বৃষ্টি ঝম ঝম করে ঝরছে;
একাকী শুয়ে আছি বিছানাতে নিঃসঙ্গ,
আছে আছে অর্ধাঙ্গিনী মোর
রান্না ঘরে, প্রিয়া
রাঁধছে কিছু বৃষ্টি উপযোগী স্বাদু পলান্ন
এই 'মধ্যাহ্নের' জন্য;


কবিতার বইটা বুক থেকে ফেলে দিয়ে,
বৃষ্টি যেন দুষ্ট বুদ্ধির তাল ঠুকে আমার
উদ্বেলিত হৃদয়ে;
চুপিচুপি জেগে উঠি বধুরাঁধুনীর রমণীয় পৃষ্ঠপটে,
চমকে দিয়ে জড়িয়ে ধরি পেছন থেকে;
কপোট রাগে শাসায় আমার রমণী
“করছো কি, করছো কি, যাচ্ছে পুড়ে”
“পুড়ুক! আমি যে পুড়ছি বৃষ্টি বিরহে”;


হাতের খুন্তি কেড়ে তার, চোখে চোখ
রেখে বলি, “বৃষ্টি যে ঝরে অঝোরে,
শোন না তুমি, কবে থেকে এমন হলে,
আমি কি দায়ী তবে, আমার জন্য বৃষ্টি
তোমায়, ছেড়ে চলে গেছে কি অভিমানে?”


“তোমাকে পেলো আজ কোন ভুতে, দাও,
রান্না শেষ করেই আসছি আমি তোমার কাছে”


না! না! দিলাম চুলো বন্ধ করে; খপ করে তার
হাতটি ধরে, “আর কোনো কথা নয়, চির বান্ধবী,
এক্ষুনি ছাদে যেতে হবে, বৃষ্টিতে নেচে ভিজতে
হবে;”


শেষ দৃশ্যটি বলি তাহলে; দেখলাম, বৃষ্টিতে
ঘুরে ঘুরে নাচতে নাচতে, আমার রমণী ফিরে
যাচ্ছে যেন তার, হারিয়ে ফেলা কিশোরী কালে,
হ্যাঁ, তার কিশোরকালে!


এরপর কি যেন কিছু একটা হলো, ঝমঝমে বৃষ্টি
তার সমস্ত অস্তিত্বে আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো,
ঐ যে রমণী নাচছে, তার হারিয়ে যাওয়া যুবতীকালের
বৃষ্টির শরীর, তার দিকে তাকাতে তাকাতে, নিঃসাড়ে
বৃষ্টি যেন আনমনা করে দিলো
অদ্ভুত এক প্রথাবিরোধী ভাবনার পথে;


বিয়ের পরে, ইনফেক্ট আমার জীবনটা পুরো ইনট্যাক্ট,
আর ঐ রমণীর, ওরটা যে মেটামরফোসিস!, তার জীবন
পরিবর্তিত আমার জীবনে;


আর ওর যে জীবনটা ছিলো জীবনের কোনো এক পারে,
এখন কাঁদছে, খুব কাঁদছে যেনো কোনো কবর অন্ধকারে;


তুমি কি বুঝতে পারছো, তোমাদের এই
উৎসবমূখর বৃষ্টি বেলায়,
হঠাৎ বর্ষার ঘোর দহনে,
দাঁড়িয়ে আছি আমি এক, ঘন বৃষ্টিময়
হাহাকারে!


(০৮.০৭.২০২০)