মেয়েটি একদিন হাঁটতো এ দেয়ালের ওপর দিয়ে,
তারপর একদিন, কখনো ফিরে এলো না আর সে মেয়ে;
তবে কী আজ আর আসবে না ফিরে কখনোই সেই মেয়ে ?
বৈশাখের প্রথম দিনে এ প্রশ্নটিই প্রথমে হৃদয়ে আঘাত করে,
মেয়েটি যে প্রবল বৈশাখী ছিল;
তার দু'হাতের কররেখায়, তার সাহসী দুটো চোখে
বয়ে যেতো বৈশাখের চিরায়ত ঐতিহ্য, রমণীয় সে আনন্দধারা,
মায়া ভরা এ আপাত দূরত্বে নির্লিপ্ত
আমার হৃদয়ে সে চিত্ররূপ ছিল খুব হৃদয় কাড়া!


আমার প্রশ্নটি কখনো হয়ে ওঠে না ঝড়; বরঞ্চ
ঝড়ের পূর্বে ঘন ছাই রঙে ভরা মেঘের স্নিগ্ধ ভেজা ভেজা বাতাসে,
মন কেমন করার মতো সে প্রশ্নে, নিখুঁত মিশে থাকে সুক্ষ্ণ সুক্ষ্ণ বেদনা,
মেয়েটি কী কখনোই এ দেয়ালের ওপর আবার
ফিরে এসে হাঁটবে না ?


বৈশাখী ঝড়ের পরে
এলোমেলো আমার এ হৃদয়ের খানাখন্দে
জমে থাকে যে জল, সেখানে কিছু দূর দূর মেয়েটির প্রতিবিম্ব;
যে মেয়েটি প্রবল বৈশাখী ছিল;
কাঁচের চুড়ি, লাল টিপ, পাঞ্জাবী চপ্পল জিন্স,
বেণী বন্ধনে দুলছে পিঠে চুল, উড়ছে ওড়না বৈশাখী ঝড়ের উদ্দাম বাতাসে,
আধুনিক অথচ আমার জন্মভূমির আবহমান বাঙালি মেয়ে;
বৈশাখী মেয়ে, তোমাকে খুব মনে পড়ে;


বৈশাখ আসে, সে প্রবল বৈশাখী মেয়েটি আর আসে না, এলো না ফিরে,
সে দেয়ালের মতোই
নিথর আমার এ হৃদয়, বৈশাখী কোনো আবেগে আর ওঠে না কেঁপে,
শুধু দেখে মেয়েটি, দেয়ালের ওপর দিয়ে হাঁটছে
এক টুকরো উজ্জ্বল
এক টুকরো প্রাণবন্ত বাংলার প্রতিমার জীবন-দৃশ্যের মতো করে।


(১৩.০৪.২০২২)


(সবাইকে শুভ বাংলা নববর্ষ ১৪২৯! পহেলা বৈশাখ উৎসব, বাঙালিদের জীবনে চিরকাল চিরায়ত আনন্দ রূপ ধারণ করে থাকুক!)