বাবা, অনেকদিন পর তোমাকে লিখছি
শরীর ভাল আছে তো?
মা ও আশা করি ভাল আছে?
এটা খুব অল্প কথার যুগ।
গল্প করার সম​য় নেই বল্লেই চলে। তবুও লিখছি।
ভীষণ জানতে ইচ্ছা করে কেমন কাটছে তোমার জীবন।
জানি তোমার চিন্তা এখন অনেকটাই কম।  
একমাত্র মেয়ের বিয়ে দিয়েছ,
সরকারি পেনশন, বিকেলের পড়ন্ত
রোদ পোয়ানো ইজিচেয়ারে এক কাপ চা,
মায়ের হাতের চা খুব ভাল তাই না?


অনেকদিন পর তোমাকে লিখছি।
তুমি জানতে চাওনা আমি কেমন আছি?
ছোটোবেলার মত আমি বায়না করিনি
তাও চরা দাম দিয়ে বিদেশী সুখ
কিনে দিতে চেয়েছিলে তুমি বাবা।পারোনি।
বিদেশে বিয়ে দিয়ে বিদেশী লকারে
সুরক্ষিত করতে চেয়েছিলে আমার ভবিষ্যত।
তুমি পারোনি বাবা।
তুমি জানতেও পারোনি।
কিভাবে নিভুন্ত দেশলাই কাঠির মতো
আমিও নিভে যাচ্ছি।


অনেকদিন পর তোমাকে লিখছি।
এই কাগজটার পাতা বড় পাতলা।
আমার নোন্তা চোখের জলে
বড্ড তাড়াতাড়ি ভিজে যায়। তবুও লিখছি।
তুমি রঙিন বিজ্ঞাপন দেখেছিলে।
সঙ্গে যোগাযোগের ঠিকানা।
কেন দেখলেনা সেই মানুষটিকে।
উচ্চশিক্ষা আর অনেক টাকার
মোটা চশমায় তুমি তোমার মেয়েকে
দেখতে পেলেনা বাবা।
নামী কলেজ, পরিপাটি চাকরি
এসবই তো ছিল। না হয় আরও পাঁচটা বছর..
আমাদের বাড়ির পাশের
বটগাছটার কথা মনে পড়ে?
তুমি বলতে ওটার অনেক ওজন।
মেশিন দিয়ে কাটা হয়েছিল গাছটাকে।
আমি বোধ হয় তার চেয়েও ভারী?
তাইত তুমি.. বলনা?


অনেকদিন পর তোমাকে লিখছি।
উত্তর দিও। তোমার ইজিচেয়ারে
হেলানো অবকাশ থেকে।
জেনে রেখো, আমি ভাল থাকতাম
যদি মেয়ে হ​য়ে না জন্মাতাম।