মৃত্যু এলে এভাবেই আসুক,
প্রবল অহঙ্কারে, প্রকাশ্য দিবালোকে;
আকাশ কেঁপে উঠুক আমার চিৎকারে
রাত্রি কেঁপে উঠুক মৃত্যুর যৌন শীৎকারে।


যদি আসে, আসবেই।
তবে উল্কার বেগে,
ঝরের রাতে,
স্বপ্ন হাতে,
আসুক।
আসুক এভাবেই।


পথের স্বৈরাচারী গাড়ি নয়
বৈদ্যুতিক তারের স্পর্শে নয়
স্বাভাবিক সুখের অসুখে নয়
অক্সিজেনহীন জলে নয়
সেই আঘাতে না, যার অহংকার নয় পাহাড় সম
ধর্ষণের পর লজ্জায় নয়
দুর্নীতির অপরাধে অপমানে নয়
ভালবাসা দিবসে যুগল হত্যায় নয়
শ্রমিকের বুকে দেয়াল ভেঙ্গে নয়
রোহিঙ্গার মত জীবন্ত আগুনে নয়
মৃত্যু আসুক দ্বিতীয় জীবন রূপে।


আমার ব্যর্থ সব বিপ্লব শেষে
আমার সার্থক সব বিপ্লব শেষে
আমার কাঙ্খিত এই ভ্রমণ শেষে
মৃত্যু যখন আসে এভাবেই আসুক।
বীরের মত প্রবেশ করুক বীরের শরীরে,
কবির নির্ভীক মননে।


ভয় !
আমার কি ভয় ?
প্রফুল্ল চাকির রক্ত আমার শরীরে
ভিসুভিয়াস হয়ে জ্বলছে।
ভগিরথি হয়ে ভাসিয়ে নিচ্ছে সঙ্কীর্ণতা;
বাতাস হয়ে উড়িয়ে দিচ্ছে শান্তি।


আমার মাথা উঁচু অই আকাশের চেয়ে;
মৃত্যু যদি ভয় পায়!
তাকে ক্ষুদিরামের গল্প শোনাবো।
যদি প্রশ্ন করে আমি কে ?
বলব- আমি “মানুষ”, আমি “সভ্যতা”
আমি-
ক্ষুদিরামের ফাসির মঞ্চে একমাত্র ইতিহাস,
সূর্যসেনের সত্য কণ্ঠে দৃঢ় চীৎকার,
চে গ্যেভারার মহৎ যুদ্ধের প্রতিটি পদক্ষেপ,
প্রীতিলতার আত্মহত্যায় ছিলাম অহংকার।


আমি এক চিরযোদ্ধা;
অত্যাচারীর আঘাতের প্রত্যাঘাত হয়ে
যুগে যুগে আমার আবির্ভাব।
আমি কবি-
আমি জানি কি করে স্বপ্ন ছড়িয়ে দিতে হয় পথে,
মানবী ও নষ্ট পুরুষের রক্তে।


আমার কলম চিনে নেবে অন্য হাত;
জানি বলেই-
মৃত্যুতে আমার মৃত্যু নেই।
ক্ষুদিরাম,নূর হোসেনের মত কালপুরুষের মৃত্যুর পর
আসবে নতুন কালপুরুষ।
আমার কি ভয় ?
আমার বুক পকেটে শোকাহত জননীর শেষ চিঠি,
ডান হাতে চে গ্যেভারার বিশ্বস্ত আদর্শ,
চোখে পিকাসোর গোয়ের্নিকা,
বুকে জীবনানন্দ-সুকান্ত-কার্ল মার্ক্স,
কলমে শহীদ রফিকের ভাষা,
মুখে নির্জন চিৎকারে একটি শব্দ “স্বাধীনতা” ।
মৃত্যু আসে, এভাবেই আসুক।
বীরের মত প্রবেশ করুক বীরের শরীরে।


আমি এখানে বলেছি, “মৃত্যু আসে, এভাবেই আসুক”
কিন্তু কিভাবে?
কোন পথে মৃত্যু আপনার কাম্য?
অপমৃত্যু? যদি উত্তর হয় “না”
তবে সময় আপনার।
আসুন পথে নামি।
বুকে স্মরণ করি ৫২,৭১… ।


http://www.tarunyo.com/shopnilshishir/blog/post20140807040110/
শঙ্খচিল