ছেলেটার মূখ দিয়ে এখনো সাদা ফ্যানা গড়িয়ে পড়ছে ,
এই শত ব্যস্ত রোগিদের কোলাহলে - তার আসেপাশে কেউ নেই ।
টিনের পাটাতনের স্টেচারে শোয়ানো তার বডি, চলা চলের বামপাশে,
কিছু আগেই তো কয়েক টা ছেলে মিলেই !
এনেছিল এই ছেলেটাকে ।
হ্যা হ্যা মনে পরছে কি যেন ওদের নাম বেশ !
আশাদুল, করিম , মন্টু, মুস্তাক
ওরা সব এখন দল বেধে কোথায় গেল ? শেষ শ্বাস শেষ !


এত তারাতারি ! বডিটার গলায় একটা প্লাস্টিকের শ্রীকৃষ্ণের লকেট সুতো দিয়ে বাধা ।
বাম হাতে ট্যাটু করে শবনম আর ডান হাতে সমিত লেখা ... জাগালো বেশ ধাধা ।


আরে তোরা এখানে বাইরে দাড়িয়... তোমার নামই তো আশাদুল ?
ম্যাইরি কাকু , আপনি আমাকে চেনেন ?
না,... তবে - তোমরা তো ওই ছেলেটাকে আনলে ?
হ্যা , ওর নাম সমিত সিপাই , বাড়ি দমদম,
বাসা ভাড়া নিয়ে থাকত , আমাদের বস্তিতে - রেল লাইনের ধারে ,
কসাই ফরিদ মিঞার মেয়ে সবনম, ছিল ওর প্রেমিকা ।
ও শালা আজ বিষ খেয়েছে - বলতে ছেলেটার চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরে ,
ডাক্তার দেখবে...আমিতো শালা জানি না বাচাবো কেমন করে...একা।


আর একটা এমবুলেন্স এসে থামল ... চরম খিচুনিতে পেশেন্ট, কেউ যায় না এগিয়ে,
একটি ষোড়শী মেয়ে স্কুল ইউনিফর্মে বিবস্ত্র হয়ে ,
জামার হুক খোলা , গিয়েছে সম্পূর্ন বুক আলগা হয়ে ।
কসাই ফরিদ অবশেষে তাকে বুকেতে জরিয়ে - ছোটে জরুরী বিভাগে,
করে চিৎকার - ওহে ডাক্তার - তারাতারি কিছু কর , আমার মেয়ে যায় যে মরে,
খানিক বাদেও সে দেহটাও নিথর হল , খোলা বুকে তার সমিত লেখা জনে জনে পড়েনিল ।


ধর্ম ! ভীষণ দম্ভ তার, সে যে সকল মানুষের ভাল চায় ।
আমার ধর্ম - তোমার ধর্ম এই বিভেদের চালে, মানুষই মানুষেরে হারায় !