নির্জন পদ্মঘাটে বসে একদিন,
পদ্মলতা এল হেসে, বুনো বাতাসে দুলে,
তার চোখে ছিল অন্ধকারের দীপ্তি—
যেন শতযুগের একলা অভিমান ভেসে চলে।
তার মুখে কোনো শব্দ নেই,
তবুও কথারা ঝরে তার চুলের গন্ধে,
সে বললো না কিছু, কিন্তু আমি শুনলাম—
"ভালোবাসা মানে শুধু থাকা নয়, ছুঁয়ে থাকা নয়,
ভালোবাসা মানে হারিয়ে ফেলা, নিজের ভেতর নিজেকে।"
সে চোখে চোখ রাখেনি, তবু আমার অন্তর উল্টে গেলো,
যেন পুরোনো কোনো পাপের হিসেব মিলিয়ে দিলো।
তার নীরবতা ছিল উগ্র, ছিল বজ্রপাতের মতো,
যা ভেঙে দেয় বুকে গেঁথে থাকা হাজার চুপ থাকা কথা।
পদ্মলতা, তুমি কি মানুষ ছিলে?
না কোনো প্রাচীন গান—
যা বাউলের বুকে জন্ম নেয়,
আর নদীর ঢেউ হয়ে হারায় জানালার ওপারে?
একবার বলো—কেন এলে? কেন এমন করে?
তোমার চলে যাওয়ায় আমি যেন নিজেকে খুঁজি প্রতিনিয়ত,
ঘুমের মধ্যেও হঠাৎ জেগে উঠি,
তোমার নাম বুকে লেখা এক পাথরের বোঝা নিয়ে।
সে রাতে যখন চাঁদ ডুবলো পদ্মায়,
তুমি অদৃশ্য হলে,
আমার বুকের ভিতর শুধু একটিই শব্দ বাজলো—
“আমি তাকে ভালোবেসেছিলাম, যে আসলে ছিলো এক কবিতা।”
এখন আমি সেই পদ্মঘাটে যাই না আর,
কিন্তু পদ্মলতা থেকে গেছে,
আমার প্রতিটি শিরায়, প্রতিটি নিঃশ্বাসে,
সে এক স্মৃতির নারী—
যার হাসি এখনো জলকণার মতো ঝরে পড়ে ভোরবেলায়।
আর আমি লিখে যাই তার নাম, প্রতিটি অসমাপ্ত কবিতায়,
যেন কখনো সে পড়ে ফেলে, আর একবার ফিরে আসে।