ছেলেটি এখন কেমন আছে কোথায় করে বাস
চিত্র এঁকে ফুটিয়ে তুলব,কাব্যের হইবে চাষ।
ছেলেটির নাম প্রকাশ হইবে সত্য তাঁর নামে
প্রতিটি অক্ষরে প্রকাশ হইবে ছেলেটি বহু দামে।
সুখ–কষ্টের নানান কথা বলে যাব আজ
ছেলেটি এখন কি করে কিসের করে সাজ।
জীবন যুদ্ধ বড়ই কঠিন, হতে হইবে জয়
এমন শপথ করিতে হইবে, ভয় হইবে ক্ষয়।


নাজমুল এখন মায়ের সাথে, মা–ছেলে দ্বয়
মা–ছেলে সংসারেতে, আর কেউ নাই ঘোর ময়।
মা থাকে ঘরের কাজে না হয় কারো ঘরে
নাজমুল থাকে পড়াশোনায় বই নিয়ে পড়ে।
পড়াশোনায় মন দিয়েছে,বড় কিছু হবে
তাইতো সে পড়াশোনায় থাকে ডুবে–ডুবে।
স্কুলে সে ভালোই নাম করেছে অল্প দিনে
মাথায় তাঁর বিদ্যা–বুদ্ধি বাড়ছে ক্ষনে–ক্ষনে।
স্যারদের মুখে অনেক প্রসংশা,ভালোই করছে ছেলে
নাজমুল এক দিন বড় হবে প্রার্থনা সবাই দিলে।
পড়াশোনায় খুব মনোযোগ,স্কুলেতে যায়
শান্ত ছেলের চক্ষু দ্বয়ে হিংসা নাহি পায়।
বন্ধু–বান্ধব শত রয়েছে, সূর্য আলো গায়
শিক্ষার আলো চোখে মেখে সত্য বলে যায়।
শিক্ষার জনে সত্য বলে,মিথ্যে পুড়ে যায়
সত্য জনে মিথ্যের কাছে মানে না পরাজয়।
নাজমুল দেখ সত্য বলে মনে নাহি কোন ভয়
সত্যের মাঝে শ্রেষ্ঠ মানুষ,করে দ্রোহী জয়–জয়।


স্কুলেতে বাবার সাথে অন্যেরা সব আসে
নাজমুল একা নাহি বাবা, থাকে না বাবা পাশে।
বাবার কথা মনে এলে, মন ভালোরা ক্ষয়
মন খারাপের দল বেঁধেছে, একা একা রয়।
বাবার জন্য নাজমুলের মন, কাঁদে একা–একা
সবুজ মাঝে বসে–বসে বাবার স্মৃতি আঁকা।
একা একা কথা বলে দূর আকাশে চেয়ে
বাবা যেন এসেছে ছুটে, নাজমুলের কাছে ধেঁয়ে।
বাবা–ছেলে কথা বলে খবরাখবর নিয়ে
মন খারাপের দলে আছে,ভালোরা সব গিয়ে।
বাবার সাথে কথা বলে, নাজমুলের মন কাঁদে
বাবা কাছে টেনে নিয়ে বুকে চেপে বাঁধে।
এমনি করে বাবা–ছেলে বলে যায় মনের কথা
স্মৃতির পাতা খুব যতনে মনে আছে গাঁথা।
বাবার সাথে বোনের কথা কেঁদে–কেঁদে বলে
বোনে আমার কেমন আছে, রাখবে তোমার কোলে।
বোনে আমার রাগ করেছে,আসে না আমার কাছে
আমার সাথে কথা বলে না,যায় বারে–বার পিছে।
আবার তুমি আসবে যখন আনবে বোনেরে সাথে
বোনের সাথে কথা হবে, কত কথা মনে গাঁথে।
মায়ে অনেক কান্না করে পূর্ব আকাশে চেয়ে
তোমাদের কথা মনে করে, চোখ মুছে আঁচল দিয়ে।
মায়ের চোখে তাকানো যায় না কষ্টেরাও কাঁদে
চোখের অশ্রুসজল কষ্টে আছে,বুক সাগরে বাঁধে।
রাতের পর রাত কেটে যায়,ঘুমায় না মায়ের আঁখি
মায়ে কেমন চিন্তিত, হয়ে আদমরা পাখি।
নিরিবিলি বসে থাকে, কথা নাহি মুখ চুপে
খাবার নাহি মুখে তুলে, জল খায় একটু চিপে।
মায়ের কষ্টে,আমার কষ্ট হয়েছে পথ ভ্রষ্ট
মায়ের কষ্টে বুক ফেটে যায়,কষ্ট হয় সৃষ্ট।      
জানি না তুমি মায়ের সাথে করেছ কি দেখা?
মায়ের সাথে কথা বইল,দিওয়া মনে ব্যাথা ।
মন খারাপের দলে আছি যাও তুমি যাও চলে
পরে আবার কথা হবে বোনেরে নিয়ে এলে।
এমন করিয়া নাজমুল ছেলে মনে–মনে কথা বলে
বাবার সাথে কথা বলে কল্পনার ছলে–ছলে।
মন খারাপের দলে যখন থাকে নাজমুল ছেলে
একা–একা কাঁদে বসে আর কেউ নাই দলে।


অষ্টম থেকে নবম শ্রেণী উঠবে পড়ে সত্য বাণী
স্যারদের সাথে একটু সমস্যা হয়েছে কানাআনি।
বিজ্ঞান নাকি মানবিকে সফল হবে পাশে
নাজমুল বলে; বিজ্ঞান ছাড়া যাবো না আমি ক্লাসে।
যত্ন–রত্ন,পরিক্ষা– নীরিক্ষা করছে সকলে মিলে
নাজমুলের মেধা কত খানি হিসাব করে নিলে।
পরিক্ষাতে সফল হয়েছে বিজ্ঞান শাখায় পড়ে
অংক বিজ্ঞান দারুণ করে, নবম–দশম জুড়ে।
প্রতিদ্বন্দ্বি তাঁর রয়েছে অনেক,সাথের বন্ধু সকল
পড়াশোনায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা আসবে কত দকল।
সবার সাথে মিলেমিশে থাকতে চাহে সুখে
বন্ধু ছাড়া এজগতে কে আর আছে দুঃখ।


পাঁচটি বছ চলে যায় স্কুলের স্মৃতি মেখে
বন্ধু–বান্ধব শত–শত হাসি মুখ দেখে–দেখে।  
স্কুল জীবন ভুলা যায় না, সরণ হয়ে থাকে
যত দূরে দেহ থাকে,মনে স্কুলের মায়া মাখে।
যেথায় নাজমুল পাঠ্য করে ভুলবে না তো সেথায়
রক্তে তাহার মিশে আছে, পাঠ্যবই মাথায়।


ঘাস, মাঠ,ধুলো যায় নাকো ভুলা
শহীদমিনার,রক্তজবা,হৃদয়ে মেখেছে ধুলা।
শিক্ষক গুরু,বড় ভাই, শ্রদ্ধেয় সব জন
আপনাদের আশির্বাদ পেয়েছি সর্বক্ষন।
আলোর স্কুল নূরপুর ফুলে ফুলে বরপুর
উজ্জ্বল নক্ষত্র বেধেছে আলয় অদূর।
আলোর মিছিল,সূর্য আলো,ফুলে–ফুলে মাখে
ফুলের সুবাস ছড়িয়ে রয়েছে, বাতাসের সুখে।
ঘাসে–ঘাসে চরণ চুম্বন,সবুজ রঙ রাশে
ধুলিবালি গায়ে মেখে ভালোবাসা হাসে।
গাছে–গাছে পাখি সব সবুজের সাথে
আকাশে উড়ে বেড়ায় রংধনু গাঁথে।


ক্রিকেট,ফুটবল,দৌড়াদৌড়ি খেলা
দেখেনাতো সময় আর হয়েছে কত বেলা।
রোদ্রে দৌড়াদৌড়ি, ঘামে ভিজে গা
বাড়িতে যেতে হবে, কোন সে গাঁ।
সারা দিন স্কুলেতে পড়া আর পড়া
পড়া থেকে ভালো লাগে খেলাধুলা গড়া।
সুযোগ পেলে সব দৌড়াদৌড়ি মাঠে
সূর্য মামা যতই রাগুক আলো দিয়ে পিটে।          
সময় নাই দেখা দেখির খেলা হবে আগে
ঘন্টার শব্দ কানে এলেই জিদ্ধে শরীর রাগে।
ছুটির ঘন্টা ভেজেছে চারটা,আনন্দ বেশ পেয়ে
সবাই কেমন ছুটছে পথে, সবুজ শ্যামল গাঁয়ে।
স্কুল সময় পার হয়ে যায় পাঁচটি বছর ধেয়ে
স্মৃতি গুলো সব রয়ে যায় ডায়েরিতে চেয়ে–চেয়ে।


নাজমুলের উড়াল পক্ষি সাইকেল
______________


নাজমুল এখন টিউশনিতে মন দিয়েছে চেপে
বাড়ি–বাড়ি গিয়ে পড়ায়,সময় নাহি মাপে।
মানুষের কাছে শান্ত ছেলে,মানুষ ভালোবাসে
মানুষের মাঝে সত্য ছেলে,সত্যের আলো চাষে।
রাত–দিনেতে ছুটে নাজমুল,ছুটে সবার বাড়ি
টিউশনীতে সময় কাটে,সাথে দু'চাকার গাড়ি!
সাইকেল চালায় উড়াল পক্ষি,রঙ দিয়েছে সাজ
নয়া চাইকেল চালায় যেন উড়াল পক্ষিরাজ।
সঙ্গী–সাথী উড়াল পক্ষি সাথে সারাক্ষণ  
উড়াল পক্ষি উড়ে বেড়ায়, সমস্যার অনুবিক্ষন।
স্কুল,বাজার ,টিউশনি যত সব দরকার
উড়াল পক্ষি নিয়ে যায় সমস্যার পারাপার।  
নিজে যেমন পরিপাটি,উড়াল পক্ষিও খাঁটি
দূর–দূরান্ত উড়িয়ে বেড়ায়, উড়াল পক্ষির বাটী।
দিনে দু'বার গোসল দেয়, পানি দিয়ে বার–বার
তেল দিয়ে মালিশ করে রাতে ঘুমাবার।
যত্ন করে ঘুমিয়ে রাখে, থাকুক শুয়ে অবসর
চাইকেল নয় সে উড়াল পক্ষি, স্বপ্নের বাসর ।


কত মানুষ সাইকেল খোঁজে, রাজি নাহি দিতে
নাজমুল সবি দিতে রাজি, উড়াল পক্ষি নয় নিতে।
কারো হাতে উড়াল পক্ষি দিতে নয় রাজি নাজমুল
কারো হাতে গেলে সাইকেল হয়ে যাবে ব্যাকুল।
কাছের বন্ধু, ভালোবাসা যত খুশি দিবে
রক্ত চাইলে রক্ত দিবে, সাইকেল নাহি পাবে।
ভালোবাসার কঠিন মানুষ হৃদয়েতে থাকে
সাইকেল নাহি দিবে সে, দিবে নাকো কাউকে।
সূর্য চাইলে সূর্য দিবে, সাইকেল নাহি চায়
সাইকেল তাহার উড়াল পক্ষি দূরে–দূরে ঘুরায়।
এত বেশি ভালোবাসে, ভালোবেসে যায়
ঘুমের ঘরে স্বপ্ন দেখে উড়াল পক্ষি উড়ায়।    
নিজের থেকেও যত্ন বেশি উড়াল পক্ষির পিছে
ভালোবাসে বড্ড বেশি,ভালোবাসা নয় মিছে।
    
            
   কলেজ জীবন
__________
কলেজ জীবন শুরু হতে, কত স্বপ্ন চোখে
মায়ের কোলে মাথা রেখে চেয়ে আছে মুখে।
মায়ের সাথে গল্প করে কি হবে এই ভবে?
মায়ে বলে, তোর আশা, স্বপ্ন যত সবে।
নিজের মত গড়বি জীবন, ভালো পথ দেখে  
তোকে নিয়ে বেঁচে আছি, থাকবো বড় সুখে।
সত্য পথে চোখ পেতে, সত্য বলে যারে
তুই ছাড়া আমার কে আর আছে জগত সংসারে।
দুঃখ যত ভুলে আছি, তোর মুখেতে চেয়ে–ভব ঘুরে
তুই আমার বাবার মত, আদর যত করিরে।
তোর চোখেতে স্বপ্ন দেখি,আলোর মুখে–সুখে
বেঁচে থাকার ইচ্ছে তুই, চে আছি তোর মুখে।
মাগো,তোমায় ছাড়া কেমন করে বাঁচি আমি হায়
তোমার জন্য শক্ত মনে হেটেছি বহু পায়।
তোমার দোয়া সাথে আছে, মাথায় আছে ছায়া_
তোমার চোখে ভালোবাসা, মুখে কত মায়া।    


কলেজ শুরু রাঁন্ধনীমোড়া,থাকা হয় নি বেশি দিন!
কলেজ ছেড়ে পাড়িজমায় আড্ডা কলেজ সুবিন।
ঝামেলা বেধেছে প্রথম কলেজে,দুষ্টু কত জনে!
নাজমুলের সাথে কথা কাটাকাটি,মারামারি একক্ষনে
কলেজ জীবন শুরুতে অলক্ষি ধরেছে জাপটেমারি
তবুও পড়ায় মন দিয়েছে_  লক্ষির পায়ে ধরি।


কলেজেতে কত বন্ধু, আপন বন্ধু হয়ে
গলাগলি,বলাবলি,মনের বন্ধু পেয়ে।
কলেজেতে যাওয়া–আসা,পড়াশোনায় আছে
কখন জানি জড়িয়ে যায়, প্রেমে মন্ত বেঁছে।
লজিং মাষ্টার ছিলো নাজমুল,গাঁয়ের অনেক দূরে_
ঐ গাঁয়েতে থাকতো সে, নিজের মত করে ।
পড়াতে গিয়ে প্রেমের কাব্য লিখতে শুরু করে
মনে-মনে মহা কাব্য রচনা করে অন্তরে ।
নাজমুল এখন ছবি আঁকে অপ্সরার রূপ তরে  
অপ্সরার সাথে মন মিলনে গোলাপ প্রেমের ঘরে।
কলেজ জীবন প্রেমের শুরু ভক্ত ত্যক্ত  পরে
অপ্সরা নামের অপরূপা, রূপের রূপ জড়ে ।
মুখখানি তার সাদা আকাশ, পূর্ণিমারও চাঁদ
আকাশ থেকে নেমে আসা অপ্সরিদের স্বাদ ।
জীবন তব আলোর কথা, কালো নাহি চাপে
বিষাদ–আর্তবিলাপ তুচ্ছ সব, আলো স্বর্গ মাপে।
অপ্সরার সাথে খেলা করে, পক্ষির সাজ গায়ে
ভিজে–ভিজে সারা বেলা, কষ্ট তক্ত গিয়ে।
তব সঙ মম নরম গলায়, সবুজ পাতার সৃষ্টি_
অপ্সরার চোখে–চোখ রেখে অবুঝ মনে দৃষ্টি।
প্রেম আলাপন রঙ মঞ্চ দিনের দেশে বাস
রাতের দেশে স্বপ্ন আঁকা, অপ্সরার সাথে আবাস।
জোনাকির সাথে মাখামাখি,পূর্ণিমার হবে চাষ
রাতের স্বপ্ন রাতেই এসে হয়ে যায় নিঃশ্বেষ।
অপ্সরার মিষ্টি কথা,অপরূপ মুখের হাসি;
সন্ধ্যামালতী অপ্সরার গায়ে, বড্ড ভালোবাসি।
অপ্সরার সাথে মধু_লয়ে,বন্য লতা পায়ে
বৃষ্টির রাতে অন্ধ_দ্বয়ে, কাজল যাবে ধুয়ে।
মিষ্টি মেয়ের মিষ্টি কথা ঠোঁটে লেগে রয়
শিশির ফোঁটা ঠোঁটের কোণে,আধো ভয়।
আঙুল দিয়ে চোখ সরিয়ে লজ্জাবতী মেয়ে
শরীরে তার স্পর্শতা বার–বার যায় ছুয়ে।
অপ্সরা মেয়ে নাজমুলের মন কেড়েছে হাসি দিয়ে
এমন মেয়ে আর দেখা নাই খোঁজে গায়ে–গায়ে।
ভালোবাসা মনে–মনে, প্রকাশ হবে কবে?
এখনও সে স্বপ্ন দেখে, প্রেম সাগরে তবে!


হঠাৎ এক দিন বলে দিলো ভালোবাসি তোমায়
তোমার লয়ে প্রেম হবে কোন জনমে প্রনয়?
অপ্সরা হেসে বলে;ওহে পাগল ভালোবাসি তোমায়
তোমার মুখে শুনতে চেয়েছি বললে কত সময়।
আমিও তোমায় ভালোবাসি, গোপন করে রাখি
মনের ভিতর তোমার কথা, দেখ আমার আঁখি।
তোমার মনে মন মেখেছি কলেজ শুরুর সাথে
ভালোবেসে আমার মনে তোমার মন রেখেছি গেঁথে।
নাজমুল একটু উদাস হয়ে চিমটি কাটে গায়ে
সত্যি আমায় ভালোবাস,আমায় দেও একটু ছুয়ে?
বৃষ্টি এসে মন ছুয়ে যায় অপ্সরা মেয়ে সাথে
সাদা মেঘের বেলায় চড়ে, বৃষ্টি গেথে গেথে।
এত দিন তোমায় স্বপ্নে দেখেছি,দুষ্টু–দুষ্টু হাসি
তুমি আমার সঙ্গী হবে, সকাল,দুপুর, নিশি।


          
এভাবেই প্রেমের জিকির যায় যায় দিন চলে
কলেজের পড়ায় চাপ লেগেছে,পড়ছে ছলে বলে।
পড়ায় লেখায় মন দিয়েছে সকল ছাত্র মিলে_
নাজমুল–অপ্সরা পড়ার সৃষ্টি খুলেছে দিল–দিলে।
প্রেম রসনা চলছে বেশ, লুকোচুরি খেলে!
একটু সময় পেয়ে গেলে, কথায় প্রেমের ছলে।
এক দিন যদি না হয় দেখা, হায়হুতাস মনে;
প্রেম বুঝি এমনই হয় সরণ ক্ষনে ক্ষনে।


কলেজ জীবন শেষের দিকে, প্রেমের দিবাকরে
পরিবারে জানাজানি মানছে না প্রেম ঘরে।
ভালোবাসা– প্রেম বসতি, অপ্সরার_লয়ে ঘর
আংটি পড়িয়ে প্রনয়ের কথা জানিয়েছে বিয়ের!  
অপ্সরার বাবা রাগারাগি,হচ্ছে নাহি রাজি
অকর্মঠ ছেলের সাথে বিয়ে? ছি ছি,ফাজি।
অপ্সরার বাবা রাজি নাহি, প্রেমের হবে আড়ি
প্রেমের ইতি,চোখের জলে হয়েছে ধূসর বাড়ি।


অপ্সরার শেষ চিঠি!
তুমি মানুষ কেমন, থাকো সারাক্ষণ?
খবর নিলে খবর দিবানি?
আমিও তো মানুষ তুমি মানুষ মত_
মনের সাথে মনও মিলাবে?
দূরে–দূরে আছ, আমিও কি দূরে?
কাছে এলে সাথে নিবানি?
কত দূরে তুমি, খবর নাহি তোমার_
কার ঘরেতে ঘুমিয়ে আছ?
আমার ঘরে আধার।
ভুল করে ভুল, ভুলের মানুষ_
মানুষ করে ভুল?
আজ আমার ঘরে দুঃখরা সব_
তোমার ঘরে সুখ?
অন্য লিলায় মন দিয়েছ,
বেশ ভালোই তুমি আছ?
এক দিন তুমি খুঁজবে আমায়, হারানো পাখির মত
সে দিন আমিব অন্য কারো,আজ তোমার মত"
যেথায় আছ ভালো থেকো,ভালো রেখে মন_
আমি বড় সুখে আছি,ভালো সারাক্ষণ!      


মায়ের আকুতি
_________  


কিছু দিন হলো নাজমুলের মা'র শরীর যাচ্ছে খারাপ
মায়ের মুখে একটাই আঁকুতি বিয়ে কর বাপ।
পুত্রবধু আসবে ঘরে লক্ষী মেয়ে– মা
লক্ষী মেয়ে আনরে ঘরে দেখে যেতে চায় মা;
মায়ে ঘরে একা–একা কষ্টে কাটে বেলা
পুত্রবধু দেখতে চাহে, স্বপ্ন চোখে মেলা।
মায়ের শুধু একটি কথা বিয়ে কর বাবা
চুপটি করে থাকিসনা তুই,অসীম খেলে দাবা।
মায়ের সময় বেশি দিন নেই চলে যাবো একা
তোর বউয়ের মুখ খানি এক বার শুধু দেখা।
নাজমুল বলে মেয়ে দেখ করবো আমি বিয়ে
বাড়ির সবাই মিলে দেখ লক্ষীর মত মেয়ে।
মায়ের মুখে হাসি ফুটে, ছেলে করবে বিয়ে_
সবাই মিলে মেয়ে দেখে গাঁয়ে–গাঁয়ে গিয়ে।
কত মেয়ে দেখলো সবাই মনে মত হয় না
তবুও মেয়ে খুঁজে বেড়ায়, খুঁজে–খুঁজে পায় না।
এমন করে চলতে থাকে দিনের পর দিন
কত গাঁয়ে গেলো সবাই বাজিয়ে–বাজিয়ে বিন।
কোন গাঁয়েতে লক্ষী মেয়ে চুপটি করে আছে
সব গাঁয়েতে হেটেছে সবাই, কত মেয়ের পিছে।      
পিলগিরি গায়ে একটি মেয়ের খোজ মিলেছে চোখে
বাড়ির বাবি,চাচি,মামি,মিষ্টি নিলো মুখে।
বিয়ের কথা বলছে সবাই মেয়ের মায়ের সাথে
বাবিরা বলে আনেন মেয়েরে দেখি চোখ পেতে।
মেয়ে ভারি রূপবতী ক্যাশ নেমেছে পাছে
চোখ দুটি'তার কাজল মাখা গালে তিলক আছে।
সংসারেতে কাজ পারে কি, রান্না ঘরের দারু
সব কাজেতে হাত রেখেছে আমার মেয়ে ফারু।
চাচিদের মুখে বাহ বাহ এমন মেয়ে চাহি
বঙ্গ নারী এমনই চাহি স্বামির ভক্তি গাহি।
ধর্ম কি তার অন্তরেতে, শরীর পর্দায় রাখে
আমার মেয়ে ধার্মিক আছে, সত্য মাখে চোখে।
নামাজ, রোজা, কোরআন পড়ে,দিনের পথে চলে
এমন মেয়ে চাহি আমারা আমাদের ছেলের গলে।  


বিয়ের কথা এখনি তবে হয়ে যাক;কাল আবার শনি
মেয়ের মায়ে হেসে বলে, ছেলে বাবাজীর কথা শুনি।
ছেলে যেন কেমন করে, মুখ করে ঘুরাঘুরি
বাবিরা বলে লজ্জা পেয়েছে, লাজুক দেবর ভারী।
বাবিদের সাথে চুপিচুপি কথা বলে নাজমুল
মেয়ের নাকি প্রেম লিলা আছে কত কূল?
গুপ্ত খবর এসেছে বাহির, চুপিচুপি আমার লয়ে
এই বিয়েতে মন নাহি আমার, কষ্ট নিব শয়ে।
বাবিরা বলে ছি ছি, কি বলিস তুই পুড়া মুখ?
মানসম্মান সব গেলো, কেমনে দেখাই মুখ।
ভুল হয়েছে, মান গিয়েছে তোরই সাথে এসে
তোরই সাথে যাওয়া হবে না অন্য কোন বেশে।
মেয়ে আর দেখবো নাকো তোর সাথেতে গিয়ে
তোর গালি তুই মেয়ে দেখ করে পেলগে বিয়ে।
এই কথা যে মায়ে শুনে, মায়ের কষ্ট মনে
মায়ে আবার অসুস্থ যে হয়ে পড়েন ক্ষনে।
  
শরীরের ভিতর কি ব্যাধি করছে পেশি ক্ষয়?
নাজমুলের মা বিষণ অসুস্থ,নাজমুলের মনে ভয়।
পরিক্ষা–নীরিক্ষা করছে ডাক্তার,কত মেশিন দিয়ে
চোখাচোখি করছে ডাক্তার চোখের ঈক্ষন গিয়ে।  
নাজমুলের মায়ের কি হয়েছে জানতে সে আসে
ডাক্তার বলে ইটস ওকে সমস্যা সামান্য গ্রাসে।
চিন্তা নাহি, সাহস রাখ, মনের ভিতর বল
তোমার মায়ে ভালো হয়ে যাবে— সুস্থ সবল।
মায়েরে নিয়ে বাড়ি চলে আসে,চোখে করুণ জল
মায়ে তাঁহার কষ্টে আছে, ভিতরে দহনকল।
মায়ে  ডেকে বলে বাবা,কাঁদিস না তুই খোকা
বুকে আমার আয়রে বাবা, কাঁদিস নারে বোকা।
কিছুই আমার হয়নি, দেখ হাসছি আমি কত
ভালোবাসার মরণ নাইকো, ভালোবাসি যত।
মায়ের কথা শুনে ছেলে কাঁদছে মায়ের বুকে
মায়ের বুকে কত যন্ত্রণা, কাঁদছে শুনি দুখে।
মা'গো তুমি ছাড়া এই জগতে কে আর আছে আমার
তুমি আমায় করে দিওনা বাবার মত পর।
বাবারে,এই দুনিয়া ক্ষনস্থায়ী যেতে হবে পরকালে
তোরে একা করতে চাই না, রাখতে চাহি কোলে।
উপর থেকে ডাক আসে যার যেতে হবে তারে
তোর জন্য প্রার্থনা আমার, করি বারে–বারে।
খোদার কাছে দু'হাত তুলে মোনাজাত দিয়ে কাঁদি
সত্য পথে,সত্য কথা, সত্য রাখিস বাঁধি।
মা–ছেলের কত আকুতি, বলে বলে যান কাঁদি
কত দিন মায়ে অসুস্থ ,বলেন ডাক্তার যদি?
ডাক্তার সাহেব বলে চুপি,শরীরে রয়েছে ব্যাধি_
ক্যান্সারেরই ছোয়া রয়েছে হৃদয় তক্ত ছেঁদি।
নাজমুল কেঁদে আলাভোলা করুণ চোখে চেয়ে
শান্ত হয়ে চেয়ে রয়েছে, কলিজা ফাঁটে ক্ষয়ে।
আকাশ ভেঙ্গে মাথায় তাঁহার, কি করবে ছেলে?
মায়ার বন্ধন ছিন্ন হবে একটু ব্যাধির বলে।
ডাক্তার সাহেব মায়েরে বাঁচান,মরে যাব আমি
আমার জীবন তুচ্ছ সেথায় , মায়ে সর্ব দামি।


আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন,আর কিছু করার নেই        
সময় হয়তো বেশি দিন নেই, ওষুধ দিয়ে দেই।
বাড়িতে গিয়ে যত্ন করে, ভালোবাসা দিন
মায়ের ইচ্ছা পূর্ণ করুন, ছয়–ছয় দিন।


মায়েরে নিয়ে বাড়ি আসে, রক্ত ঝড়ে মুখে
মায়ে তাঁহার কত কষ্ট পাচ্ছে দুঃখে–দুঃখে।
বুকের পাঁজর রক্ত জমাট,রক্ত কত ক্ষয়
নিঃশ্বাস মায়ের কষ্ট কত, করুণ চোখে জয়।
বুকের ভিতর চিৎকার শুনি, মুখে নরম স্বর
ছেলে যেন কষ্ট না পায়, মায়ে কত উদার।
কষ্ট মায়ে পাচ্ছে ভেতর, প্রকাশ নাহি তাতে
ছেলে তাঁহার সুখে থাকুক,মায়ে কষ্ট পেতে।
মা জননী স্বর্গ ছেলের, স্বর্গ নিয়ে বাঁচে
ছেলের তাঁহার সুখে থাকুক এই কামনা রচে।


এখনও ভোরের সূর্য উঠেনি, পাখিদের কলরব
মায়ে তাঁহার ঘুমিয়ে রয়েছে, আঁখি দ্বয় নীরব।
আজ বুঝি মায়ের ঘুম ভাঙেনা, ঘুমের ঘরে বাস
ঘুম পাড়ানি নীরবতী,করছে এপাশ –ওপাশ।
ছেলে তাঁহার দেখছে ডেকে,মায়ের হাসি বার
মায়ের নিশ্বাস আসছেনা কো, দেখছে বারংবার।
চিৎকার করে ডাকছে মায়েরে,মায়ে কয় নাকো কথা
সারা বাড়ি জেগে উঠে, চিৎকারে বাসে ব্যাথা।
এই ব্যাথা আজ কেমনে সইবে, আলাভোলা হয়ে
চোখের সামনে মায়ের নিঃশ্বাস চুপ হয়েছে গিয়ে।
পক্ষিরা সব নীরব স্বরে, কাদে কুঞ্জ–পুঞ্জে  
উড়ন্ত ভ্রমর ক্লান্ত চোখে, মন খারাপের গুঞ্জে।
মেঘ কাঁদে, আকাশ কোলে বাতাস বহে ঘুরে
মায়ে তাহার ঘুমিয়ে রয়েছে সাদা কাপড় পড়ে।
খাট পেতেছে নেবু গাছে নিচে, মায়ের লাগি হায়
জনে–জনে দেখতে আসে সাদা কাপড় গায়।
কাঁদার মত কে আর আছে জগত সংসারে?  
ছেলে ছাড়া আর কেহ নাই নিষ্ঠুর ভব ঘুরে!  
আজ দেখি কত মানুষ, কেঁদে কেঁদে আসে
চোখের জলে গোপন ব্যাথা,আকাশেতে বাসে।
নাজমুল ছেলে কেঁদে–কেঁদে অজ্ঞান হয়ে যায়
মায়ের মুখেতে ভালোবাসা শিউরে উঠে গায়।
দুঃখীনি মায়ে, দুঃখের লয়ে, কত দুঃখ গায়ে
জীবন মায়ের দুঃখে–দুঃখে কেটেছে সময় দায়ে।
আজ বুঝি মায়ে নীরব হয়ে সুখের ঘরে যাবে
কবর কুড়ে বাবার সাথে জান্নাতে রবে।
জড়িতেছে ফুল নেবু গাছের, জড়িতেছে চোখের জল
ফুলে–ফুলে আর্তনাদ, ব্যাথার কোলাহল।                
ভোরে সূর্য শীতল হয়ে আবছা আলো কাদে    
বাতাসে চিৎকার বেসে আসে অদৃশ্য চোখ বাধে।
মায়ের লাগি বরই পাতা কাদে জলে–জল
আগর বাতির ধোঁয়া নাকে ঢালছে গোলাপজল।
ছেলের চোখে বাধ ভেঙেছে, রক্ত মাখে পানি
মায়ের শোকে আতনাদ, চোখে মুখে গ্লানি।
হায়রে, মায়ে তাহার কেমন করে চুপটি করে রয়
ছেলে আজ আত্মবিলাপ,খোদা তুমি মহান সদয়।
জড়িতেছে বৃষ্টি চোখে–চোখে,দৃষ্টিতে করুণ বিলাপ
মায়ের লাগি কবর কুড়েছে, মাটি তুলে গোলাপ।
মায়েরে নিয়ে রওনা দিয়েছে, কাধে তুলে খাট
নাজমুলের কাধে মায়ের খাট, বুক ফাটে, বহর মাট।
রুদ্ধ শিকলে বেধেছে পা, হাটেনা হাটে না মন
মায়েরে কেমনে কবরে শুয়াবে,কাঁদে সর্বক্ষন।
মায়েরে কবরে শুইয়ে রেখেছে,চরণ ধুলি মাখে গায়
মা–মা বলে চিৎকার করে, জড়িয়ে ধরে দু পায়।
মা গো মা তোমায় ছাড়া যাব না বাড়ি
আমায়ও কবর দিয়ে দেও, যাব না মায়েরে ছাড়ি।
মায়ের সাথে রেখে যাও ,মায়েরে দিও না কবর
মায়ের পায়ে জড়িয়ে রয়েছে, জান্নাতে দেও খবর।
সকলে মিলিয়া যত্ন করিয়া মায়েরে দেয় কবর
মায়ের কবরে শুয়ে আছে ছেলে, হুশ নাহি খবর।
দরাদরি করে সকলে নিলো শুয়াইলো উঠোন কোলে    
মাথায় পানি ঢালিলো কত, হুঁশ নাহি আসে ফুলে।
মায়ের লাগি ছেলেটির আজ কলিজা ফেটে যায়
মায়ে ছাড়া তাঁর আর কেহ নাই, একেলা হয়ে রয়।      
নাজমুল ছেলেটির হুঁশ আসে, চিৎকার করে কাঁদে
এমন করিয়া কত বার বেহুঁশ, কষ্টরা বুক বাধে।  


মায়ের একটি আশা ছিলো করিতে পারেনি পূর্ণ
তাই বুঝি আজ নাজমুলের চোখে দুখের কত বর্ণ?
মায়ের আশা ছিলো, ছেলে করিবেকো বিয়ে
মায়ের আশা পূর্ণ হয়নি, মায়ে নাহি আজ গায়ে।
এই আকুতি বলে বলে চিৎকার শুধু করে
মায়ে তাহার কেমন আছে অদূর রুদ্ধ ঘরে?    


নাজমুল আজ বড় একা , কেহ নাই তার গৃহে
আপন বলতে কেহ রইলো না, ছোট্ট তাহার গ্রহে ।
গ্রহে তাহার আলো নাহি , জোনাক জ্বলে মিটি
দূর আকাশে আরেকটি লিখেছে আজ চিঠি ।
তিনটি তারা জ্বলে মিটি রাতের আকাশ জুড়ে
নাজমুল শুধু কেঁদে- কেঁদে দুঃখ সাথে ঘুরে ।


রেতের আকাশ নীরব হয়ে কাঁদায় সারা গাঁও
নাজমুল একা বসে আছে আনমনে হয় চাও ।
ঘরে তাহার নীরব স্মৃতি কষ্ট দিয়ে যায়
মায়ের হাতে ঘর সাজানো এক ঘুড়েতে রয় ।
দেয়ালে ঝুলানো তিনটি ছবি সাদা-কালো হয়
ছবির উপর হাতবুলিয়ে , কাঁচে ধুলো ভয় ।
ধুলো মুছে স্মৃতির ছায়া স্মরণ করে শুধু
নাজমুল শুধু চেয়ে থাকে , ছবির ভিতর জাদু ।
চোখের তাহার ধুলো জমেছে ক্লান্তির খরা পানে
স্বপ্ন ধূসর কালো রাতে দুঃখ কত জানে ।
বালিশ ভিজে রক্ত জড়ে মায়ের ছবি দেখে
ভিজে আছে বুকখানি তার, মায়া মেখে-মেখে ।
ছবির ভিতর রং জমেছে সাদা আর কালো
কাঁচের উপর ধুলো জমেছে ,স্মৃতির ফ্রেমে আলো ।
            
কেহ নাহি আজ কেহ নাহি,কেহ নাহি তার ঘরে
ঘরের ভেতর গুমরে রয়েছে, নিজের মত করে।
এমন করিয়া কত দিন যায়, সময়ের টান পায়
বাবা,মা,বোন হারিয়ে গেছে, ফিরে নাকো–যায়।
ভালোবাসার মানুষ সবাই হারিয়ে গেছে কাচের শহরে
নাজমুল আবার ক্লান্তি শেষে খুজে আত্না ঘরে।
ভিবিষিকার নিশ্বাসে বিষাদের দিন গুলি মরে
বয়ে যাওয়া তীরে আজ নুতুন তীরে, নেমেছে ঘুরে।
তীর ঘুরে কেহ নাই,কেহ আসিবে না ফিরে
ভাঙা তরী বেয়ে বেয়ে সুখেরও সন্ধানে পুড়ে।
আকাশে মেলিয়া ডানা, গাংচিল উড়ে
বাতাসে কান পেতে শুনে, সুখ–সুখের তরে।
ঘর ছাড়া পাখি,ঘরের খোঁজে,কোন ঘরে
মরনের ভয়ে মৃত্যুর সাথে সন্ধি করে।
আবার নয়নে–নয়ন মিশিয়ে দেও অন্য ঘরে
খোদার কাছে আকুতি, মুনাজ সুরে–সুরে।
ছেলেটির আজ কেহ নাই, জগত সংসারে
পড়াশোনায় মন দেও,তাহাও তরে।
ঘরে কার,কোন ঘরে সে,কোনো ঘরে নেই মায়া          
একেলা তার বসে না মন, দেও সুখেরও ছায়া।
হে খোদা কাদি তোমারও তরে আকুতি করিয়া
তুমি ছাড়া আর কেহ নাই তার জগত ধরিয়া।
তুমি দেও সুখ, আলোর পথে, সত্য মানুষ রূপে
দিশারী চোখ শান্ত করে দেও , নীরব সুখ মেপে।


পড়াশোনা তার শুরু হলো আবার, মন-যতনে
খুব খেয়ালে মন দিয়েছে , শব্দ গুনে গুনে ।
লক্ষিপুরের কলেজেতে পড়াশোনা তার শুরু
মায়ের দেওয়া আশীর্বাদে, হবেন শিক্ষক গুরু।  
পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি সে করে  
নিজের খরচ নিজেই দিবে, কেহ দেয় নাকো তারে ।
কষ্ট কত নাজমুল জানে, কষ্টের সাথে থাকে
কষ্টের সাথে উঠা বসা, কষ্ট তাহায় ডাকে ।
এই জীবনের কেহ নাই যার সে জানে কষ্টের কথা
কষ্টের মাঝে কেটে যায়, কষ্টের গোলাপ গাঁথা ।
গোলাপ ছিঁড়তে কাঁটা লাগে, সুন্দর আহরণে
সুখ পেতে কষ্টের কাছে যেতে হবে বিহনে ।
এমন করিয়া কত কষ্ট, পথে- পথে হেঁটেছে
জুতা জানে কষ্ট ক্ষয়ের, কত চিৎকার করেছে ।
হেঁটে-হেঁটে কত পথে, কত ঘরে চোখ পেতেছে
অন্ন- করে নীরব চিৎকার কেহ কি শুনেছে ?
পড়তে বসে খালি পেটে, খাবার উঠে না মুখে
অন্য ঘরে জোর করিয়ে খাবার দেয় মুখে ।
কেহ সুখের ঘরে কাটায় সময়, গাড়িতে ছড়ে
কেহ স্বপ্নের ঘরে, সুখের ভেলা, কষ্টের মাঝে উড়ে ।
নিঃশ্বাসে কারো দীর্ঘশ্বাস, বিশ্বাস হয় খাঁটি
মানুষ আমরা মানুষ তবে গায়ে মেখে মাটি ।
নাজমুল এখন বিশ্বাস নিয়ে রয়েছে সুখে বেঁচে
খোদার কাছে প্রার্থনা তাহার সত্যের সাথে আছে ।
মায়ের তাহার বলে ছিলো 'বাবা' সত্যের পথে চলিস
মানুষ কূলে সত্যের জয় , সত্য কথা বলিস ।
জীবন তাহার ধুলি জমা , মুছে কষ্টের ঘামে
সৎ পথে চলে সে , পা নাহি থামে ।
একা একা পথ চলে সঙ্গী নাহি আছে
কেউ এসে বলে না 'বাবা; আমি তোমার কাছে ।
এই তামাম দুনিয়াতে কেউ কারো নয়
নিজের খাবার নিজে-নিজে মুখে তুলে নেয় ।
ন্যায়-অন্যায়ের প্রতীবাদে লড়বে কে সে ?
অসহায়ের মুখে তাকায় না কেউ একটু হেসে ।
পড়াশোনায় মন দিয়েছে, পড়ে লক্ষ্মীপুরে
লক্ষ্মী ছেলে, লক্ষ্মীর মত পড়তে বসে ঘরে ।
এমন করিয়া কত দিন যায় , পড়ে-পড়ে সময়
লক্ষ্মীপুরের বৃষ্টি মেয়ে প্রেম দেয় উদয় ।


বৃষ্টি মেয়ের প্রেমে পরে যায়, দৃষ্টির এক ঝলক
প্রেমের কথা বলিবে সে , রাখিবে কত পলক ।
প্রেম নাহি সে করবে আর, করবে সে বিয়ে
বৃষ্টিরে আজ বলবে সে মনের কথা গিয়ে ।
বৃষ্টি মেয়ের অপরূপ মুখ, লজ্জায় হয় লাল
প্রেমের কথা বলবে সে, গোলাপ মাখা গাল ।


বৃষ্টির রূপ বর্ণনা


লক্ষ্মীপুরের লক্ষ্মী মেয়ে বৃষ্টির মত রূপ
বৃষ্টি গায়ে মেখে মেয়ে হাসে অপরূপ ।
দেখতে মেয়ে অপরূপা চোখে মেখেছে কাজল
চুলের বেণী দোলনচাঁপা, কালো কালো উজ্জল ।
নাকে তার ঘাস ফুল সাজে, সবুজ হয়ে রয়
কান ফুলেতে জুমকা বাজে,জারুল ফুল দ্বয় ।
বৃষ্টি মেয়ের মিষ্টি কথায় প্রেমে পরে যায়
কথার মাঝে মিষ্টি গাঁথা,প্রেমের সৃষ্টি গায় ।
চোখে তাঁহার রক্ত গোলাপ,চোখের মনি চাঁদ
চোখের মাঝে কত কথা,নরম প্রেমের আবাদ ।
বাহু দ্বয় কলমিলতার, সবুজ নখে-নখে
হলুদ পাখির আঙ্গুল যেন,রাদে চোখে-চোখে।
বক্ষ বাঁধিয়া কোমল মায়া,সবার মনে রাখে
অন্তরে তাঁর নরম কথা সর্ব মনে থাকে ।
চাঁদের মত মুখ খানি তার, চাঁদ দেখেছে হায়
চাঁদ উজ্জ্বল হয় যেন, বৃষ্টির রূপের গায় ।
হাসির বাঁশি আকাশ গামী, কুকিল ডেকে যায়  
কন্ঠ যে তাঁর নজরুলের বাঁশি মধুর সুরে গায়।
ফুলে–ফুলে গায়ে–গায়ে, হাটে সবুজ গাঁয়
চোখের মায়া পড়ুক মাঠে,হাঁটে নরম পায়।
বৃষ্টি মেয়ের ঠোঁট দু'টি গোলাপ করে লাল
ঠোঁটের মাঝে তিলক রূপ করেছে উজ্জ্বল।
সূর্য হাসে কপাল কুলে, হলুদ হয়ে রয়
হলুদ শাড়ি পড়েছে বৃষ্টি, রূপের সৃষ্টি ভয়।
গাল মাখাতে সাদা আকাশ বরফ ঢেলে যায়
মেঘের ভেলা উড়িয়ে দিয়ে বৃষ্টি মাখে গায়।          
রং ধনু সাত রঙে আকাশ করে সাজ
বৃষ্টি মেয়ের গা মাখানো রঙের কত বাজ।
রাতে আলো দার করেছে বৃষ্টি গায়ের রূপ
চাঁদের গায়ে রূপ দিয়েছে বৃষ্টি অপরূপ।
বৃষ্টি মেয়ে হেঁটে–হেঁটে, গাঁয়ের মেঠু পথে
সবুজের সাথে রঙ মিশিয়ে রূপ গেঁথে–গেঁথে।
পাখির সাথে মনের কথা বলে চুপিচুপি
পাখির সাথে খেলা করে হাস্য রুপিরুপি।
জোনাকিরা আলো খোঁজে বৃষ্টির গায় জুড়ে
জোনাকিরা জ্বলছে মিটি, বৃষ্টি রূপে ঘুরে।
বৃষ্টি মেয়ের রূপের কথা, বলার নাহি শেষ
রূপের কোলে ডুব দিয়েছে,রূপ দিয়েছে বেশ।
আকাশে আজ সাদা মেঘ, বৃষ্টি হবে কি?
বৃষ্টি মেয়ের রূপে আকাশ কাঁদবে নাকি?
আকাশ থেকে জড়ছে দেখ পাখির সাদা পালক
বৃষ্টি মেয়ে উড়ছে দেখ নাকে দিয়ে নলক।
সাজিয়ে নিবে কে সে, সাত সমুদ্র জ্বলুক
বৃষ্টির গায়ের লতাপাতা সোনা হয়ে পরুক।
বৃষ্টির গায়ে লজ্জা মাখা, লজ্জাবতী মেয়ে
লজ্জা পেলে লাল হয়ে যায়, সর্ষা ফুলে গিয়ে।
ভোরের বাতাস ভিজিয়ে নিশ্বাস,চোখ মাখে
স্নিগ্ধ হয়ে শান্ত মনে,পাখির সাথে রবে শাখে।  
সব ঘরে তার ভালোবাসা দাদু–নানু সবাই
সবাই তারে ভালোবাসে, মনের ঘরে বাধাই।
নরম ঘাসে, নরম পায়ে, নরম ভালোবাসা
প্রকৃতির সাথে গা মিশিয়ে দেখে স্বপ্ন- আশা ।
বৃষ্টি মেয়ে রূপের বাহার ফুলে-ফুলে সাজে
কত ভ্রমর উড়ে-দূরে , ফুলে নাহি গুঁজে ।
যতন করে রেখেছে রূপ, সত্য দিয়ে গায়ে
মনের সুজন রয়েছে চুপ, আসবে কবে গাঁয়ে ।

বৃষ্টি নামে,বৃষ্টি নামে,  বৃষ্টি মেয়ের চুলে
বৃষ্টি মেয়ের ভিজিয়ে চুল,বৃষ্টি হাসে কোলে।
নাভিশ্বর ভিজিয়ে দেয় ফুলের পরশ দিয়ে
বৃষ্টি মেয়ে লজ্জা পেয়ে, শরীর ঢাকে পাপড়ি নিয়ে।
বৃষ্টি গায়ে সাজ এঁকে দেয়, নরম হাতের সাজ
বৃষ্টি মেয়ে ভিজিয়ে শরীর নাচে চুপি আজ।
বৃষ্টি সাথে নাচে বৃষ্টি, সৃষ্টি কত সুখ
আনন্দ আর ছন্দ গায়ে, বৃষ্টির মুখে–মুখ।        
বিদুৎ চমকায় আকাশ পানে,আলোকিত দিন
বৃষ্টি মেয়ে চেয়ে চেয়ে আকাশ কালো জিন।  
দিনের আলো কালো কালো,কালো মেঘের কোলে
বৃষ্টি মেয়ের হাসিতে আকাশ সাদা হবে ফুলে।
কদম ফুলের সাদা পাপড়ি হাসে দুলে–দুলে
কলমিলতা ফুল ফুটাবে বৃষ্টির ফোঁটা পেলে।
বৃষ্টি মেয়ে বৃষ্টি হয়ে জড়ে ফুলে–ফুলে
ভালোবাসার গোলাপ কলি হাসে দুলে দুলে।
বৃষ্টির কোলে ঘুমিয়ে রয়েছে চোখে মেখে রং  
বকুলের গন্ধে বৃষ্টি মেয়ে করছে কত ঢং।
বকুলেরও মালা গাথে বৃষ্টির সুতা দিয়ে
বৃষ্টি মেয়ের চোখে মুখে কত ফুল রয়েছে ছুয়ে।
বৃষ্টির গায়ে বৃষ্টির শাড়ি পড়াইয়াছে নিজ হাতে
ঘুমটা দিয়ে বধুর সাজে, বৃষ্টির হিবে সাথে।
সূর্য যদি উঠেনা আজ বৃষ্টি ভেজা মাঠে
সবুজ ঘাসে পা রাখিবে, ভিজিয়ে শরীর ঘাটে।
বৃষ্টি ভেজা হলুদ পাখি, গা ভিজিয়ে গাঁয়ে    
সবুজ গাঁয়ে রঙ মাখিয়ে বৃষ্টি ভেজা পায়ে।
শালিক পাখি গা ভিজিয়ে গাঁয়ের পথে ছুটে
বৃষ্টি মেয়ে নরম পায়ে,নরম ঘাসে হাটে।
বৃষ্টি মেয়ে,বৃষ্টি মেয়ে, রূপের মহা সাজ
বৃষ্টি মেয়ে সাজ একেছে, বৃষ্টি কত আজ।      
  
বৃষ্টির প্রেমে নাজমুল।।।


নজরে–নজর পড়িয়াছে তব,প্রেমের আশির্বাদে
বৃষ্টির চোখে নাজমুলের চোখ পড়িয়াছে প্রেম স্বাদে।
প্রেম নজরে প্রেমের কথা বলে চোখে–চোখে
বাহনিতে;প্রেম বুঝি আজ লুটাইবে দু'টি শাখে।
দু' গাঁয়েতে লাঠিম ঘুরে,এক গায়েতে হবে
দূর গায়েতে বৃষ্টির দেখা মিলন হবে কবে।
একটু–একটু প্রেমের কথা, প্রেম কি তবে শুরু?
নাজমুল প্রেমে হাবুডুবু দেয়,হয়েছে প্রেমের গুরু।
নাজমুল–বৃষ্টির প্রেমের কথা গাঢ় হয় সৃষ্টি
দু'টি দেহে একটি কথা, মন হবে এক দৃষ্টি।
লক্ষিপুরের লক্ষি মেয়ে বৃষ্টির মত রূপ
নাজমুল প্রেমে মজনু হয়ে, দেখে শুধু চুপ।
এক কলেজে পড়াশোনা, এক কলেজে পাস
নাজমুল এখন সবসময় থাকে বৃষ্টির আশেপাশ।
সব সময় নজরদারি,বৃষ্টির সাথে বাস
বৃষ্টি যেন মনের মাঝে বাঁচার নিঃশ্বাস।    
প্রেম ঝুড়িতে ফুলের মালা, বৃষ্টি গাঁথে সাজ
নাজমুল এসে সাজিয়ে দেয় বেনী গোলাপ রাজ।
রৌদ্র মাথায় নাজমুল হাটে, প্রেমে ছায়া দিয়ে
প্রেমের পুষ্প ভিজিয়ে মনে, রাখে অন্তরময়ে।


পুষ্পে বাধিয়া ঘর রাখিব অন্তজলে
আমারও চক্ষু পানে বৃষ্টির ছোয়া,মনের মধ্য কোলে।
তৃষ্ণা মিটাইবো সুখেরও সংসারে
বৃষ্টি আমার অনন্ত জীবন, সুখের–দুঃখের বহরে।  


গঙ্গার জলে প্রেমের বেলা বহিব দু'জন মিলে
রাত হয়ে যাক চন্দ্র আছে, লক্ষ তারা জ্বলে।
সূর্য ডুবা হলুদ আকাশ দেখিব গোধূলি মেখে
তোমায় দিব জোনাক পোকা, বৃষ্টি নামুক চোখে।


রাতের পরে রাত কেটে যাক দিনের নাহি খোঁজ
সারা জীবন তোমার চোখে, রবে চোখের বুঝ।      
ভালোবাসার কাঠগোলাপে রাখে তোমার হাত
প্রেমেত বেলা বহে যাব জোনাক জ্বলা রাত।


আমার চোখে তুমি হাস রক্ত জবার মত
মায়া মুখে রক্ত জবা দিব তোমায় শত।
তোমার হাসিটা আমার চোখে থাকুক সারা জীবিন
মনে চোখে তোমার লাগি বাধিব পুষ্পবন।    


গল্প নহে, বাস্তব সবে, তোমায় ভালোবাসি
তোমার জন্য পুষ্প গেথেছি, সত্য রাশি–রাশি।
বিয়ের বাজনা বাজিয়ে তবে বিয়ে করবো আমি
তোমায় নিয়ে গড়বো, বাস্তব ঘর,প্রেম বড় দামি।


নাজমুল গিয়ে প্রস্তাব দিলো বৃষ্টির বাবার কাছে
বৃষ্টির বাবা রাজি নহে,বিয়েতে, দ্বিমত মনে আছে।
প্রশ্ন তাহার করিস কি ব্যাবসা নাকি চাকরি?
আমার মেয়ে কেমন থাকবে, রাখতে পারবি সুখি?
বাড়িতে তোর কে কে আছে সঙে নিয়ে আয়?
কথা বলে দেখি একটু, কেমন তোর সাথে যায়।
নাজমুল বলে একা আমি, আর তো কেউ নাই
সবাই আমার চলে গেছে, ওপারেতে ঠাই।
আল্লাহ আছে আমার সাথে, আর কিছু তো নাই
আল্লাহ যদি থাকে সাথে আর কি নয় চাই।
ভালো আছি,সুখে আছি, প্রতিবেশীদের সাথে
সবাই আমায় ভালোবেসে ভাত বেড়ে দেয় পাতে।
মায়ে আমাত কষ্ট করেছে আমার লাগি কত
আজ যদি মায়ে থাকিত, দেখত কত শত।  
আপনার মেয়ে সুখে থাকিবে কথা দিলাম আমি
আমি গরিব হতে পারি,মনে প্রেম অনেক দামি।
প্রাণ দিয়ে ভালোবাসি বৃষ্টির মুখের হাসি
কষ্ট আমি দিবো নাকো বড্ড ভালোবাসি।
বৃষ্টি আমার মনের ভিতর রেখেছি যতন করে      
কষ্ট আমি কেমনে দিব,ওযে আমার মন–দেহ জুড়ে।
বৃষ্টির বাবা মানছে নাকো নাজমুলের কোনো কথা
খালি হাতে ফিরিয়ে দিলো, মনে কষ্ট গাঁথা।
ভালোবাসা এমনি বুঝি, মনে দেয় কত ব্যাথা?
সত্য প্রেমের আলোক রশ্মী হয় নাকো মিথ্যা।
কত আকুতি নাজমুল করে বৃষ্টির বাবার কাছে
প্রেমের বিচ্ছেদ এখানেই শেষ,রক্ত খুন নাহি রচে।
নাজমুল কেদে চলে আসে, ম্যাস বাড়ির ঘরে
এমন করিয়া প্রেমের বিচ্ছেদ, দিবে নাকো পুড়ে।
প্রেমের জন্য জান কোরবান, নাজমুল প্রণ করে
মনের মাঝে বৃষ্টির ঘর, এঁকেছে যতন করে।
নাজমুল–বৃষ্টির বিচ্ছেদ নয়কো,হবে মনের ঘরে
দু'জনের মন একই সুতো বেধেছে শক্ত করে।
পালিয়ে দু'জন বিয়ে করে পেলে, না শুনিয়ে ঘরে
পালিয়ে দু'জন চলে যায়, দূর কোনো বন্ধুর তরে।
কিছু দিন দু'জন থাক ওখানে, ভয়–ভয় করে
বাড়িতে তখন জানাজানি হয়, ছিঃ ছিঃ –র তরে।        
রাগারাগি বাবা,ক্রোধ মনেতে,পাষাণ পুষে রাখে
খোঁজাখুঁজি কত,কত দূর খুঁজে,খোঁজে শাখে–শাখে।
এমন করিয়া কত দিন যায় আসেনা মেয়ে ফিরে
বাবা–মা সব কষ্টে আছে, আয়রে মেয়ে ঘরে।
বাবা এখন শান্ত হয়ে,কেঁদে যায় সারা বেলা
আয়রে মেয়ে ফিরে আয়, খেলবি ঘরে খেলা।
তোর মায়ে যে কাদছে কত, দেখবি এসে ফিরে
তোদের আমি মেনে নিলাম,আসবি কখন ঘরে?  
খবর তখন আসে মায়ের, আসছে মেয়ে ফিরে
নাজমুল সাথে, বাবার পায়ে কাঁদছে জড়িয়ে ধরে।  
বাবা সব মেনে নেয়, কাদিস নারে মেয়ে
ভালোবাসা এমনি বুঝি, ভুল রক্ত ছিন্ন হয়ে।
ভুল ছিলো সব আমার ছিলো কাদিস নারে তোরা
ঘরে নিয়ে যাও, বৃষ্টির মা; জামাই–মেয়ের জোড়া।


ভালোবাসার জয় হয়েছে, সত্য প্রেমের জয়
সংসার তব শুরু হয়েছে, জীবন সুখের ময়।
আলোর কোলে মাথা রেখে, আলোর সাথে বাস
অন্ধকারে ঘুমিয়ে যাবে একটু খানি আয়েশ!  
মধু মিলনে রাত রয়ে যায়, সকাল হবে কবে
নাজমুল–বৃষ্টি সুখে রয়েছে, সুখের জীবণ হবে।
দু'জন আবার পড়াশোনায় মন দিয়েছে বেশ
সংসারেতে মন দিয়েছে, দেখছে কত দেশ।
টিউশনিতে মনোযোগ, সংসার চলে তবে
পড়াশোনা–সংসার চলে টিউশনির জবে।
আলাদা বাসা নিয়েছে দু'জন,থাকছে দু'টি পাখি
ভালোবাসার মন ঘরেতে, সুখের মেলে আঁখি।



মনে–মনে কত ভাবনা, দাগছে কত কথা
স্বপ্ন চোখে নিয়ম যত ভাঙছে শত ব্যথা।
কর্ম তাহার ধর্ম বলে,স্বচ্ছ চোখ রয়েছে মেলে
শিক্ষার আলো ঘরে–ঘরে, সুশিক্ষা পেলে।


পাঠশালা তুলবে গড়ে, পদ্মার মত করে
বিদ্যার সাগর বঙ্গভূমি মায়ের চোখের তরে।
নাজমুল এখন পাঠশালা গড়বে আলো দিয়ে
আলোর পরশ স্বর্গ দিবে দু'নয়নে চেয়ে।


পাঠশালাতে পড়বে শিশু, ছোট্ট পাখির দল
আকাশ উড়ার স্বপ্ন নিয়ে, অসীম মনোবল।
হাসবে শিশু আপন মনে, গাইবে সাম্যের গান
সভ্য হয়ে অসভ্যদের করবে শিক্ষাদান।


জুলুমকারি,ব্যভিচারী, রক্ত চুষার দল
শিশুর শিক্ষা ভেঙে দিবে, অনিয়মের বল।
সমাজে যারা বিচার করে, খারাপ লয়ে লিপ্ত
শিশুরা সব বুঝতে পারে, সত্যের দ্বয়ে ক্ষিপ্ত।


পাঠশালাতে পড়বে শিশু, শিখবে কত পড়া
অজানাকে জানবে তারা,সত্য মনে গড়া।
পাঠশালাতে সত্য শিখায়, সত্যের কোমল ছায়া
নাজমুলের চোখ স্বপ্ন খোঁজে, মায়ের স্বপ্ন ছোয়া।


নাজমুল–বৃষ্টি শিক্ষকতা করছে মনের স্বাদে
পাঠশালাতে ছোট্ট পাখি আসছে দল বেঁধে।
পাঠশালাতে হাসি মুখে পড়ছে ছোট্ট পাখি
ঝাঁকে–ঝাঁকে কোমল পাখি,মেলছে স্বপ্ন আঁখি।


স্বপ্ন ছিলো পাঠশালা তার স্বপ্ন দিবে আঁখি
স্বপ্ন পূরণ হয়েছে আজ, উড়ছে কত পাখি।
পাঠশালা তার আলো দিবে গাঁয়ের ঘরে–ঘরে
ছোট্ট পাখি শিখবে কত, সত্যের ভান্ড তরে।



দিনের পথে মন পুষিয়ে, ঈমান আনিলো ইসলাম
ইবাদত, নিশি–দিন;সত্যের পথে, সত্যের সুগম।
কুরআন মাজিদ পাঠ করিয়া, নামাজে গভীর মন
খোদার কাছে প্রার্থনা করে সত্যে কাঁদে সারাক্ষণ।


পুষ্প বাঁধিয়া মনের তরে গাহে সত্যের গান
চোখের ঈক্ষন করুণ সুরে বহে অন্তরে ঈমান।
গভীর রাতে কাঁদিয়া ডাকে খোদার নিকট
বাবা,মা,বোন কেমন আছে, কাঁদে চোখ বিকট।


সারা রাত কাঁদিয়া দোয়া করিলো সবার লাগি
জান্নাত আসনে বসত দিও, কাঁদে মন রাত জাগি।
কলবে তাহার খোদার জিকির আলো হয় উদয়
সত্যের দুয়ার খুলেছে কপাট মিথ্যের বিহার ক্ষয়।


উচ্চ ধ্বনি,সত্যের বাণী,সবার তরে করিও প্রকাশ
সত্য কখনও মরে নাই ভবে, সত্যে মিশাও বাতাস।
সারা দুনিয়ায় জানান দেও সত্যের নাহি ভয়
সত্যের মাঝে কণ্ঠ রাখিয়া, গাও গান জয়–জয়।


নাজমুল এখনও করিতেছে যুদ্ধ, মিথ্যে মনের সাথে
সত্যের তরে ভক্তি করে, রবে সত্যের পুষ্প গেঁথে।
সুন্নী ছাড়া দল নাহি আর ইসলামের আশির্বাদে
মুসলিম মোরা সুন্নী হয়ে,ঈমান মনে বাঁধে।                  


ঈমানের তরে মরিবে জন, রাখিয় মনে ঈমান
ঈমান ছাড়া মরিলে জন,জ্বলিবে জাহান্নামের আগুন।
সত্যের বাণী ইসলাম দিবে, স্বর্গ বড় দাম
স্বর্গ যদি আশা কর, ইসলামের তরে কর নাম।