প্রিয় বন্ধু,
আসবি যখন, আমাকে জানিয়ে আসিস।
সবুজের কার্পেটে মোড়ানো-
এই শহরের অলি-গলি সব আমায় চেনে।
ঘুরিয়ে দেখাবো তোকে, ইচ্ছে মত।
প্রায় এক দশক হতে চললো এখানে।
প্রথম কয়েক বছর,
মাতাল হাতির মত চষে বেড়িয়েছি,
লাক্কাতুরা থেকে জৈন্তার সবুজে;
কিংবা ভোলাগঞ্জ থেকে কানাইঘাটের প্রান্তরে;
কিংবা, কিংবা, টিলা বাবুদের উঠোনে উঠোনে।
বলতে পারিস, তছনছ করেছি।
রাতের প্রহরীও ঘুমিয়ে পরতো তখন,
যখন ফিরতাম নীড়ে।
পাংতুমাই এর প্রপাতের শব্দ,
আর বিছানাকান্দির জলের ক্রন্দন;
বিউগলের মূর্ছনায় মোহাবিষ্ট করবে তোকে।
শহরের প্রারম্ভে, অতিকায় সাঁকোকে
শুধু দেখিস না, অনুভব করিস।
দেখবি, এটা কোন মৃত জঞ্জাল নয়।
যেন এক জীবন্ত অবয়ব।
পরম স্নেহে আগলে রেখেছে এই শহরকে, অভ্যর্থনার ভঙ্গিতে শতাব্দীকাল ধরে।
শহর এখানে যেন এক একান্নবর্তী পরিবার;
আর মানুষেরা যেন একই পরিবারভুক্ত।
কুয়াশার হিমশীতলে হিলুয়াছড়ার আদিবাসী,
আর সুবাসিত চায়ের ধোঁয়া,
তোকে মুহূর্তে নিয়ে যাবে সুদূর দার্জিলিংয়ের রাস্তায়।
এখানে কাঞ্চনজঙ্ঘা খুঁজতে যাস না।
তবে খুঁজে নিস, অবনত মাথায় ডুবে থাকা রাতারগুল।
এক ধ্যানমগ্ন বুদ্ধ যেন।
প্রিয় বন্ধু, নিমন্ত্রণ রইলো,
প্রিয় সিলেটের নিসর্গে।

রাত ১১টা ৩০,
আগস্ট ২২, ২০২১,
সিলেট।