বাবা


মধুময় স্মৃতি হয় না বিস্মৃতি, কালের আবর্তনে;
স্মৃতি পাতা ভেসে বেড়ায়, মনে পড়ে ক্ষণে ক্ষণে।
তুমি ছিলে তুমিই আছ, থেকো আমার সনে;
এমন নিখাদ আদর, মিষ্টি শাসন ভুলি কেমনে।


আমাকে হাসাতে বুকেতে বসায়ে, কত যে কসরত;
একটু হাসিতে পরাণ তোমার, করতো যে পতপত।
পায়ের পর পা রেখে, ছোট্ট হাতদুটি শক্ত করে ধরে;
হাঁটি হাঁটি পা পা করায়ে, ক্লান্তি আসেনি তোমার তরে।


প্রতিরাতে পড়ালেখার খোঁজ নিতে, দেখিনি তোমার ভুল;
ছেলে তোমার মস্ত বড়ো হবে, রাখবে মান কুল।
'পড়ার সময় পড়া খেলার সময় খেলা', নড়েনি তো এক চুল;
সবকিছুতে এতো নিয়ম, ভেবে পাই না কোনো কূল।


কী জানি কী হলো তোমাকে নিয়ে গেল, আসোনি আর ফিরে;
স্বপ্নসাধ অধরা রয়ে গেল, সবকিছু তোমাকে ঘিরে।
তোমার শোকে কাঁদিনি আমি, শক্তি পেয়েছি ফিরে;
তোমার স্বপ্ন লালন করে, বড়ো হয়েছি ধীরে ধীরে।


দেহঘ্রাণ শাসনবাণী, গেঁথে আছে অন্তরে;
সবাই বলে তুমি আজ, লক্ষ যোজন দূরে।
স্নেহের বন্ধন অম্লান অমলিন, যতই থাকো দূরে;
ভুলিনি ভুলতে পারিনি, ক্ষণে ক্ষণে মনে পড়ে।


অপলক চেয়ে থাকি, ঐ জ্বলজ্বল করা তারার পানে;
তোমার অফুরাণ আশীর্বাদ, নেমে আসে আমার সনে।
স্মৃতিতে হারিয়ে যাই, চোখের জলে ভেসে যায় বুক;
'বাবা' বলে ডাকতে পারি না কতকাল, এটাই বড়ো দুখ।