জিউসের নিষ্পাপ রূপবতী তনয়া হেলেনের
বুকের গভীরের বেদনা বিধুর হিমেল মূর্ছনা
বুঝলো না পৌরাণিক দেবতাও, ধ্বংস করলো ট্রয়,
রক্তের ফোয়ারা ছড়ালো অকাল বৈধব্য।
ধিক্ !  ধিক্ !  ধিক্ !  


বৈশালীর সুশীলা অপরূপা আম্রপালির  অস্ফুট স্বপ্নেকে ভ্রুক্ষেপ করলে না কেউ
রাজা মহারাজার উদ্ভট হায়না-লিপ্সা
ভাঙলে স্বপ্ন তার, কৃষ্ণ টিপ পড়ালে কলঙ্কের।
ধিক্ !  ধিক্ !  ধিক্ !  


প্রমোদ প্রাসাদে সরলা নারীকে করেছো বন্দিনী,
আদিম সামন্ত উল্লাসে টইটম্বুর হলে আর গড়ালে
নিঃস্ব শিল্পীকে দিয়ে কালজয়ী পর্ণ ভাস্কর্য
ইতিহাসের পাতায় পাতায় মহত্ত্বের অভিলাসে।
ধিক্ !  ধিক্ !  ধিক্ !  


যে অবুঝ বালিকা পালকিতে পুতুলের সাথে
এসেছিল সব ছেড়ে, স্পন্দিত করেছিলো তোমার নিবাস,
নির্দয় পাথর হৃদয়ের তোমরা তুলে দিলে তারে
সতীর অভিধায় জলন্ত লেলিহান চিতাগ্নিতে।
ধিক্ ! ধিক্ ! ধিক্ !


আজ কল্পনার অন্ধকার বৃত্ত ছিঁড়ে বিজ্ঞান
নিয়েছে তোমায় বহুদূর নক্ষত্রালোকে।
তুমি তবু ডারউইন তত্ত্বের আদিমতার খোলস
ভেঙে মানুষ হতে পারনি, পড়েছ ছদ্মবেশ মানুষের।
ধিক্ !  ধিক্ !  ধিক্ !

জীবনকে মসৃণ করে সাজাতে নারীকে করেছো পসরা,
আকাশ ছোঁয়ার সোপান, পশুত্বের আহার্য, হিপক্রেসির মখমলে  নেকাব।
নগ্ন ছবি আর বিজ্ঞাপনে অপরিহার্য করেছো নারী।
ধিক্ ! ধিক্ !  ধিক্ !


পূর্বে পশ্চিমে বইছে আজ আনন্দধারা প্রগতির।
লালসার লেলিহান দাবানলে জ্বালাচ্ছো নারীত্ব,
আর কতকাল দাহ করবে নারীকে রাবণের চিতায়?
আর কতকাল ঝরাবে অশ্রু গঙ্গা মেঘনা যমুনার তীরে?
---মৃন্ময় কোমলতায় জাগলে পাষাণ্ড বিষবৃক্ষ, তুমি।
ধিক্ !  ধিক্ !  ধিক !  
            ------------