করোনাকালে বন্দি সব কবিরা
লিখে চলেছেন
নক্ষত্রলোকের মতো দ্যুতিময় রাশি রাশি কবিতা
কলমের নিবে, কম্পিউটার কি-স্ট্রোকে
উঠে আসে শব্দ শুধু করোনা
হয়তো কবি লিখছেন অন্য কোনো বিষয়ে
তবুও ঝট করে অজান্তে হানা দেয় করোনা


ভবিষ্যতে, নিশ্চিত
এই নিকষ আধাঁর নিঃশেষের পর
করোনাকালের কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হবে
হৃষ্টপুষ্ট বেশ কয়েক ভলিউম
এনসাইক্লোপেডিয়া ব্রিটানিকা


এই ক্রান্তিকালে এত কবিতা কবিদের লেখা হতো না
যদি না পেতেন তারা ডিজিটাল সাইবার কাগজহীন বিশ্ব
আইপ্যাড, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ কম্পিউটার
অচল আজ অনেক কবি কম্পিউটার ছাড়া
কবিরা কলমে আর প্রেমপত্র লেখে না


এ যদি সেই কলমের যুগ হতো


আমাদের কয়জন কবিই বা টাইপরাইটারে লিখতেন কলমের যুগে
শুধু জানি, লিখতেন সৈয়দ শামসুল হক
দামি দামি কলম উপহার পেলেও হুমায়ূন আহমেদ লিখতেন
অতি সাধারণ বলপয়েন্ট কলমে।
দামি কলমের ঝোক ছিলো না সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের
গল্প-উপন্যাস সব ওয়ান টাইম ডটপেনে
রবীন্দ্রনাথ লিখতেন ঝরণা কলমে,
অর্থের টানাটানি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কখনই
কলমবিলাসী করেনি, তারাশঙ্কর একটি কলমে লিখতেন
একটিই উপন্যাস, বুদ্ধদেব বসুর ফাউন্টেন পেনে
ভক্তি ছিলো অত্যধিক,
মেয়েকে একবার ধমকে ছিলেন ডট পেনে চিঠি লেখায়,
সত্যজিৎ রায় বাংলায় একটি শব্দ লিখতে গেলেও
হাতে তুলে নিতেন ঝরনা কলম


তাই বলছিলাম, এ যদি সেই কলমের যুগ হতো


চাল ডাল তেলের মজুদকারী
কাগজ কলমও মজুদ করে তৈরী করতো ক্রাইসিস
ধূর্ত প্রজাতি মজুদকারী
তাদের জানা আছে সব বাঙালি, কবি
কাগজ কলম হয়ে যেতো মহার্ঘ
কবিরা মাথা কূটে মরতেন,
“আমাকে অন্ন দিও না, আমাকে কলম দাও,
চাল খুঁজতে যেও না, কলম খুঁজে আনো...”
পাগলপ্রায় কোনো কবি হয়তো রক্ত খুঁড়েও...


করোনা থামাতে চাইছে সবকিছু


কবিতা
       কখনো
             থামাতে
                     পারবে
                             না।


(রচনাঃ ১৪.০৪.২০২০)