যে লোকটি দাঁড়িয়ে ঐ পথের মোড়ে
জেনে দেখো সে আছে আজ অনাহারে ।
তার দু'চোখে শুধু স্বপ্ন ভাসে দু'মুঠো ভাতের তরে,
তার পর্ণকুটিরের স্বপ্ন দু'মুঠেো অন্ন তরে ।


যে লোকটি দাঁড়িয়ে ঐ পথের মোড়ে
গৃহহীন এক কৃষক আমাদের এই শহরে ।
সে ছেড়ে এসেছে সবুজ গ্রাম, দু'মুঠো অন্ন খোঁজে,
সে হারিয়েছে সবকিছু ঐ প্রকৃতির দুর্যোগে ।


যে মেয়েটি দাঁড়িয়ে ঐ পথের মোড়ে
তার চোখে অশ্রুর জল নীরবে ভাসে ।
সে লজ্জিত আর বঞ্চিত আমাদের এই সমাজে,
সে হয়তো চলে এ ঘৃণ্য পথে অহেতুক কত অত্যাচারে ।


যে যুবক দাঁড়িয়ে ঐ পথের মোড়ে
কে যেনো দিয়েছে অস্ত্র তাকে ।
হত্যা-ক্রীড়ার আর নেশার ভেলায় সে ভেসে যায় বিপথে,
চলেছে সে আজ মৃত্যু পথে আঁধার কালো ইশারাতে ।


যে শিশু বড় হয় ঐ পথের মোড়ে
শিশুশ্রম, অনাহার আর অনাদরে ।
কেউ আঁকে না তো স্বপ্ন কোনো ঐ অবুঝ হৃদয়ে,
হারিয়ে যায় তার কোমল মন, বাস্তবতার আঘাতে ।


যে শ্রমিক দাঁড়িয়ে ঐ পথের মোড়ে
বেঁচে থাকে কোনোক্রমে অন্যায়, শোষণে ।
তার দু'হাতের ঐ সবল শ্রমে বাড়ে পুঁজিবাদী এ শহর,
তবু পায় না সে ন্যায় শ্রমমূল্য, কাটে দুঃস্বপ্নের প্রহর ।


আমি জানতে চাই, আমি জানতে চাই, আমি জানতে চাই
এ কোন সমাজে বেঁচে আছি আমরা ।
আমি জানতে চাই, আমি জানতে চাই, আমি জানতে চাই
তারাও কি নয়, আমাদেরই একজনা ?


হে সমাজ, তুমি কতদিন, কতদিন আর রবে উদাসীন ?
এভাবেই বেড়ে যায় সমাজে অসাম্য দিন ।


(০৬.০৭.১৯৯৯)
(২৭ থেকে ২৯ বছর বয়সে লেখা "আর্চিস এক্সারসাইজ বুক" নামাঙ্কিত খাতা থেকে)