বারে বারে আসিব বাংলায়
          ---- শ্যামল চৌধুরী


আমার মায়ের অপার সমুদ্র সমান
ভালোবাসার অতনু নিরেট বাঁধন ছিঁড়ে
আমি কেন যাব দূরদেশে মরণের পরে?
উর্বর মৃন্ময় জমিন তার অকৃপণ অর্ঘ
অবারিত রেখেছে --আমৃত্যু আমার জন্য,
শিশিরে ভেজা পাতার ভাজে ভাজে
রূপোলী জোছনার মায়াবী যৌবন
আমি দেখবোনা কোনকালে, কোন বিভূঁই বিদেশে,
আমি দেখবোনা আরক্ত সূর্যাস্ত কেলি
নদী আর সমুদ্রের তরঙ্গায়িত অলিন্দে,
সরষের হলুদ উর্মিমালায় মৌমাছির গুণগুণ গান,
প্রজাপতির আবীর রঙা বর্ণিল  ডানা,
পাখির প্রাঞ্জল সুরেলা কণ্ঠ, কে দেবে আমায়?
মায়ের কন্ঠের আকুল করা ভাষার জন্য,
বোনের সম্ভ্রম কলঙ্কিত করার প্রতিবাদে আর স্বাধীনতার জন্য
রণসজ্জায় সজ্জিত হয়ে বুলেটে ছিন্নভিন্ন করতে বুক
--এমন অদম্য অসম সাহস কোথায় পাবো, আমি?
আমি বাংলার শাপলার বর্ণিল মায়ায়
কাটাতে পারি হাজার বছর, জন্মজন্মান্তর,
আমি ধানের স্বর্ণালি ঢেউয়ে কিষাণীর অনাবিল আনন্দে মোহিত হয়ে যাই,
বহতা নদীতে ডানপিটে কিশোরের ঝাঁপ
আমার অলিন্দে নিঃসীম সাহস ছড়িয়ে দেয়,
সহস্র বৈরী ঝড়ে বাবাকে ছেড়ে
না যাওয়ার মায়ের গল্পকথা আমার ভেতরের পশুত্বকে চুরমার করে দিয়ে,
আমাকে মানুষ করে তোলে,
টানাপোড়েনে বয়ে চলা বেদনার
এই দুর্দিন
আমি মুছে ফেলি মাটির সোঁদা
আনন্দে।


আমি ফিরিবো আবার বাংলায়,
ধবল বক হয়ে উড়ে উড়ে আঘ্রাণে জুড়াবো মন,
পাখি হয়ে অপার মুগ্ধতায় গাইব সুরেলা গান,
প্রজাপতি হয়ে দোলব ফুলে ফুলে বাংলায়
---- হয়তো চিনবে না কেই তোমরা আমায়,
আমি রবিঠাকুর নজরুল জীবনানন্দের কবিতার ভাজে ভাজে জীবন্ত ফুল পাখি প্রজাপতি হয়ে রয়ে যাবো অনন্তকাল এই বাংলায়।