৮+৮+৬
প্রাচীন নগরে এক আসিলেন মহাজ্ঞানী গৈরিক  সন্ন্যাসী,
রাজা প্রজা মহারাজা পূজিলেন সবে তাঁকে আনন্দে উল্লাসী।
একাহারী ব্রহ্মচারী জানিলেন পুরে চলে,  দুর্ভিক্ষ সংকট,
দানিছে সবাই  তাঁরে, তবে  কাঁদিছে মানুষ, অভাব প্রকট।
লোকে বলে কর্মফলে কেহ রাজা মহারাজা, কেহ দীন দুঃখী
ভুগিছে নিঃস্ব মানুষ আপন কপাল দোষে , অন্য সবে সুখী।
দয়াময় সাধু কহে, মানুষের অনুদানে দুঃখ হবে নাশ
মানব সেবায় পাবে কল্পনার ভগবান, করো তা বিশ্বাস।
ডাকিলেন শ্রেষ্ঠী এক, কহিলেন, চাও ত্রাণ দুঃস্থের সেবায়,
সোনা রূপা খাদ্য অর্থ দিচ্ছে অকাতরে দান, হুকুম রক্ষায়।  
দীন ভিখারিনী এক, আছে শুধু নিজ তার মলিন বসন,
সম্ভ্রম ঢাকিয়া ঘুরে,  দুয়ারে দুয়ারে করে, ভিক্ষা অন্বেষণ।
সন্ন্যাসীরে দেখিছে সে, অমৃত তাঁহার বাণী করুণায় সিক্ত,
কী এমন আছে তার, দানিয়া হবে সে তৃপ্ত , সে-তো নিঃস্ব রিক্ত !  
আছে কেবল সম্বল, সম্ভ্রম ঢাকার মতো মলিন পিন্ধন,
ঝোপের আড়াল হতে  শ্রদ্ধাভরে দানিল সে অন্তিম বসন।
বিপুল ত্রাণ রাখিল সন্ন্যাসীর সমুখেতে, নির্দেশের তরে
ত্রিকালজ্ঞ জানিলেন, মহীয়সী নগ্না নারী ঝোপে অগোচরে।
দয়াময় কহিলেন, কাপড় পরায়ে আনো নারীদল গিয়া,
তোমাদের আছে ঢের, দিয়েছো সামান্য কিছু অঢেল রাখিয়া।
এ নারীর নাহি কিছু, আছে সম্বল সম্ভ্রম,
ভাবিলনা কিছু
দানিতে মহান চিত্তে সম্ভ্রম অবগুণ্ঠন, চাহিলনা পিছু।
অর্থ বিত্তে বলিয়ান, দুষ্ট চিত্তে বড় দান হয়নাকো মহান,
মুক্ত চিত্তধারী সাধ্যে যা করে অর্পণ, তাহা শ্রেষ্ঠদান।