সাঁঝ নামে ধূসর পাখা মেলে,
এক আকাশ জুড়ে ঝিম ধরা মায়া,
তবু কারা যেনো ছুঁয়ে যায়,
মনের অলিন্দে গোপন ছায়া।

সাঁঝফুল একা ফুটে ওঠে,
ঝর্ণার মতো চুপচাপ শব্দে,
কেউ তার দিকে তাকায় না—
শুধু বাতাস জানে তার কাঁপন কী করে জাগে হৃদে।
সে ছিলো এক মেয়ে— নাম জানে না কেউ,
হয়তো নাম ছিলো "নিভৃত", কিংবা "অনু",
পথে হাঁটতো না, ভেসে বেড়াতো—
ভবঘুরে এক আকাশকন্যা, ডুবসাঁতারে ডুবে থাকা রাণীস্বপ্নরূপ।

আমি শব্দ না, আমি অর্থ—
আমি উড়ে যাওয়া মানে, ফিরে না আসা প্রতিজ্ঞা!"
তার চোখে ছিলো শঙ্খের মতো ঘূর্ণি,
যেখানে আলো ঢুকে হারিয়ে যেতো,
হৃদয়ে ছিলো কাঁটাওয়ালা গরাদ,
যেখানে ভালোবাসা এলে রক্ত ঝরত চুপে চুপে।

তার ঘর ছিলো বাঁশবনের পেছনে,
এক পরিত্যক্ত চন্দ্রপাতার কুঁড়েঘরে,
দরজায় খোলা থাকতো একটুখানি ফাঁক,
যেনো কেউ ডাকে— আর সে চিরদিন না শুনে চলে যায়।

ভালোবাসা মানে সব কিছু বলেও
একটা কথা না বলা থেকে যাওয়া।"
একদিন সন্ধ্যার মেঘপালক নৌকায়
সে যাত্রা করলো নামহীন দেশের পানে,
সাঁঝফুলেরা হাওয়ায় ভেসে উঠলো,
আর আকাশে আঁকা হলো এক অদ্ভুত বিদায় চিহ্ন।

তাকে খুঁজতে এসে যারা ফিরে গেছে—
তারা ভুলে গেছে নিজেকে।
সে রেখে গেছে শব্দহীন নোট,
সেখানে লেখা—
যারা ভালোবাসে, তারা ফিরে আসে না—
তারা রূপ নেয় আলোয়, কান্নায়, অথবা কবিতায়…”

তারপর থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায়,
একটা হাওয়া এসে কানে ফিসফিস করে—
“আজ সে উড়ে গেছে, কাল সে ফিরে আসবে
তোমার চোখের কোণে জোনাকি হয়ে।
সাঁঝফুলের উড়ে যাওয়া মানে শুধুই হারিয়ে যাওয়া নয়—
তাকে যে একবার দেখেছে, সে জানে…
কিছু প্রস্থান ফিরে আসার চেয়েও বেশি উপস্থিত থাকে।"