ইস্টিশনে রেলগাড়ীটি গুম্ গুম্ আওয়াজে,
উঠছে মানুষ হরেক রকম, ভিন্নতর সাজে।
কেউ পড়ে পত্রিকা বই, কেউবা ঘুমের ঘোরে,
হতাশ হয়ে বলছে কেউ, ঘটলো যা নগরে।
আড়চোখে শুনে সবাই কি হয়েছে আবার,
-- অহরহ ঘটছে যেসব ঘটনার সমাহার।

বাবার অসুখ, ভাইয়ের পড়া, চিন্তা তরুণীর,
চাকরি খোঁজে যাচ্ছে নগর, ছেড়ে শান্তি নীড়।    
মায়ের অশ্রু, ভাইয়ের আশা, বাবা অসমর্থ,
হাজার বাঁধা ভেঙ্গে তবে  আনতে হবে অর্থ।
হায়না ঘুরে নগর জুড়ে লোলুপ তাদের দৃষ্টি,
চেনা জনও হয়না আপন, নগরে অনাসৃষ্টি।
আঁধার নামে দুচোখ জুড়ে, বুক কাঁপে থরোথরো,
ফেরার উপায় নাই যে আর জীবন জড়োসড়ো।  


প্রৌঢ় এক যাচ্ছে শহর বিষন্নতা  মুখ জুড়ে,
জমি সব বন্ধক রেখে দিলো ক্লিনিক ডাক্তারে।  
ফিস থেকে পরীক্ষায় বেশি অর্থের সংহার,
বলছে ওরা, এসব খেলা ক্লিনিক আর ডাক্তার।
আরো লাগবে টাকা কড়ি, যদিও নাই আরোগ্য,
এই বয়সে বুঝেনা সে, যোগ্য না অযোগ্য।


পাশ করে যাচ্ছে তরুণ, উচ্চশিক্ষার আশায়,
বিদ্যাপীঠে বিদ্বান নয়,নেতা চরকা ঘুরায়।
বিবাহিত ছাত্রনেতা বউ সংসার তার হলে,
মতের অমিলে নেয় সবারে রুদ্ধ টর্চার সেলে।  
বছর যায় বয়স যায়, যুদ্ধ ময়দান যেন,
টেন্ডার আর চাঁদাবাজির স্বর্গরাজ্য হেন।    
স্বাধীনতার স্বপ্নচারী, আজ যে স্বপ্নহীন,  
অবরুদ্ধ জীবন পোহায়, আশা হয় যে লীন।


স্বপ্নের সেই জীবন গড়তে তবু যাবেই
নগরে,
বর্গী বৃটিশ পাক তাড়ালো, মরবে নাকি ডরে?
ভূবনেতে বইছে হাওয়া, অবারিত সব আজ,
চলতে হবে তাল মিলিয়ে পড়বে শিরে তাজ।
দস্যু দানব রুখলো আগে যাদের পূর্বসুরী,
ঘুঘু খাবে স্বপ্নের ধান, তা যে সইতে নারি।
ঐক্য তনে বাজাবে তরুণ ঘুম ভাঙানো সুর,  
নুতন রঙে রাঙাবে তারা, দেশ হবে শান্তিপুর।  
                 ------------------