প্রথম খণ্ড : মহন্তদের আবির্ভাব
ভক্তের মাঝে শাশ্বত আলো, চৌষট্টি মহন্ত দীপ,
তাঁদের গাথা শুনো হে মন, জ্ঞানতরঙ্গে ডুব দে চুপ।
গৌরাঙ্গপ্রভুর আশীর্বাদ পেয়ে, করিল ভক্তি প্রচার,
চৌষট্টি মহন্ত পবিত্র হল, প্রেমের একাগ্র দরবার।
শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য রূপে, নবদ্বীপে নাম নিলেন,
ভক্তির নবধারা আনিলেন, প্রেমের বারি ঢালিলেন।
তাঁহার সঙ্গ পেল যাঁরা, মহন্ত তাঁরা মহান,
কৃষ্ণভক্তির প্রদীপ হাতে, করিলেন প্রচার মহান।
দ্বিতীয় খণ্ড : চৌষট্টি মহন্তের পরিচয়
(১) আদ্বৈত আচার্য – কৃষ্ণভক্তির শিরোমণি,
শাস্ত্রে সিদ্ধ, গুরু বলিয়া, তাহার নাম চিরধনি।
(২) নিত্যানন্দ প্রভু – প্রেমময় মহাযোগী,
ভক্তকে দিতেন কৃষ্ণরস, করিতেন গুণযোগী।
(৩) শ্রীবাস ঠাকুর – হরিনামের অনুরাগী,
গৃহে করিতেন কীর্তন, ভক্তিমন্দিরের ভাগী।
(৪) গদাধর পণ্ডিত – শাস্ত্রজ্ঞানে মহাজ্ঞানী,
প্রেমেতে মত্ত, চৈতন্যের কাছে, ভক্তিতে অপার ধ্যানী।
(৫) হরিদাস ঠাকুর – নমসংকীর্তনে অগ্রগামী,
তিন লক্ষ নাম করিতেন, ছিলেন ব্রাহ্মণসম শ্রেষ্ঠ ভূমি।
(৬) রঘুনাথ দাস গোস্বামী – বৈরাগ্যের মহাদীপ,
সাধন করে রাধাকৃষ্ণে, প্রেমের সুধা রসস্নান।
(৭) রূপ গোস্বামী – ভক্তিরত্ন, শাস্ত্রবিদ,
কৃষ্ণপ্রেমে লিখিল শাস্ত্র, ত্যাগে হল অনুপম।
(৮) সনাতন গোস্বামী – শ্রীচৈতন্যের নিকটপ্রিয়,
ভক্তির পথ দেখাইল যিনি, কৃষ্ণভক্তির ধ্রুবতারা।
(৯) শ্রীজীব গোস্বামী – ভক্তিতত্ত্বের রচয়িতা,
গৌড়ীয় দর্শন করিল প্রমাণ, মহাশাস্ত্রের জনক যাঁ।
(১০) লোকনাথ গোস্বামী – নির্জনভক্ত, গম্ভীর মন,
তপস্যায় মগ্ন থাকিতেন, সাধনপথের অনন্য ধন।
তৃতীয় খণ্ড : ভক্তির প্রসার
নবদ্বীপ হতে কৃষ্ণনাম বহে, চৌষট্টি মহন্ত গায়,
যেখানেই যাইত তাঁরা, হরিনামের গুঞ্জন বাজায়।
বৃন্দাবনে স্থাপন করিল তাঁরা কৃষ্ণপ্রেমের ধাম,
তাঁদের আশিসে যুগে যুগে, জাগিল হরিনাম।
সাধনভক্তি, রাগানুগা, উপাসনাভক্তি যত,
শাস্ত্রে যাহা লুকায়িত ছিল, তাঁরা দিলেন তা মুক্ত।
কৃষ্ণলীলা, রাধার ভাব, প্রেমের রসসুধা,
তাঁদের মুখে ফুটিয়া উঠিল, করিল বিশ্ব সুধাময়।
চতুর্থ খণ্ড : চৌষট্টি মহন্তের চিরস্মৃতি
যুগে যুগে কীর্তি রহিবে, চৌষট্টি মহন্তের নাম,
তাঁদের প্রেমে নিমগ্ন হইয়া, করো কৃষ্ণভক্তির ধ্যান।
প্রভুর কৃপায় যাঁরা পেলেন, প্রেমসিন্ধুর হেতু,
তাঁদের আশ্রয়ে থাকিলে, মিলিবে মুক্তি অক্ষয় তপু।
সত্যযুগ, ত্রেতা, দ্বাপর যাক, কালীযুগে রবে,
চৌষট্টি মহন্তের আশিস লভি, জীবন সফল হবে।
তাঁরা হলেন কৃষ্ণপথের দীপ, প্রেমভক্তির সেতু,
তাঁদের নাম জপিয়া, হরিভক্তি হবে অক্ষয় সুরু।
ভক্তির চিরজয়
ভক্তির পথ যে নিতে চায়, তাহাদের জন্য পথ,
চৌষট্টি মহন্ত দেখাইলেন, কৃষ্ণপ্রেমের রথ।
তাঁদের পদরেণু চিত্তে লয়ে, যাহারা গাহে গান,
তাহাদের চরণে কৃষ্ণদয়া, লভিবে মুক্তি মহান!
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু করুক কৃপাদৃষ্টি,
চৌষট্টি মহন্তের ভক্তির জয় হউক চিরস্থায়ী।
নামসঙ্কীর্তনে বিশ্বমাঝে, উঠুক নব কলরব,
ভক্তি, প্রেম, কৃষ্ণনামে হউক সকলের অবলম্বন!