বাইরে বাদল ধারা
যায় নারে ঘর ছাড়া
সকলি নিরুপায়
কাজ কর্ম শিকায় তুলে সকলি ঘুমায়।
কিন্তু মা জননী
রয় না বসে কখনোই
খেজুর পাতার পাটি বিছায়
সূচসুতার ফোঁড় নকশীকাঁথায়
মনের সুখে বৃষ্টি দিনে
গুন গুনিয়ে দুঃখ সুখের গাঁথা
ফুটিয়ে তোলে পুরাতন কাপড়ে নকশীকাঁথা
পাশেই ছোট্ট খোকা
শান্তশিষ্ট্য একা
মাথায় বেঁধে মায়ের ছেড়া আঁচল খানা
সুতার বাঁধনে খড়ি বেঁধে পিঠে ঝুলিয়ে বলে
মাগো, দেখ আমি মুক্তি সেনা।
আপ্লুত মার চোখের কোনে একটু তো বারি ধায়
সুর বিনা মা কেঁদে উঠে স্বজন হারা ব্যথায়!
চোখের সামনে ভেসে উঠে যেন মার-
অগ্নিগোলা বৃষ্টি বর্ষণ, যন্ত্রণার চিৎকার
খোকা তখন সুয়ে কাঁথার উপর
উঁচিয়ে রাইফেল খানা মুখের রবে ঠাঁ ঠা, ঢুস, ঢুস
গুলি ছুড়ে একাকার-
বলে মা, তুমি একটু চিৎকার কর
গুলি খেয়ে একটু সুয়ে পড়
মা বলে, দুষ্টু খোকা-
এমন করে কেউ খেলেরে এ খেলা
জানতে যদি সত্যিকারের খেলা
নাওয়া খাওয়া নাইরে সারা বেলা।
যুদ্ধ, যুদ্ধ, যুদ্ধে ছিল ভরা
হয়েছিল সকল মানুষ সর্বহারা।
খোকা মায়ের কোলেতে  এসে
বলে-বলত মা যুদ্ধ দহের কথা
পরে সেলাই কর তোমার নকশীকাঁথা
আদর স্নেহে মা জননী কোলে তুলে
আয়রে খোকা আয়-
শান্তি করি তোর সনে আজ যুদ্ধ দিনের কথায়।
তুই তো আমার পরম যুদ্ধ
করব তোরে যোদ্ধা
দেখবি তখন শহর, নগর, গ্রাম তোরে
করবে ভীষণ শ্রদ্ধা।


(মা খোকাকে মুক্তি যুদ্ধের গল্প শোনায়
কত স্মৃতি গাঁথা বেদনায়।)


তারিখ: ০৩/১২/২০১৪
সকাল: ৭.১৫মি, ঢাকা।