সাত সকালের কাওরান বাজার ষ্ট্রীট
অফিসে অফিসে ঢুকছে সুসভ্য-সুবেশ নাগরিক
সওদাগরী শাটার খুলছে একে একে
প্রজাপতি কিছু ছুটছে স্কুলে - মৌন, ছটফটে
ডিম-পরোটার হোটেল খুলে গেছে সেই কাকভোরে
হকাররা সব ফুটপাতে মাতোয়ারা হাঁকে আর ডাকে।


তবে লিখতে বসেছি আমি যাদের কথা
শুভ্র সকাল তারা অপরিচ্ছন্ন করে না;
তারা আসে সন্ধ্যার পর, যখন প্রকৃত জাগে মেট্রোপলিটান,
ছোটে ফোয়ারা, লাল নীল হলুদ নিয়ন, ঝলসায় চারিদিক,
সারি সারি গাড়িতে জব্দ, অগুনিত সুসভ্য-সুবেশ নাগরিক;
তখন তারা আসে - দাড়ায় থামের আড়ালে, দেয়াল ঘেষে-
অন্ধকারে, পৃথিবীর আদিমতম জীবিকায়।


বাসের জানালা থেকে এমনি এক সন্ধ্যায়-
থমকে গেলাম, যেমন থমকে ছিলো জটে, আয়েশবর্জিত বাস;    
ফুটপাতে এক বীর - প্রবল লাথিতে ছুঁড়ে দিলো,
ওভারব্রীজের কঠিন ইষ্পাত সিঁড়িতে, এমনই এক ঘৃণ্য
আপাত: অস্পৃশ্যাকে!, তবে ফের উঠে দাড়ালো সে,
তাকালো পাথর চোখে, আমাদের বীরের দিকে!
ওর পাথর চোখ যেন বলছিলো
“মার, ও বীর, ও সমাজ রক্ষাকারী,
মেরে মাথা-মুখ ফাটিয়ে দে, রক্তাক্ত হাতে বাড়ী যা,
উপগত হ বীরের বেশে, ভাতের প্লেটে আর
আশাহত স্ত্রীতে, তৃপ্ত ঘুমের আগে।”
স্থির দাড়িয়ে তখনো সে অপেক্ষায়, আরো বীর প্রহারের;
নারীতো! কোনো পকেটমার ছোঁড়াতো নয়, যে একছুটে পালাবে,


আমার বাসটিও যেন সরে গেলো সেইক্ষণে
আমার অপ্রযোজ্য অহেতুক উৎকন্ঠা অবসানে।


(মে ২০, ২০১০)


(*সুসভ্য-সুবেশ নাগরিক, ভেঙ্গেছিলো সে সময় (২০০৯-১০ সাল)
তাদের লোকালয়, ভেবেছিলো বিলীন হবে, দেখালে ভয়, ছিলো না
সমাজে বিকল্প পুনস্থাপন পরিকল্পনা, ছড়িয়ে পড়লো সারা শহরে
মেটাতে ভাতের খিদে, তাতেও দোষ!, আর আমাদের সেডিস্ট বীরেরা
পেল পিটিয়ে রক্তক্ষরণ পান করার সুখ! - আমরা কিন্তু মানুষ এবং
ওরাও! অন্যায় অত্যাচার মানুষ কখনো করে না, করে কিছু মানুষরূপী
পিশাচ।)