মেলে না কোথাও।
বাড়িতে টাকা না পাঠালে জ্বলেনা মায়ের হাড়ি
বাবা তো পড়িমরি, সে তুমি জানো, আসো যখন মামাবাড়ী।
সে যাক, শোন বলি তুমি জানতে চেয়েছিলে
শহরে এসে আবার কোন মেমসাহেবের সাথে.....
হা, হা... তোমার কচি মনে কতনা ভাবনা
কতনা কথা হয়ে আছে জমা
না, না এই শহরের সাথে তোমার আর আমার হিসাব মেলে না
এখানে চকচকে পন্যই বিকায় বেশি
কোথায় কিসে কার ভালবাসাবাসি!
এখানে মনের চেয়ে শরীরের দাম অতি বেশি,
ভয় পেয়ো না ওদের থেকে আমার দূরত্ব অনেক অনেক বেশি।
জানো, কিছু অনাচার চোখে পড়ে প্রতিনিয়ত
আমার হৃদয়টাকে করে ক্ষত বিক্ষত।
কিন্তু নিজেই তো চলতে পারি না
অনাচারের বিরুদ্ধে তাই মাথা তুলতে পারি না।
শুধ হনহন, পন পন করে হাঁটি আর হাঁটি…
পায়ে সেই ক্ষয়ে যাওয়া ফিতে ওয়ালা চটি।
বিরক্ত হচ্ছ ?
এত আমার সনাতনি বেশ
আচ্ছা, আচ্ছা বিরক্ত হয়ো না এখনই করছি শেষ
আবার সুযোগ হলে বলব এ শহরের ইতি কথা
যখন মন থাকবে ফ্রেস, এখন সময় নষ্ট করব না অযথা।