ঃ দ্যাখো! অপূর্ব সূর্যাস্ত!  পাখিরা উড়ছে আনন্দে, সমুদ্র রঙে টইটম্বুর, অনাবিল উচ্ছ্বাসে নাচে ঢেউ। অপার অনন্ত প্রেম খেলছে বিশ্বচরাচরে।

---- আমার মনে হয়, যেন সূর্যটা সব রঙ ঢেলে দিবসকে বলছে, বিদায়, বন্ধু ! আর হবেনা কথা। হাতটা ছুঁয়ে ধীর লয়ে ডুবছে সমুদ্রে --- টাইটেনিকের বিয়োগাত্মক দৃশ্যপট যেন।


ঃ গোধূলির আবীর রঙা আকাশ বেয়ে এখুনি নামবে স্নিগ্ধ সন্ধ্যা, তারারা মিটমিট করে উঠবে জ্বলে, অমাবস্যাভূক চাঁদের সাথে লুকোচুরি খেলে রাত হারাবে তাবৎ অন্ধকার, আমাদের জীবনও এমন চাই। আকাশের ঔদার্য, সমুদ্রের  বিশালতা, চাঁদের অপার স্নিগ্ধ অর্ঘে পূর্ণ হোক আমাদের জীবন।


---- মানুষের সৌকর্য সম্ভার লুটে মানুষ। হিংসার অগ্নিদাহে ছাই হয় মনুষ্যত্ব। কদর্য অতীত নিয়ে মানুষ সহজে গড়ে সুখের মসনদ। বন্ধুর পথের পথিক সারল্যে নিবিষ্ট জন। সহজ সরল পথে সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন, তোমার কষ্ট কল্পনা মাত্র।


ঃ তবে কি আমরা বিভাজিত হয়ে পড়ছি জনে জনে, দলে দলে, দেশে দেশে ? এবং তুমি ও আমি?

---- মানুষের অদম্য তৃষ্ণা, সন্তোষহীন মন ছুটছে আকাশচুম্বী উচ্চাভিলাষী অভিযানে। লোভের খরতাপে দাহ হচ্ছে মানবতার ম্রিয়মাণ তনু। হিপোক্রেসি, আত্মকেন্দ্রিকতার ঘূর্ণিতে ঘুরে ঘুরে আমরা ক্রমাগত ছিটকে যাচ্ছি দূরে, বহুদূরে। এক নিরেট নিষ্ঠুরতায় দংশিত এখন মানুষ।


ঃ কবেকার অন্ধকারাচ্ছন্ন এই অনন্ত মধ্যাহ্ন রাতের কৃষ্ণতায় ছেড়ে দেবে নাতো আমার হাত ?

---- দুখের রাতে এখনো কিছু কিছু তারা, অপূর্ব চাঁদ আর জোনাকিরা স্পর্ধিত আলো ছড়ায়, সুপ্রভাতের স্বপ্নে বিভোর করে। তারা বন্ধু, তারা অনিন্দ্য মনের পথের সাথী। হালভাঙ্গা দিশাহারা নাবিকের পথের দিশা তারা।


ঃ আমি আমৃত্যু বন্ধু হতে চাই তোমার, আমি সুখের স্পন্দন ছড়াবো অলিন্দে, দুঃখের নিশীথের একান্ত সঙ্গী হবো শিশিরের মতোন।


---- ভুলে গেছি আতরের সুগন্ধ বিলাস, ভুলে গেছি মায়ের অকৃপণ উদার মমতা, আমি ভুলে গেছি বাবার ক্লান্ত দেহের মুখখানি জুড়ে অপার আনন্দের ছটা, ভুলে গেছি পাখির অনিন্দ্য সুন্দর কন্ঠ, বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে গেছে ভোরের শিশিরের ঔজ্জ্বল্য কেমন। আজ আমি সব ফিরে পেলাম--- এক উদার আকাশ আমার সামিয়ানা হয়ে আসলো। আমরা হাঁটবো পৃথিবীর পথে ভ্রুক্ষেপহীন আত্মমর্যাদার দীপ্ত অহংকারে। তাবৎ হিংসা, লোভ, কুৎসা, জিঘাংসার কদর্যতা দাহ হবে আমাদের আত্মিক বিশ্বাসী বন্ধনে।