জলঙ্গীর ধারে আমার বাড়িতেই
কালকে হঠাৎ দেখা হয়ে গেলো সিঁড়ির বাঁকে -
ফিরে দাঁড়ালেন জীবনানন্দ।
বললাম “অনেকদিন পর দেখা,
একটু কি চা খাবেন”?
স্মিতহাস্যে উচ্চারিলেন ”কবিতা কেমন আছে”?


ঠিক বুঝতে না পেরে বললাম,
“বনলতা ! আহা কি দৃষ্টি তার চোখের,
মুখোমুখি বসেছিলেন!
হাজার বছর ঘুরে মালয় সাগর পেরিয়ে
ওখানেই তো শান্তি পেলেন শেষটায়”।


বললেন “না,
কবিতা সিংহের কথা বলছি।
ওই যে মোমের তাজমহলে
চারজন রাগি যুবতী ছিলো,
তাদেরই একজনকে খুঁজছি”।


কথা বলতে বলতে বেড়িয়ে এসে ভাবলাম
নিজের বন্ধুসম অমিয়-বিষ্ণু-বুদ্ধ…
এমন কি সুরঞ্জনাকেও নয় -
শেষে কিনা কবিতা সিংহ?


প্রকৃতি পালটে গেছে আজ
দেহধারন সয়না বেশিক্ষণ,
তাই জবাবের ইতস্ততাতেই
জামরুলতলায় ফিরে তাকালেন আর একবার, আমার দিকে।


তারপর চলে গেলেন আমার মনবিহঙ্গম।
নিজের খেয়ালে হয়ত বিদিশার নিশা ভেদ করে
দারুচিনি দ্বীপ পেড়িয়ে আবার
ধানসিঁড়ির তীরে, কলমির গন্ধমাখা জলে সাঁতার কাটতে।


কৃষ্ণনগরে গরম এখন খুব,
হাতের ঘাম মুছতে গিয়ে দেখি
একটা ছোট্ট চিরকুট…


“এ এক জাদুর দেশ,
এখানে রক্তমাংসহীন সাধারণ মানুষ কিন্নরলোক খুঁজে মরে।
কেন লিখি একটুখানি কবিতার কথা?
তবে
উপেক্ষার শীত কাটিয়ে নতুনকেও জানো।
কবিতা সিংহ ছাড়া মেয়েমানুষ - সে বনলতা… সুরঙ্গনা…
বা জয়তি… পূর্ণিমা… কল্যাণী… যেই হোক
তাদের পালিয়ে যেতে হবে।
তখন কুয়াশার ভেতর মৃত্যুর সময় আসবে -
তাদের কথা কবিতাও বলেছে বার বার।
খুঁজে এনো তাকে।
অবশ্য আরও অনেকেই বলে।
ইতি -
মিলু”।


কবিতা সিংহ, বাড়িটা যেন কোথায়…


***
কিছু রচনার নাম যা আমার লেখায় ব্যাবহার করা হয়েছে আমার মতন করে…


১) কবিতা সিংহ রচনাবলী -
মোমের তাজমহল, চারজন রাগি যুবতী


২) জীবনানন্দ দাশ রচনাবলী -
বনলতা সেন, জামরুলতলা, মনবিহঙ্গম, জাদুর দেশ, রক্তমাংসহীন, সাধারণ মানুষ, কিন্নরলোক, কেন লিখি, একটুখানি, উপেক্ষার শীত, মেয়েমানুষ, জয়তি, পূর্ণিমা, কল্যাণী, পালিয়ে যেতে, কুয়াশার ভেতর মৃত্যুর সময়