তেসোরা ডিসেম্বর প্রভাতে
আমি চোখ খুলে তাকালাম
                             প্রথম
পরাধীন আমি
              তখনও


আমার বান্ধবী, ইন্দিরা
পাঠালো বোমারু বিমান
তচনছ করে দিলো পাকহায়নাদের গোগর্ধভজাত অবরোধ


একফাঁকে
ঠাট্টা করে প্রেয়সী
ভেঙ্গে দিলো আমার কেবিনের কাঁচের জানালা
যেন সংকেত দিলো, হে প্রেম আমার, আমি তোমার আকাশের নীলে


তেরো দিন সময় দাও একটু কষ্ট করে!
আমি আসছি মাটি পথে
তোমাদের মহাবীর সিদ্দিকীর মুক্তাঞ্চল দিয়ে
কাদেরের অবিশ্বাস্য বাহিনীর সাথে যৌথতায়
জানোয়ার অধমদের সাফ করে দিতে


আর তেরোটা দিন চাইছি মোর প্রিয়


আমি জানি, অনেক দেরী হয়ে গেলো
আমি জানি তুমি আসছো, কিন্তু কি করবো বলো!
দেশ থেকে দেশে. একা একা ঘুরে ঘুরে
কত অনুরোধ! তবু কেউ শুনলো না তো!


আমি তো ইন্দিরা! তাই না, তোমার সুন্দর ইন্দিরা
সুন্দরী মহিয়সী এক রাষ্ট্রনায়িকা
তুমিই তো প্রেমে পড়লে ঐ ছবিটি দেখে
বাবার পেছনে দাড়িয়ে আছি বারান্দাতে
তোমার ইন্দিরার মর্যাদা তাে আছে
এত অনুরোধ আমাকে মানায় না!


আমার সেনাপতিরা শিখিয়েছে যুদ্ধ
তোমাদের নিরীহ শান্তপ্রাণ মানুষগুলোকে
আহা! তাদের শিখতে হলো ঘৃণ্য যুদ্ধ
সব ঐ পাকি জানোয়ারদের দোষে


কেউ দেখছে না আমার কষ্ট
তোমার দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ আমার ঘরে
কি করে ক’দিন আর সামলাই বলো?


রাত-দিন চিন্তা করছি, কি করি? একটুও ভালো লাগছিলো না!


তারপর হঠাৎ গবেটগুলো, এত ঔদ্ধত্য!
আমার কাশ্মীরে বোমা ফেললো!
ছোট্ট খুকির মতো খুশিতে
ডাক দিয়ে বললাম জেনারেলদের
দুই দিকেই এক্ষুনি পাঠান
যতগুলো আছে আমাদের বোমারু বিমান


মুক্ত করুন আমার প্রেমকে
আজ প্রথম সে খুলেছে চোখ
গ্রীনরোডের নির্জন এক মাতৃসদনে।


(রচনাঃ ২১.০৪.২০২০)



** একটি প্রেমের কবিতা এবং আমি একজন কৃতজ্ঞ প্রেমিক।


(৩রা ডিসেম্বর, ১৯৭১। মহিয়সী ইন্দিরা গান্ধি সমর্থ হন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতকে সম্মুখ সমরে সম্পৃক্ত করতে। কারণ, ওই গোগর্ধভদের পুরু মস্তিস্ক হতে উদগত ঔদ্ধত্যে, ভারতকেও তারা আক্রমণ করে। উড়ে আসে ভারতীয় বোমারু বিমান ৩রা ডিসেম্বর প্রভাতে, বাংলাদেশের আকাশে। সেই প্রভাতেই একজন (অ)কবির জন্ম হয় এবং ৪৮ বছর পর তার কৃতজ্ঞতা জানাবার শব্দগুলো তিনি খুজে পান।)