◾ওই দৃষ্টি মুছে বসো
      -শ্যামল কুমার সরকার।


ওমন অসুর-চোখে কেন বা তাকাও
নারী আছে এতে, কেন চরিত্র হারাও?
জড়-দেহভাজ কেন মনে ভাজ ফেলে?
বাড়ন্ত মাংসের ঢেউয়ে কেন ভেসে গেলে?
এমন হলে তো তুমি অতলে ডুবিয়া,
মেরে, মরে যাবে ওই মাটিতে মিশিয়া।
ফিরে এসো বাছা মোর, নরী তো মা-জাত,
মাতৃদৃষ্টে চেয়ে দেখো প্রেমের বরাত।
পুষ্টিতে তুষ্টিতে সে যে পূজিবে তোমারে,
তুমিও গজিয়ে উঠে ছড়াবে ওধারে।
তলিয়ে না যাবে তুমি কখনো আবার,
নারীতে মা-বোধ রাখা উচিত সবার।
ব্যভিচারে কাপুরুষ বৃত্তিতে মাতাল,
মা-বোধ বিধান তার, নয়তো, পাতাল।
নিজেকে আঁধারে নিলে নিভে যাবে আলো,
শত নারী যাবে ডুবে স্পর্শ নিয়ে  কালো।
তোমার চোখটা এসো ধুয়ে, প্রিয়, এসো!
পুরুষলোচনে ওই দৃষ্টি মুছে বসো।


◾শুদ্ধ দুনিয়া
    -শ্যামল কুমার সরকার।


কোমল গলার কন্ঠ তোমার
প্রেমের ধরণ খুব,
দৃষ্টি তোমার মিষ্টি সোনার
দেখে যেন আমি চুপ।


চিন্তা তোমার মৃত্তিকা মতো
সহ্যে মহান ঢের,
লম্বিত চুলে মহিমান্বিত
যেন সতী জগতের।


মৃদুল চলনে বিনীত বলনে
শালীন পোষাক পরা,
সেই অপরূপা মহাসতীজনে
গড়বে পূণ্যধরা।


শুদ্ধ দুনিয়া আবার জাগাও
দেবদেশই হোক যেন,
অনাচার আজি সাগরে ভাসাও
দুনিয়া মরবে কেন?


◾ধরো, পুণ্যজ্যোতি
   -শ্যামল কুমার সরকার।


শোন, হে পৃথিবী, আমি যাই বলে,
দুনিয়া কীভাবে চলে,
এই, আমার আঁচলে,
দৃষ্টি তোমার এঁটে রাখা কোন্ ফলে!
বুঝতে বাকী যে, তাই আর নাই,
রঙিন ক্ষুধা যা-ই,
খাটাতে রে চাই,
আহা ও ঘৃণ্য স্বভাবে ধূলো মেশাই!
ধিক্কার জেনো ওহে হীনমতি
দাও গো বিরতি,
ছাড়ো ভীমরতি,
মানুষের মতো ধরো, পুণ্যজ্যোতি!


◾নির্বাক সেই তো নারীবাক
-শ্যামল কুমার সরকার।


নারীর মনের সেই অস্ফুট সে-কথা
কে বা উচ্চারণ করে, কে লিখে রে তা!
  নারী মানে, সে-যে বোবা,  ঠিক?
কথা যেন শব্দহীন শব্দে অটিস্টিক!
চোখে তার কত ভাষা ভেসে ভেসে চলে,
কত রঙে শত ঢঙে কত কথা বলে!
সাবধানের সে ভাষে পলকে তাকায়,
ক'জনে বুঝে সে তাই বলা বড়ো দায়।
মুখ-ঢঙে কত ভাষা ভেঙচানো চিত্র,
তাও যে প্রেমের বাক্য কেমন বিচিত্র!
প্রেমের ভাষায় যেন নারী গূঢ়কাব্য,
মধুর সুবাস এতে, শুনতে সুশ্রাব্য।


নারীর কুন্তল কত বড়ো যেন গদ্যে,
সুলেখা-আবৃত্তি ওই সে-চুলে নৈঃশব্দ্যে!
চুলের কেমন ভাষা তার,
প্রেমাবেগ অহর্নিশ সে-যে একাকার!
নারীর দুলিত ওই কোমর-দোলন,
নীরবে কত কী, যেন সুখের স্মরণ!
আঁখি তার কথা বলে যেন অবিরল,
বাচিকরাগী সে যেন প্রেমে অবিচল!
ওড়না যে তাঁর কত ভাষে রঙ জানে
প্রেমিকের বুকে ডাকে নিভৃতের প্রাণে!
সব যেন এক মহাঅভিধানে পড়ি,
ছিলনা রে কোনো গ্রন্থে তাই কাব্যে স্মরি!


নির্বাক সেই তো নারী শোন কান পেতে
অবলা-নারীর সেই অছাপা ভাষেতে।