আমার প্রতিদিন ঘুম ভাঙে,
কিন্তু জাগি না।
কারণ আমার ভেতরে
কোনো "আমি" আর নেই।

আয়নায় তাকালে শুধু দেখি
একটা মানুষ দাঁড়িয়ে আছে,
চোখ দুটো খালি, ঠোঁটে মৃত হাসি—
"এই শহরের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দানব হলো,
সে মানুষ, যার মুখে হাসি আছে কিন্তু হৃদয়ে কবর।”

একটা ডায়েরি আছে আমার,
তাতে লেখা—
“আজও কেউ বোঝেনি, আমি বেঁচে আছি কিনা।”
তার পাতাগুলো হাওয়ায় উড়ে যায়,
যেন আত্মা খুঁজছে শরীর…
আর আমি খুঁজি নিজেকে—
নেই কোথাও।

তুমি কি জানো,
যে মানুষটা রোজ হাসে—
সেই মানুষটাই হয়তো
সবচেয়ে বেশি আত্মহীন হয়ে যায় একসময়।

আমি এখন আর কাঁদি না,
কারণ জল ফুরিয়ে গেছে বহু আগেই।
আমার কান্না এখন শব্দহীন,
যেখানে শব্দ নেই, শুধু দহন আছে।
আর সেই দাহে লেখা থাকে
আমার প্রতিদিনের শেষ কথা—
“আজও কেউ জিজ্ঞেস করেনি, আমি কেমন আছি।”

একটা মানুষ যদি বেঁচে থাকে শুধু অভ্যাসে,  
তাকে জীবিত বলা যায় না—  
তাকে বলা যায়, আত্মহীন ছায়া।

আমি ছিলাম প্রেমিক, বন্ধু, সন্তান—
আজ সব ভূমিকায় আমি শূন্য।
সবাই পাশে থেকেও দূরে,
সবাই ভালো থেকেও বিষিয়ে দেয় বুক।

আজ এই ডায়েরির শেষ পাতায় লিখলাম—
"যদি কখনো কেউ খোঁজে আমায়,
তবে বলো— সে নিজেকেই খুঁজছে।
কারণ আমি তো কেবল
সব হারানো মানুষের এক সম্মিলিত নিঃশ্বাস।"

এ শহরের মোড়ে মোড়ে হাঁটি,
ছায়া পড়ে না পায়ের নিচে।
আকাশের তারা দেখে না আমায়,
পৃথিবীও ভুলে গেছে আমি একদিন তার বুকেই জন্মেছিলাম।

“যে মানুষ পৃথিবীতে থেকেও অনুভব করে,
সে মরে গেছে—
তার চেয়ে মৃত কিছু হয় না।”