এ শহর একদিন আমার ছিল ।
আমি কখনো এ শহরের আগুন্তুক
কখনো বন্ধু ছিলাম।
এ শহর আমাকে একা করে রেখেছিল,
বন্দি করেছিল হয়তো কোনো অভিশাপে
হয়তোবা কোনো দখলপ্রবণ ভালোবাসায় ।
তাই এই শহরে একদিন আমি একা ছিলাম।
শুধু এ শহরের অভিজ্ঞতা নেয়া আমি,
বারে বারে শত শত
ভ্রমন অভিজ্ঞতায় অহংকারী মানুষদের
মুখোমুখি হয়েছিলাম ।
শিল্পের জমিনে দারুণ ব্যর্থতায়
পদচারণা করেছিলাম,
তবু নির্লজ্জ অবজ্ঞায় আরো আরো অক্ষম
সৃষ্টিদের শুধু গড়েছিলাম ।
বৃষ্টি ভেজা রাস্তায় ভেজা হৃদয়ে
অনেক অশ্রুমাখা বাক্যদের লিখেছিলাম,
শীতের সন্ধ্যায় উষ্ণ কাপড়ে
বিষন্ন হেঁটেছিলাম একাকী কথোপকথনে ।
রক্তরাঙা অসুখের সাথে
থেকেছিলাম নিদ্রাহীন সহস্র ঝড় আর বৃষ্টি ভেজা রাতে।
এ শহর একদিন ছিল গ্রীষ্ম থেকে বসন্ত
আমার একাকিত্বের মুখর সংলাপের প্রেক্ষাগৃহ ।
অপেক্ষা থেকে অপেক্ষায় আমি কাটিয়েছিলাম
এই শহরের দিনের পরে রাত্রি,
তবু ভালোবাসার কোমল হাত
কখনো আমাকে স্পর্শ করেনি ।
এমনকি বহু দেরীতে দেখা হওয়া
শৈল্পিক রমণীটির মনেও অনুকম্পা আসেনি ।
তার ও আরো রমণীদের হৃদয় ছিল
পাথরের মতো, দর্শনের সমৃদ্ধ মর্মর,
তা প্রত্যক্ষ করেছিলাম ।
তাই আমি এই শহরে একা একা
আমার রোমান্টিকতার শত শত অভিমান
অপ্সরীদের মতো সন্ধ্যার বাতাসে উড়িয়েছিলাম।
অভিযোগের অনল ছড়িয়ে ছড়িয়ে
আমার আর স্বার্থপর সব অবয়বদের মাঝে
দুর্দান্ত দূরত্ব ঘটিয়েছিলাম।
ঈশ্বর ও জীবনের জ্যোতির্বলয়ে অকৃতজ্ঞতা
ও মৃত্যুর কবিতা নিষ্ঠীবনের মতো ছিটিয়েছিলাম,
ছড়িয়েছিলাম শুধু বিমুখতার দারুণ বীজ,
এ শহরে এ জীবন আমার
একদিন ছিল শুধু বিতৃষ্ণার বাগান ।
তাই এই শহরে
একদিন আমি শুধু বেদনার্তই ছিলাম ।  
প্রেমহীন কিছু প্রথাগত বন্ধনের জন্যই
আমি এ শহরে
একদিন বেঁচে থাকা মেনে নিয়েছিলাম ।  


(২২.১২.২০২৩)