ঃ আমার আগে কাউকে ভালোবেসেছো কি?


___ বেসেছিতো।


ঃ কই, কোনোদিনতো ভুলেও বলোনি সেটা।
মানুষ খুবই জটিল জীব। মৃত্যুর আগেও স্বরূপ বুঝা দায় !


___ সেই ভালোবাসা পৃথিবীতে জাগাতে পারে মানুষের কল্পিত স্বস্তি, স্বর্গের অনবদ্য অপরূপ রূপের মতোন অপার সৌন্দর্য, আকাশের ঔদার্য, শিশুর সারল্য, পূর্ণিমার মতো স্নিগ্ধ রাত, নিষ্পাপ কর্মচঞ্চল সোনালী দিবসের সম্ভার।


ঃ আমি কি তবে হেরে গেলাম ব্যর্থতার পঙ্কিলতায়?


___ না।
আমি হৃদয় দিয়ে ভালোবাসি তোমাকে। মনের আকাশে তোমার ক্ষণিকের কৃষ্ণ মেঘমালা জমেছে মাত্র। খণ্ডিত হয়েছে তাই তোমার নিঃসীম আকাশের ঔদার্যের বিশালতা।
তোমার অলিন্দেও ছড়াতে পারে অনন্ত মমতার সেই প্রেম।

ঃ কেমনতরো ছিলো তোমার সেই ভালোবাসা?


___ নবীন ফসলের মাঠে সবুজের উর্মিমালা, হেমন্তের সোনালী শষ্যের আঘ্রাণ, বেগুনী কলমি ফুলের বনে ডাহুকের তান, কিষাণ শ্রমজীবীর বিন্দু বিন্দু নিষ্কলুষ  ঘর্মাশ্রু, কিষাণীর গুণগুণ ফসল তোলার গান, স্পন্দিত রূপোলী  নদীতে ভাটিয়ালি সুরমূর্ছনা আর বৈষম্যের চোরাবালি পার করে  সংকটের তীক্ষ্ণতায় বয়ে চলা নিশ্চুপ দুর্ভাগা কৃষ্ণ প্রহরের মানুষকে আমি ভালোবেসেছি আকৈশোর।


ঃ অনন্ত! আমি আবার প্রেমিকা হবো৷ এই নন্দিত অবিনশ্বর প্রেমে পড়তে চাই তোমর বন্ধু হয়ে।


___ তাহলে তোমার ভোগতৃষ্ণা, দর্প দম্ভ, আত্মমায়া উবে যাবে নিমেষেই। সম্বলহীন বৈরাগীও হয়ে যেতে পারো সেই ভালোবাসার অতনু বাঁধনে।


ঃ আমি মানুষ! লোভ, রাক্ষুসে লিপ্সা, হিংস্রতায় কদর্য করে দিতে পারি পৃথিবীকে। আবার ত্যাগে গড়তে পারি অনিন্দ্য সুন্দর নন্দিত বেহেশত, স্বীয় বাসভূমে।


___ এসো লাবণ্য !
কত বধু কাঁদছে দুঃসহ অনটনে, শীর্ণতায় আকীর্ণ শিশু, এক চিলতে আশ্রয়ের খোঁজে তৃষ্ণার্ত  চাতকের মতো অসহায় বৃদ্ধা।
পৃথিবীতে বইছে আত্মকেন্দ্রীক  অনিয়মের ঘূর্ণি। আমাদের একাগ্র অঙ্গিকারে হয়ে যাবে পৃথিবী সাম্যের, ভালোবাসার আরাধ্য নিবাস আবাস।