"ঝগড়া করিয়েন না",


থমকে গেলো বৈশাখী-উৎসব নিয়ে আমার বিতর্কমুখর মুখ
আর টেবিলে সামান্য ঝুঁকে পড়া দেহ;


এ কি সুমিষ্টতা ! এ কি আঞ্চলিক ভাষার নিপুণ ঠোকা!


মুহূর্তেই চোখে গ্রামীণ কুঁড়েঘরের দরজা ঘেঁষা আড়ালে
আনত নয়ন এক নারী অবয়ব ফুটে উঠলো তার সমস্ত লোকজ সৌন্দর্যে;
যেন উড়ে এলো এ বঙ্গের দক্ষিণ-পূর্বাংশ হতে আকুল বিষন্ণ শব্দের পাখিরা,
বলে উঠলো আমাদের এ শহুরে জানালার পাশের আম্র বৃক্ষে বসে,
মনে হলো শুনলাম,
ধ্রুপদী লালসালু'র কন্যাদের মতো স্বরে অসামান্য আর্তি
"ঝগড়া করিয়েন না";


মুহূর্তের ঠাট্টায় আমাকে দারুণ অনুরাগে সে
করে তুলেছিল এক প্রেম-পীড়িত বাংলার আমূল রাখাল !
অথচ হাসছে এখন মিটিমিটি আমার এ প্রিয় রমণী,
প্রমিত বাংলার শুদ্ধ শহুরে প্রতিমা;
হঠাৎ পাওয়া এই লোক-লালিত্য শব্দের সুর
আমি যখন সত্তায় ভেজাতে থাকি পুকুরে হংসের মতন,
সে মনোযোগী হয় আবার কলম আর কাগজে,
মুছে যেতে থাকে ঐ সুসম্পন্ন সুন্দর মুখশ্রী থেকে
আমার হৃদয় থমকে দেয়া তার
মাত্র কিছুক্ষণ আগে করা আশ্চর্য রাঙা দুষ্টুমির ছাপ;


অথচ রমণীটি শোনে না, আমার হৃদয় মঞ্চে তখনও ঘন ঘন ধ্বনিত  
লোকনাট্য মনোহর ক্ষণ-উপযুক্ত তার নিঁখুত রঙ্গ সংলাপ।


(১৭.০৪.২০২২)